ভূমিকা ভূগোলের উপক্ষেত্রসমূহের মধ্যে প্রাকৃতিক ভূগোল অন্যতম ও আকর্ষণীয় একটি বিষয়। ভূগোল ভূবিজ্ঞানের অনেকগুলো বিষয়ের একীভবন করে মনুষ্য সৃষ্ট পরিবেশের প্রকৃতি নিয়ে সমীক্ষা করে, একইসাথে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও মানুষের কর্মকান্ডের মিথষ্ক্রিয়ার পারিসরিক ধরন এবং প্রতিক্রিয়া সম্পর্কেও অনুসন্ধান করে। বর্তমান পুস্তকটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রদত্ত সিলেবাস ও ডিগ্রি পাস (নতুন সিলেবাস ২০১৩–১৪) অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে। প্রকাশক মহোদয় জানালেন, অনেক শিক্ষক অধ্যায় শেষে কুইজ, সংক্ষিপ্ত ও রচনামূলক প্রশ্ন জুড়ে দেয়ার অনুরোধ করেছেন। খুবই অবাক হলাম। শিক্ষক রেফারেন্স বইয়ে প্রশ্নের ধরন খোঁজেন, এর থেকে দৈন্যতা আর কী হতে পারে। যাহোক, প্রকাশকের আগ্রহ ও ইচ্ছায় প্রতিটি অধ্যায় শেষে কুইজসহ সংক্ষিপ্ত ও রচনামূলক প্রশ্ন জুড়ে দেয়া হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত কয়েক বছরের অনার্স ১ম বর্ষের প্রশ্ন দেখলেই বুঝা যায়, লেখাপড়ার মান কোথায় গিয়ে ঠেকেছে। কুইজ প্রশ্নের উত্তর হবে সংক্ষিপ্ত ও স্পষ্ট। কিন্তু প্রশ্নই যদি হয় দ্ব্যর্থবোধক, অর্থাৎ একটি প্রশ্নের উত্তর যদি হয় একাধিক, তাহলে পরীক্ষার্থী এবং পরীক্ষক- উভয়েই বিপদে পড়েন। প্রাকৃতিক ভূগোলের আওতা ব্যাপক। অশ্মমণ্ডল, বায়ুমণ্ডল, বারিমণ্ডল ও জীবমণ্ডলকে ঘিরে প্রাকৃতিক ভূগোলের আলোচনা আবর্তিত হয়। পুস্তকটিতে মোট ৩৪টি অধ্যায়ে সংক্ষিপ্তাকারে প্রাকৃতিক ভূগোলের আলোচনা স্থান পেয়েছে। এর বাইরে প্রাকৃতিক ভূগোলের গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছুই রয়ে গেছে, যা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত নয় বলে পুস্তকটিতে আলোচনা করা হলো না। পুস্তকটিতে দিক বা কোনো বস্তুর অবস্থান বুঝাতে ‘উপর' লেখা হয়েছে। যেমন- উপরের দিকে, পাহাড়ের উপর, বায়ুমণ্ডলের উপরে, মাথার উপর ইত্যাদি। অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে ‘ওপর' লেখা হয়েছে। যেমন- পরিবেশের ওপর, বৈশিষ্ট্যর ওপর, ধারণার ওপর, আচরণের ওপর, ব্যবহারের ওপর ইত্যাদি। একইভাবে উঠি-কি-পড়ি, উঠে পড়ে লাগা, উঠে যাওয়া (লুপ্ত হওয়া অর্থে), উঠতে-বসতে ইত্যাদি ক্রিয়াবিশেষণ ব্যতীত সকল ক্ষেত্রে ওঠা বা ওঠে ব্যবহার করা হয়েছে। তাপমাত্রার পরিমাপ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে °সে হিসেবে লেখা হয়েছে। চিহ্নপ্রতীক ডিগ্রির (°) পর কোনো ফাঁক না রেখে সেলসিয়াসের সংক্ষিপ্তরূপ ‘সে' লেখা হয়েছে এবং সংক্ষিপ্তরূপ বুঝানোর জন্য সে-এর পর ফুলস্টপ ( . ) দেয়া হয়নি। একইভাবে ডিগ্রি অক্ষাংশকে উ বা °দ এভাবে লেখা হয়েছে। পুস্তকটিতে অসাবধানতাবশত কিছু ভুলত্রুটি হয়তো রয়ে গেছে। সহৃদয় পাঠকের মতামত পুস্তকটির পরবর্তী সংস্করণের উৎকর্ষ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে বলে আশা করছি।