"মৃগতৃষা" বইয়ের সূচনা থেকে নেয়াঃ ২০৩৪ সাল। ঢাকা। গলিটা নিরিবিলি আড্ডা দেওয়া কী প্রেম, সব কিছুর জন্য চমৎকার এক আশ্রয়স্থল বলে বিকেলের দিকে জমজমাট হয়ে থাকে। সন্ধ্যার পর পরও তাদের অনেকেই নড়ে না। চওড়া গলি হওয়ার সুবাদে নতুন মেয়রের উন্নয়নকার্যের অংশ হিসেবে এর ওপরও সুনজর পড়েছিলাে। মেইন রােডের মতাে ফুটপাত রয়েছে এখানে, শুধু এই গলি নয়, পর পর তিনটি গলিই ফুটপাতের গর্বিত অধিকারি। প্রশস্ততার সুযােগ নিয়ে পাড়ার উঠতি তরুণদল এখানে মােটরসাইকেল নিয়ে স্টান্টবাজি করে বেড়ায়। তার থেকেও অল্পবয়েসিদের দেখা যায় স্ট্রিট ক্রিকেট নামক পুরনাে নাগরিক খেলায় মেতে উঠতে। ফুটপাতগুলাে তেমন ব্যবহার হয় । প্রশস্ত হলেও আদতে এটি একটি গলিই। মেইন রােড থেকে নাহলেও আটশ মিটার দূরে যে আবাসিক এলাকার রাস্তার অবস্থান, তাকে গলি থেকে বেশি কিছু আর কী বলা যায়? বসে আড্ডা দেওয়া ছাড়া ফুটপাতের অন্য কোনাে ব্যবহার চোখে পড়ে না এখানে। গলির এক কোণে আটতলা বাড়ির নিচে একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। কাঠের চেয়ারে জবুথবু বসে থাকা জয়নাল ব্যাপারি আপন চিন্তায় বিভাের। এখানে বিক্রিবাট্টা চমৎকার হয়, উচ্চমধ্যবিত্ত পরিবারগুলাে এই এলাকায় বাস করে। ঘর হইতে মাত্র দু'পা ফেলিয়া দূরত্বে জয়নাল ব্যাপারির দোকান, সুযােগটা এলাকাবাসি নেয়। কাছে পেলে দূরে যাবে কে? বাড়িওয়ালারা সাধারণত বাড়ির নিচে কোনাে দোকানপাট রাখতে চান না, তবে এই বাড়ির মালিক তা রেখেছেন। ভদ্রলােকের প্রতি জয়নাল ব্যাপারির গভীর শ্রদ্ধাবােধ রয়েছে। দোতলা বাড়ি ছিলাে মানুষটার। তার নিচতলায় এক ঘরের সামান্য দোকান জয়নাল ভাড়া নিয়েছিলাে আজ থেকে বিশ বছর আগে। দিন এখন পাল্টে গেছে, নিজে বাড়ি ওপরে না তুললেও সেটা করে দেওয়ার জন্য অনেকগুলাে ডেভেলপার গ্রুপ রয়েছে। নাগরিক নাগপাশ থেকে মুক্ত হতে না পেরে এক পর্যায়ে নিজের বাড়িটিও ডেভেলপারদের হাতে ছেড়ে দিয়েছিলেন ভদ্রলােক। তবে পুরনাে প্রতিবেশি জয়নাল ব্যাপারিকে ভােলেননি। ডেভেলপারদের প্রতি তার শর্তটা ছিলাে স্পষ্ট। দুটো ফ্লোরের পাশাপাশি তিনি নিচতলার দোকানটিও নিচ্ছেন। হ্যাঁ,
জন্ম ৩১শে ডিসেম্বর, ১৯৯৩, রাজশাহীর ক্রিশ্চিয়ান মিশন হসপিটালে। শৈশব কেটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কৈশোর ঢাকায়। রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রকৌশল বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক। অনলাইন ও অফলাইন মাধ্যমে গল্প লিখে লেখালেখির ক্যারিয়ার শুরু হয়। পরবর্তীতে উপন্যাসের জগতে পদচারণা “মিথস্ক্রিয়া”, “মৃগতৃষা”, “আগুনের দিন শেষ হয়নি”, “যে হীরকখণ্ডে ঘুমিয়ে কুকুরদল” নিয়ে। অনুবাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য গ্রেগ হুরউইটযের “অরফান এক্স”, পলা হকিন্সের “দ্য গার্ল অন দি ট্রেন” এবং ক্যারিন স্লটারের “ফলেন”। চিত্রনাট্য লিখেছেন একাধিক। আন্তর্জাতিক ফিল্মফেস্টে প্রথম পুরস্কার পাওয়া এমন এক শর্টফিল্ম “আ টয় অপারেশন থিয়েটার”। লেখকের বর্তমান মূল মনোযোগ উপন্যাস রচনা ও চলচ্চিত্র নির্মাণে।