"বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী অন্ধকারের গ্রহ" বইটি সম্পর্কে কিছু কথা: মহাকাশ যাত্রার জন্য ট্রেনিং শেষ করেছে য়ূহা, একজন কবি হয়ে মহাকাশযাত্রা করতে যাওয়াতে সবাই য়ূহাকে নিয়ে একটু দ্বিধার মধ্যে আছে।সত্যিই সে কি পারবে দীর্ঘ, নিঃসঙ্গ এক যাত্রায় নিজেকে মানিয়ে নিতে। য়ূহার মহাকাশযাত্রা চূড়ান্ত হলো, কুরু ইঞ্জিন চালিত এক সামরিক মহাকাশযানে চড়ে ভ্রমণে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত সে। এই কুরু ইঞ্জিন ১০জি ত্বরণেও অনির্দিষ্টকালের জন্য ধরে রাখতে পারে মহাকাশযানকে এমনকি একমাত্র এটিই ব্ল্যাকহোলের কাছে বিপজ্জনকভাবে গিয়েও বেরিয়ে আসতে পেরেছে।একটা স্কাউটশিপে করে বায়োডোম ধ্বংস করতে আসা একদল অপরাধীও আছে এ মহাকাশযানে। ক্যাপ্টেন ক্রবের নেতৃত্বে তাদেরকে ক্রয়োজোনিক ক্যাপসুলে ঢুকিয়ে, চরম শূন্য তাপমাত্রায় জড় বস্তুতে পরিনত করে রাখা হবে। অসাধারণ প্রতিভাসম্পন্ন তরুণ বৈজ্ঞানিক রায়ীনাও আছে ওদের সঙ্গে। সেও অ্যাটাকে অংশগ্রহন করে ধরা পড়েছে সামরিক বাহিনীর হাতে। শুরু হলো য়ূহার প্রত্যাশিত সেই মহাকাশযাত্রা। যানটি চালানোতে মানুষের কোনো ভূমিকা নেই, যা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রন করছে কোয়ান্টাম নেটওয়ার্ক, মানব মস্তিস্কের ছেয়েও জটিল এর প্রোগ্রাম। গন্তব্য কো-অর্ডিনেট করে দিলেই তা নিদিষ্ট ত্বরণে মহাকাশযানটিকে সঠিক জায়গায় নিয়ে যাবে।চলার পথে য়ূহা ধরতে পারলো কোয়ান্টাম নেটওয়ার্ক ওদের বোকা বানাচ্ছে। মূলত তা চলছে অন্য এক গ্রহের বুদ্ধিমান প্রাণীর কমান্ডে। যা কোয়ান্টাম নেটওয়ার্ককে নিজের বশে করে মহাকাশযানটিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে অন্য এক অপরিচিত গ্রহের কাছে। এবার কি সেখান থেকে ফিরে আসতে পারবে য়ূহা সহ সেখানে থাকা সামরিক ক্রুরা? এমনকি তাদের সাথে থাকা সেই বন্দীরা?পারবে কি সেই প্রাণীর হাত থেকে মুক্ত করতে মানুষের সর্বোচ্চ প্রযুক্তিতে তৈরী এ মহাকাশযাকে? যার নিয়ন্ত্রন পুরো কোয়ান্টাম নেটওয়ার্কের হাতে, যেখানে কোয়ান্টাম নেটওয়ার্ককেই চালাচ্ছে অন্য কেউ।জানতে হলে পড়ে ফেলুন অন্ধকারের গ্রহ বইটি।
বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরী পাঠকদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি মূলত এ দেশের একজন বিখ্যাত লেখক, পদার্থবিদ এবং শিক্ষাবিদ। কিশোর সাহিত্য, শিশুতোষ গ্রন্থ, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, গণিত বিষয়ক বই এর জন্য খুব অল্প সময়েই জনপ্রিয়তা লাভ করেন তিনি। মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৯৫২ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। মুক্তিযোদ্ধা বাবা ফয়জুর রহমানের চাকরির সুবাদে দেশের বিভিন্ন জেলাতেই তিনি পড়াশোনা করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে পিএইচডি ডিগ্রী অজর্নের উদ্দেশ্যে স্কলারশিপ নিয়ে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে। পিএইচডি সম্পন্ন করে ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে বিখ্যাত বেল কমিউনিকেশনস রিসার্চ ল্যাবেও গবেষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৪ সালে দেশে ফিরে এসে তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে যোগ দেন। মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর বই সবসময়ই এ দেশের কিশোর-কিশোরীদের কাছে বিশেষ আবেদন নিয়ে হাজির হয়েছে। কিশোর সাহিত্য, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, বিজ্ঞান ও গণিত বিষয়ক অজস্র গ্রন্থ দিয়ে তিনি আলোকিত করে তুলেছেন এদেশের অগণিত কিশোর-কিশোরীর মনোজগত। মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর বই সমূহ, যেমন- দীপু নাম্বার টু, আমার বন্ধু রাশেদ, আমি তপু, শান্তা পরিবার, দস্যি ক’জন ইত্যাদি ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পায়। তার বেশ কিছু গল্প পরবর্তীতে নাটক ও চলচ্চিত্র হিসেবে টিভি পর্দায় স্থান করে নিয়েছে। তিনি একজন বিশিষ্ট কলামিস্টও। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডও তাঁর ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে। মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর বই সমগ্র সকল বইপড়ুয়াকেই আকৃষ্ট করে। সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি বহুবার পুরষ্কৃত হয়েছেন। বাংলা একাডেমি পুরষ্কার (২০০৪) এবং শ্রেষ্ঠ নাট্যকার হিসেবে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার (২০০৫) সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও, কাজী মাহবুবুল্লা জেবুন্নেছা পদক (২০০২), শেলটেক সাহিত্য পদক (২০০৩), ইউরো শিশুসাহিত্য পদকসহ (২০০৪) অগণিত পুরষ্কার অর্জন করেছেন গুণী এই সাহিত্যিক।