ভূমিকা শ্রীইন্দুভূষণ রায় ইতিপূর্বে সঙ্গীতশাস্ত্র নামক গ্রন্থ দুই খণ্ডে প্রকাশ করেছেন। গ্রন্থখানি ছাত্র-ছাত্রীদের ও অনুসন্ধিৎসু ব্যক্তিদের প্রশংসা অর্জন করেছে। এই গ্রন্থের তৃতীয় খণ্ডে তিনি রাগসঙ্গীতের ঊর্দ্ধতম পর্যায়ের শিক্ষার্থী যাঁরা ‘প্রয়াগ সঙ্গীত সমিতি' বা —ভাতখণ্ডে সঙ্গীত বিদ্যাপীঠ'-এর অথবা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে চান, তাঁদের জন্য জ্ঞাতব্য সমস্ত তথ্যই সুবোধ্যভাবে লিপিবদ্ধ করেছেন । এই গ্রন্থে অভিজ্ঞ লেখক ভারতীয় সঙ্গীতের প্রাচীন রূপ নিবদ্ধগানের প্রাচীন প্রকার ( রাগালাপ, রূপকালাপ ইত্যাদি), সঙ্গীতের ক্রমিক ইতিহাস, রাগলক্ষণ, অল্পত্ব-বহুত্ব, আবির্ভাব-তিরোভাব, জাতিগায়ন, গান্ধর্ব গীত, মার্গসঙ্গীত ও দেশী সঙ্গীত, শ্রুতি-স্বর বিভাজনের সম্পূর্ণ ইতিহাস, ষড়জ-পঞ্চম ভাব দক্ষিণ ভারতীয় তাল পদ্ধতি, গ্রাম, মূৰ্চ্ছনা, বাণী, হিন্দুস্তানী বাদ্যের বিভিন্ন প্রকার, ভরতের সারণা চতুষ্টয়ী, সঙ্গীতের বিভিন্ন ঘরানা, পাশ্চাত্য সঙ্গীত, পাশ্চাত্য সঙ্গীতের স্কেল বা স্বরসপ্তক, ইকোয়ালী টেমপার্ড স্কেল বা ক্রোমাটিক স্কেল, পাশ্চাত্য স্বরলিপি পদ্ধতি (Staff notation), পাশ্চাত্য সঙ্গীতে তাল বা টাইম, পাশ্চাত্য সঙ্গীতে ইনটারভ্যাল বা স্বরান্তর, সঙ্গীত বিষয়ক নিবন্ধ এবং প্রসিদ্ধ সঙ্গীতজ্ঞগণের সংক্ষিপ্ত জীবন পরিচয় প্রভৃতি নিয়ে নিপুণভাবে আলোচনা করেছেন। এ ছাড়া ক্রিয়াত্মক বিষয় রাগসমূহের পরিচয়, আলাপ, গান, তান, বিলম্বিত ও দ্রুত খেয়ালের স্বরলিপি, ধ্রুপদ, ধামার, তারানা, চতুরঙ্গ প্রভৃতি গীতের স্বরলিপি, খাম্বাজ, ভৈরবী, কাফী, পিলু, তিলং, ঝিঁঝোটী, পাহাড়ী প্রভৃতি রাগে ঠুংরী, বেহাগ- খাম্বাজ রাগে টপ্পা, সমপ্রকৃতিক রাগে আবির্ভাব-তিরোভাব ও সমতা-বিভিন্নতা, তাল পরিচয় প্রভৃতি গ্রন্থকার সুচারুরূপে লিপিবদ্ধ করেছেন।
ইন্দুভূষণ রায় (জন্ম: ১৮৯০ - মৃত্যু: ২৯ এপ্রিল ১৯১২) (ইংরেজি: Indubhusan Roy) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের বিপ্লবী। তিনি বিপ্লবী দলের সভ্য ছিলেন। ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ১১ এপ্রিল তিনি চন্দননগরের মেয়রের উপরে বোমা ছোঁড়েন । এরপর ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ২ মে তিনি আলীপুর ষড়যন্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার হন। তাঁর এই মামলায় দ্বীপান্তর দণ্ড হয়। আন্দামানের সেলুলার জেলে পুলিশের নৃশংস অত্যাচারে তিনি আত্মহত্যা করেন।