মুক্তিযুদ্ধের নয়টি মাসকে রূপকভাবে নয়টি গল্প দিয়ে এই বইটি সাজানো হয়েছে। অপেক্ষাঃ মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ে একটা পাকিস্তানি গাড়ির বহরকে অ্যাম্বুশ করার জন্য অপেক্ষা করছে. ভয়ঃ চারিদিকে মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত হয়ে পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে আক্রমণ চালাচ্ছে, অত্যন্ত সুরক্ষিত প্রতিরক্ষা নিয়েও ক্যাম্পে অবস্থানকারী পাকিস্তানিরা সারাক্ষণ ভয়ে মরছে। চৌদ্দগ্রামের সেই ক্যাম্পের সৈন্যদের একধরণের হ্যালুসিনেশানের মতো হয়েছে, তারা ক্যাম্পের চারিদিকে শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের দল দেখতে পাচ্ছে। একপর্যায়ে যখন সত্যিই মুক্তিযোদ্ধারা আসে, তখন এদের কারোই একটি গুলি করার সাহসও থাকে না। ভয় বড় সংক্রামক! সেই চিঠিঃ যুদ্ধ শেষ হয়েছে। পাকিস্তানিরা আত্মসমর্পণ করছে। গ্রামের একটি স্কুল থেকে মুক্তিযোদ্ধারা কয়েকটি নির্যাতিত মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে। ওই স্কুলের একটি ঘর থেকে তারা একটা পাতলা রুলটানা খাতা আর মুখ বন্ধ করা একটা চিঠি পেয়েছে। চিঠিটা গল্পের কথকের বোন তার কাছে লিখেছে। খাতাটিতে ডায়রির মতো করে চমৎকার সব কথা লেখা আছে, অত্যাচার, নির্যাতনের কোন কথাই নেই! কিন্তু সে চিঠিটা খোলার সাহস পায় না, ওই চিঠিতে যে সত্যটা আছে বলে সে ভাবছে, সেই সত্যটার মুখোমুখি সে হতে চায় না। আহ স্বাধীনতা! পাকিস্তান থেকে কাবুল হয়ে পালিয়ে এসে তিন স্কুল কলেজ পড়ুয়া বন্ধু মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। দেশের মাটিতে পা রেখেই তাদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ছেলেটা চিৎকার করে বলে ওঠে “আহ, স্বাধীনতা!” কথক বলে, “এই পাগল আস্তে, দেশ এখনো স্বাধীন হয় নাই।“ “কেন ভাইজান শোনেন নাই, বঙ্গবন্ধু বলছে ২৬ তারিখেই দেশ স্বাধীন হইছে, এখন শুধু বিজয়ের অপেক্ষা!” যুদ্ধের একেবারে শেষ দিকে একটা অপারেশানে গিয়ে মহসিনের স্বপ্নগুলো কেমন যেন হয়ে যায়! এছাড়া জয়-পরাজয়, রেশমি, তোমায় স্মরি, শত্রু এবং জেনারেলের ভিজিট নামে অন্যান্য গল্পগুলির প্রতিটিই ভিন্ন ভিন্ন ধাঁচের, যা পড়তে গিয়ে একবার আপনি শিউরে উঠবেন আবার একবার গর্বিত বোধ করবেন।
"মনের আনন্দের জন্যই লেখালেখি করি। ২০০১ সাল থেকে লেখালেখি করলেও ২০০৯ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণের পর থেকে লেখালেখিতে বেশ নিয়মিত হয়েছি। সেনাবাহিনীতে চাকুরির সুবাদে যেমন দেশের প্রায় সব জায়গায়ই ঘুরেছি, বিদেশেরও ত্রিশটি দেশে ঘুরেছি। পার্বত্য চট্টগ্রাম ও জাতিসংঘের অভিজ্ঞতা ছাড়াও দেশে বিদেশে নানা রকম মানুষের সংস্পর্শে এসেছি, নানা ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি, সেসব অভিজ্ঞতা ও মানুষের কথাই আমার গল্প উপন্যাসে আপনাতেই চলে আসে! ছোটগল্প, উপন্যাস ছাড়াও অনুবাদ করতে পছন্দ করি। এযাবৎ আমার ১৫টি বই প্রকাশিত হয়েছে, যার মধ্যে ৩টি উপন্যাস, ২টি ছোটগল্প সংকলন, ১টি মুক্তিযুদ্ধের উপর গল্প সংকলন, ১টি জাতিসংঘের অভিজ্ঞতার উপরে লেখা নন-ফিকশন, ২টি শিশুতোষ মজার ভূতের উপন্যাস, ৪টি অনুবাদ ও ২টি যৌথ গল্প সংকলন রয়েছে। এবারের (২০১৯) বইমেলায় আমার ৩টি বই (১টি ভ্রমণকাহিনী, ১টি জীবনধর্মী গল্প সংকলন ও ১টি শিশুতোষ গল্পের অনুবাদ) প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। লেখালেখির পাশাপাশি ""নহলী"" নামে আমি একটি সংগঠন গড়ে তুলেছি, যেটার প্রকাশনীর মাধ্যমে নবীন লেখকদের বই সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ছাপিয়ে থাকি এবং একটি মোটামুটি বড় লাইব্রেরি গড়ে তুলেছি যেখান থেকে যে কেউ বই নিয়ে পড়তে পারেন। লাইব্রেরিটিতে এখন প্রায় চার হাজার বই থাকলেও শীঘ্রই এতে দশ হাজার বই যোগ হবে এবং অ্যান্ড্রোয়েড অ্যাপভিত্তিক একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দেশের যে কেউ আমাদের কুরিয়ার খরচে বই নিয়ে পড়তে পারবেন। "