`সহজ ক্যালকুলাস’ বইয়ে ফ্ল্যাপের কথাঃ সবাই, পাটিগণিত, এলজেব্রা, জ্যামিতির নাম শুনে অভ্যস্ত। ক্যালকুলাসের নাম শুনলেই কিন্তু অনেকেই নড়েচড়ে বসে। ধরে নেয় এটা বুঝি বড়দের বিষয়। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে। যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগের মতো সহজ কয়েকটা গাণিতিক প্রক্রিয়া জানলেই যে ক্যালকুলাস বোঝা কিংবা ব্যবহার করা সম্ভব, সেই খবরটি কিন্তু সবাই জানে না। এই ছোট্ট বইটি লেখা হয়েছে সবাইকে সেই খবরটি দেয়ার জন্যে। ভূমিকাঃ ক্যালকুলাস বিষয়টা আমার কাছে সব সময়েই প্রায় ম্যাজিকের মতো মনে হয়েছে! যারা বিজ্ঞান কিংবা প্রযুক্তি নিয়ে লেখাপড়া করে তাদের সবাইকেই আগে হোক কিংবা পরে হোক এটা শিখতে হয়। কিন্তু অনেক সময়েই দেখেছি ছেলেমেয়েরা ক্যালকুলাস ব্যবহার করার কিছু নিয়ম শিখেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তার ভেতরকার সৌন্দর্যটা নিয়ে আগ্রহী হচ্ছে না, তাই আমি এই ছোট বইটা লিখেছি ছেলেমেয়েদের ভেতর ক্যালকুলাসের জন্যে আগ্রহ জন্মানোর জন্যে! তবে সবাইকে আমি মনে করিয়ে দিই, গণিতের একটা বই লেখার জন্যে যে রকম নিয়ম মেনে চলতে হয়, এই বইয়ে সেটা কিন্তু মেনে চলা হয়নি। যেমন অন্তত একটি জায়গায় সত্যিকারের ফাংশন নয় সে রকম একটি উদাহরণেও ক্যালকুলাস ব্যবহার করা হয়েছে (দেখি কে সেটা বের করতে পারে!) তাই কেউ যদি এই বই পড়েই থেমে যায় তাহলে হবে না, এটা পড়া শেষ করে তাকে সত্যিকারের ক্যালকুলাস বই পড়তে হবে। আরও একটা বিষয় মনে করিয়ে দেয়া যায় মানুষ যেভাবে বিছানায় শুয়ে কিংবা গালে হাত দিয়ে গল্পের বই পড়ে সেভাবে এই বইটি পড়লে হবে না। চেয়ার-টেবিলে বসে খাতা এবং কলম হাতে নিয়ে এটি পড়তে হবে, উদাহরণগুলোতে বুঝতে হবে, অনুশীলনীগুলো সমাধান করতে হবে! তা না হলে কিন্তু ক্যালকুলাস শেখা হবে না! মুহম্মদ জাফর ইকবাল ৯.৬.২০১৬। সূচিঃডিফারেন্সিয়েশান বা ডেরাইভেটিভ ১. ক্যালকুলাস কেন?- ১১ ২. কেমন করে হলো?- ১৩ ৩. পরিবর্তনের হার- ১৬ ৪. আসল ক্যালকুলাস- ২৫ ৫. কিছু গুরুত্বপূর্ণ থিওরেম- ৩৫ ৬. ফাংশনের ফাংশনকে ডিফারেন্সিয়েশান- ৩৯ ৭. ইমপ্লিসিট ফাংশন (Implicit Function)- ৪৪ ৮. ফাংশনের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন মান- ৪৭ ইন্টিগ্রেশান ১. ডিফারেন্সিয়েশানের বিপরীত প্রক্রিয়া- ৬৩ ২. অন্যভাবে ইন্টিগ্রেশান- ৬৬ ৩. ডেফিনিট ইন্টিগ্রাল- ৭৬ পরিশিষ্ট- ৮৫
বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরী পাঠকদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি মূলত এ দেশের একজন বিখ্যাত লেখক, পদার্থবিদ এবং শিক্ষাবিদ। কিশোর সাহিত্য, শিশুতোষ গ্রন্থ, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, গণিত বিষয়ক বই এর জন্য খুব অল্প সময়েই জনপ্রিয়তা লাভ করেন তিনি। মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৯৫২ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। মুক্তিযোদ্ধা বাবা ফয়জুর রহমানের চাকরির সুবাদে দেশের বিভিন্ন জেলাতেই তিনি পড়াশোনা করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে পিএইচডি ডিগ্রী অজর্নের উদ্দেশ্যে স্কলারশিপ নিয়ে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে। পিএইচডি সম্পন্ন করে ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে বিখ্যাত বেল কমিউনিকেশনস রিসার্চ ল্যাবেও গবেষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৪ সালে দেশে ফিরে এসে তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে যোগ দেন। মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর বই সবসময়ই এ দেশের কিশোর-কিশোরীদের কাছে বিশেষ আবেদন নিয়ে হাজির হয়েছে। কিশোর সাহিত্য, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, বিজ্ঞান ও গণিত বিষয়ক অজস্র গ্রন্থ দিয়ে তিনি আলোকিত করে তুলেছেন এদেশের অগণিত কিশোর-কিশোরীর মনোজগত। মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর বই সমূহ, যেমন- দীপু নাম্বার টু, আমার বন্ধু রাশেদ, আমি তপু, শান্তা পরিবার, দস্যি ক’জন ইত্যাদি ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পায়। তার বেশ কিছু গল্প পরবর্তীতে নাটক ও চলচ্চিত্র হিসেবে টিভি পর্দায় স্থান করে নিয়েছে। তিনি একজন বিশিষ্ট কলামিস্টও। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডও তাঁর ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে। মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর বই সমগ্র সকল বইপড়ুয়াকেই আকৃষ্ট করে। সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি বহুবার পুরষ্কৃত হয়েছেন। বাংলা একাডেমি পুরষ্কার (২০০৪) এবং শ্রেষ্ঠ নাট্যকার হিসেবে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার (২০০৫) সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও, কাজী মাহবুবুল্লা জেবুন্নেছা পদক (২০০২), শেলটেক সাহিত্য পদক (২০০৩), ইউরো শিশুসাহিত্য পদকসহ (২০০৪) অগণিত পুরষ্কার অর্জন করেছেন গুণী এই সাহিত্যিক।