"দ্য পাওয়ার অব হ্যাবিট" বইয়ের ভূমিকার লেখা: সকালে চোখ মেলে তাকিয়ে সবার আগে আপনি কি করেন? গােসলে ঢােকেন, ইমেইল চেক করেন, নাকি রান্নাঘরের তাক থেকে একটা ডােনাট বের করে আগে কামড় বসান? আপনি গােসলের আগে ব্রাশ করেন, না গােসলের পরে? কোন জুতাের ফিতেটা আগে বাধেন, ডান না বাম? বেরিয়ে যাওয়ার সময় সন্তানদের উদ্দেশ্যে কি বলেন? কোন রাস্তা ধরে অফিসের দিকে ড্রাইভ করেন? যখন নিজের ডেস্কে পৌঁছে যান, কি করেন সবার আগে? ইমেইলগুলাে দেখেন? সহকর্মীদের কারও সাথে কথা বলেন, নাকি সরাসরি মেমাে লিখতে ব্যস্ত হয়ে যান? দুপুরে খাওয়ার জন্য বেছে নেন সালাদ, না হ্যামবার্গার? বাড়ি ফিরে স্নিকার্স পরে দৌড়াতে ছােটেন নাকি একটা গ্লাসে উত্তেজক পানীয় ঢেলে বসে পড়েন টিভির সামনে?
“আমাদের জীবনটা, যতই নির্দিষ্ট কোনাে ধারার বলে মনে হােক, আসলে অসংখ্য অভ্যাসের যােগফল।” উইলিয়াম জেমস লিখেছিলেন ১৮৯২ সালে। “প্রতিদিন যে পথগুলাে আমরা বেছে নেই, আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় খুব সচেতনভাবে গ্রহণ করা একেকটি সিদ্ধান্ত। তবে আসলে মােটেও তেমনটা নয়। ব্যাপারটা—এগুলাে সবই অভ্যাস। আর প্রতিটা অভ্যাস আমাদের জীবনকে সরাসরি খুব সামান্যই প্রভাবিত করে। অথচ সময়ের সঙ্গে ওটার কারণেই নিয়ন্ত্রিত হয় আমাদের সবগুলাে সিদ্ধান্ত।” কোন খাবার অর্ডার করছি, আমাদের সন্তানদের কি বলে রাতে ঘুমাতে পাঠাচ্ছি, সঞ্চয় করছি না পুরােটাই উড়িয়ে দিচ্ছি, অনুশীলন কেমন ঘন ঘন করছি, আমাদের চিন্তাগুলাে কিভাবে সম্ভবদ্ধ করছি বা কাজের জন্য কোন রুটিনটা অনুসরণ করছি, সবই আমাদের স্বাস্থ্য, সৃজনশীলতা, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা আর সুখের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। ডিউক ইউনিভার্সিটিতে একটা পেপার পাবলিশড হয়েছিল, ওতে ২০০৬ সালের গবেষকবৃন্দ উপসংহার টেনেছেন এভাবে মানুষ প্রতিদিন যে সব কাজ করে তাদের ৪০ শতাংশ সচেতনভাবে নেওয়া কোনাে সিদ্ধান্ত নয়, বরং স্রেফ অভ্যাস।” | উইলিয়াম জেমস হলেন সেই গােত্রের মানুষ, যাদের মধ্যে পড়বেন অ্যারিস্টোটল থেকে ওপরাহ পর্যন্ত অসংখ্য ব্যক্তিত্ব, যারা জীবনের প্রায় পুরােটা সময় ব্যয় করেছেন অভ্যাসের অস্তিত্ব থাকার পেছনের কারণ অনুসন্ধানে। তবে মানুষের জীবনে অভ্যাসের কার্যপ্রণালি কেমন কিংবা আরও গুরুত্বপুর্ণ প্রশ্নটি হলাে, তা কিভাবে পাল্টে দেওয়া যায় তা গবেষকরা কেবল বুঝতে পেরেছেন গত দুই দশক ধরে। | বইটিকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম অংশে থাকছে কারও জীবনে একটা অভ্যাস কিভাবে গড়ে ওঠে তার আলােচনা। ওখানে দেখা হবে অভ্যাস গড়ে ওঠার নিউরােলজি, নতুন অভ্যাস কিভাবে গড়ে তুলতে হয়, পাল্টাতে হয় পুরােনােগুলাে। পদ্ধতিগুলাের আলােচনাও থাকবে বিস্তারিত, উদাহরণস্বরূপ বলা যায় কিভাবে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে টুথব্রাশের ব্যবহার দেশজুড়ে একটা অভ্যাসে পরিণত করল একজন মানুষ। কেমন করে প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বল স্রেফ মানুষের অভ্যাসের বশে কাজ করার তাড়না ব্যবহার করেই বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা ফেঁদে বসেছে, অ্যালকোহলিকস অ্যানােনিমাস (ডাবল
জন্ম ৩১শে ডিসেম্বর, ১৯৯৩, রাজশাহীর ক্রিশ্চিয়ান মিশন হসপিটালে। শৈশব কেটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কৈশোর ঢাকায়। রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রকৌশল বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক। অনলাইন ও অফলাইন মাধ্যমে গল্প লিখে লেখালেখির ক্যারিয়ার শুরু হয়। পরবর্তীতে উপন্যাসের জগতে পদচারণা “মিথস্ক্রিয়া”, “মৃগতৃষা”, “আগুনের দিন শেষ হয়নি”, “যে হীরকখণ্ডে ঘুমিয়ে কুকুরদল” নিয়ে। অনুবাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য গ্রেগ হুরউইটযের “অরফান এক্স”, পলা হকিন্সের “দ্য গার্ল অন দি ট্রেন” এবং ক্যারিন স্লটারের “ফলেন”। চিত্রনাট্য লিখেছেন একাধিক। আন্তর্জাতিক ফিল্মফেস্টে প্রথম পুরস্কার পাওয়া এমন এক শর্টফিল্ম “আ টয় অপারেশন থিয়েটার”। লেখকের বর্তমান মূল মনোযোগ উপন্যাস রচনা ও চলচ্চিত্র নির্মাণে।