বাঙালির জীবনপ্রবাহে সংবাদপত্রের অস্তিত্ব ও তার প্রতিদিনের বিচরণের ইতিহাস রয়েছে এই বইয়ের প্রতি পাতায়—যা বাঙালির সামাজিক ও রাজনৈতিক উত্থান পতনকে নিয়ন্ত্রিত করেছে। গত অর্ধ শতাব্দী।সংবাদপত্রের একজন। রিপাের্টার যেভাবে ইতিহাসের ছিন্নপত্র থেকে গান্ধিজির নােয়াখালির জীবনচর্চার এক বিতর্কিত অধ্যায়কে অবিস্মরণীয় করে তুলেছেন, এই বই লেখকের সেই মুনশিয়ানার পরিচয় বহন করে। লেখক রিপাের্টার হিসাবে তার বিচরণক্ষেত্র কেবল বাংলা ও ভারতের ভৌগােলিক সীমানায়। আবদ্ধ রাখেননি। তিনি অনায়াস বিচরণ করেছেন পাকিস্তানে ও পূর্ব পাকিস্তানে।। পেশােয়ার থেকে তুলে এনেছেন এক অবিস্মরণীয় যােদ্ধা ড. খানসাহেবকে। তার জীবনের শেষ দিনটি এবং লাহাের হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সাবির আমেদের যে অশ্রুসিক্ত চিত্র লেখক তুলে ধরেছেন, তা প্রতি পাঠককে আপ্লুত করবে। সেই সঙ্গে এই বইটিতে ধরা রয়েছে বাঙালি জীবনে শতবর্ষের প্রবাদপুরুষ আবুল কাশেম ফজলুল হক। ‘ভাঙা পথের রাঙা ধুলায়’ বই-এ বলতে গেলে শেষ অধ্যায়টি হল—ব্রাংলাদেশের অভ্যুত্থান। ফলে বইটি এক অবিস্মরণীয় মাত্রা পেয়েছে এই লেখক রিপাের্টারের লেখনীতে। রিপাের্টার হিসাবে তিনি অনেক নেপথ্য সংবাদ, ঘটনা এবং বহু স্কুপ’ (scoop) খবর সংযােজন করেছেন এই বইয়ে। ১৯৭১-এর ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর যে ডজনখানেক ভারতীয় সাংবাদিক ঢাকার মাটিতে পা রেখেছিলেন, লেখক সুখরঞ্জন সেনগুপ্ত হলেন তাদের মধ্যে অন্যতম। লেখক অনবদ্য বর্ণনা করেছেন স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রথম ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’, বাংলাভাষী মানুষদের পাগল করা একটি স্মৃতি। সেইসঙ্গে রয়েছে। বাংলা সাহিত্যের আর-এক বিস্ময় মুজতবা আলির ঢাকা প্রবাসের শেষ কয়েকটি দিনের অন্তরঙ্গ ছবি, মুজতবা আলি সাহেবের এক বিস্মৃত প্রেমিকা ওড়িশার রাজরানি বসন্তমঞ্জরী দেবীর নিঃসঙ্গ প্রেমের অঞ্জলি যা প্রতিনিয়ত কানে কানে বলবে ... every love does not culminate into marriage... তাই ভালােবাসা চিরদিনই স্মরণীয়।