mega fest banner
bornomala bike
জেমস পটার অ্যান্ড দ্য হল অব এল্ডারস ক্রসিং image

জেমস পটার অ্যান্ড দ্য হল অব এল্ডারস ক্রসিং (হার্ডকভার)

by জি. নরম্যান লিপার্ট

TK. 550 Total: TK. 413

(You Saved TK. 137)
  • Look inside image 1
  • Look inside image 2
  • Look inside image 3
  • Look inside image 4
  • Look inside image 5
  • Look inside image 6
  • Look inside image 7
  • Look inside image 8
  • Look inside image 9
জেমস পটার অ্যান্ড দ্য হল অব এল্ডারস ক্রসিং
Clearance Image

Ends in

00 : Day
00 : Hrs
00 : Min
00 Sec

জেমস পটার অ্যান্ড দ্য হল অব এল্ডারস ক্রসিং (হার্ডকভার)

জে.কে. রাওলিংয়ের চরিত্র ও কল্পজগত অবলম্বনে

12 Ratings  |  6 Reviews
TK. 550 TK. 413 You Save TK. 137 (25%)

বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।

book-icon

বই হাতে পেয়ে মূল্য পরিশোধের সুযোগ

mponey-icon

৭ দিনের মধ্যে পরিবর্তনের সুযোগ

Customers Also Bought

Product Specification & Summary

"জেমস পটার অ্যান্ড দ্য হল অব এল্ডারস ক্রসিং" বইটির প্রাককথন এর লেখাঃ
লম্বা বারান্দাটা আলাে আধারিতে কোন এক অনন্ত জগতের পথে গিয়ে যেন মিশে গেছে। এখানে ওখানে ছড়িয়ে পড়ে আছে ফোটা ফোটা রূপালি আলােকবিন্দু। কোনার দিক ধরে এগিয়ে গিয়ে মি, গ্রে ভালাে করে দেখলাে চারপাশটা। ওকে বলা হয়েছিল এ এক আলেয়ার জগত, যাকে ঘিরে রাখা হয়েছে সময়বন্ধনীর মন্ত্র দিয়ে। ও এসব ব্যাপারে কখনােই শােনেনি। জাদুমন্ত্রণালয়ের ভেতর আগে কোন দিন ঢােকার সুযােগই হয়নি ওর। অজান্তেই ওর গােটা শরীরটা থরথরিয়ে কেঁপে উঠলাে।
ফিসফিস করে দুই সাথীর উদ্দেশ্যে বললাে, 'আমি তাে কাউকেই কোথাও দেখতে পাচ্ছি না। কোনাে রকম দরজা বা তালার চিহ্নমাত্র চোখে পড়লাে না। আচ্ছা এরা কি অদৃশ্য কিছু ব্যবহার করে?
নাহ’, চাপা কণ্ঠে উত্তর এলাে। আমাদের জানানাে হয়েছিল কোন জায়গায় সংকেত গুলাে আছে, ঠিক কিনা? এখন দেখছি জায়গাটা পুরাে ফাকা। যাদের নিয়ে বেশি চিন্তা ছিল সেই প্রহরীদের যখন দেখা যাচ্ছে না তখন ভেবে লাভ কি। এগিয়ে যাওয়া যাক।
গ্রে বললাে, আমারও মনে আছে আমাদের কী বলা হয়েছিল। কিন্তু বিশল, আমার কেমন যেন ভালাে লাগছে না। আমার মা বলতেন আমি নাকি বিপদের গন্ধ পাই।'
কালাে শার্ট আর ট্রাউজার পরিহিত গবলিনটা চাপা গম্ভীর স্বরে বলে উঠলাে, বলেছি না আমায় বিশল বলে ডাকবে না। এই নামটা আমার সহ্য হয় না। আমার নাম স্যাফ্রন। আর চুলােয় যাক তােমার বিপদের গন্ধ পাওয়া। কোনাে নতুন জায়গায় যেতে হলেই তুমি একটা ভীতুর ডিম বনে যাও। এখন যত তাড়াতাড়ি আমরা জায়গাটা খুঁজে পাবাে তত তাড়াতাড়ি আমাদের কাজ শেষ হবে। আর তারপর হবে শুধু ভরপুর উদযাপন!' ওদের সাথে থাকা তৃতীয় সহচর এক লম্বা সুঁচালাে ছাগল দাড়িওয়ালা বুড়াে। সে এই সব কথা চালাচালির ফাঁকে স্যাফ্রনকে পেরিয়ে সামনে এগিয়ে গেল। দেখলে মি, পিঙ্ক কিরকম এগিয়ে গেলেন। বুঝলে গ্রে সবসময় নিজের হাতে থাকা তথ্যের ওপর ভরসা রাখবে। কোনাে প্রহরী নেই কোনাে ঝামেলা নেই, কি বল, মি. পিঙ্ক?
মি. গ্রে মি. স্যানের পেছন পেছন এগােচ্ছে। রহস্যময় দরজাগুলাে দেখতে দেখতে ভ্রু কুঁচকে যাচ্ছে তার। এই অন্তহীন করিডাের ধরে যেন শত থেকে হাজারটা দরজা বেরিয়েছে। কোনাে দরজাতেই কোনাে নাম বা চিহ্ন দেয়া নেই। সবার সামনে সামনে চলছে মি. পিঙ্ক। বিড়বিড় করে কিছু একটা গণনা করছে।
“কে জানে কেন আমাকে গ্রে নামটা দেওয়া হয়েছে।' একরাশ বিরক্তি ঝরে পড়লাে গ্রের কথায়। এই গ্রে রঙটা কেউ পছন্দ করে না। ওটা তাে কোনাে রঙই না।'
বাকি দুজনের দিক থেকে কোনাে উত্তর এলাে না। আরাে কিছুক্ষণ হাঁটার পর মি. পিঙ্ক থামল। থেমে গেল ওরা দুজনও। বারান্দার চারদিকটা অতি কৌতূহলে পরখ করে দেখল সবাই।
“মি. পিঙ্ক! এটাই কি সেই জায়গা?' গবলিনটা জানতে চাইলাে। কিন্তু এখানে কোনাে দরজার চিহ্নমাত্র নেই। তুমি নিশ্চিত তাে যে ঠিক পথে যাচ্ছাে?'
‘আমি একদম ঠিকঠাক গুণে এসেছি এখানে। সঠিক পথেই আছি।' বলেই পিঙ্ক পা দিয়ে মেঝের ওপর টালিতে ঘষল। একটা টালির একটা কোনা একটু বেরিয়ে আছে। উল্লাসের ধ্বনি ছেড়ে হাঁটু গেড়ে বসল সে। আঙ্গুল দিয়ে ভাঙা অংশটা পরীক্ষা করে নিল আগে। তারপর আরাে খানিকটা ঝুঁকে ওটার মধ্যে আঙ্গুল ঢুকিয়ে মারল এক টান। সাথে সাথেই একটা আয়তাকার অংশ উঠে এলাে মেঝে থেকে। আবার ওটা ধরে টানতেই একটা পাথরের পাতলা স্ল্যাব উঠতে শুরু করলাে নিজে থেকেই। সিলিং এর দিকে উলম্ব ড্রয়ারের মত। লম্বায়, চওড়ায় একটা দরজার মতােই ওটা, কিন্তু প্রস্থ মাত্র কয়েক ইঞ্চি। পুরাে স্থানটা কাপিয়ে একসময় ওটার ওঠা থামলাে ছাদে ঠেকার পর। গ্রে ওটার পাশ দিয়ে পেছনের দিকে তাকালাে। অনন্তের পথে হারিয়ে যাওয়া বারান্দাটাই কেবল নজরে এলাে ওর।
পিঙ্ক এর দিকে চোখ কুঁচকে তাকিয়ে স্যাফ্রন জানতে চাইলাে, তুমি কী করে বুঝলে যে ওটা ওখানে ছিল? 'মহাশয়াই আমাকে বলে দিয়ে ছিলেন। ঘাড় কাত করে জানাল মি. পিঙ্ক। “উনি বলেছিলেন বুঝি! তা আর কী বলেছিলেন উনি যা আমরা শুনিনি?”
বলেছিলেন এই বারান্দায় একত্র হতে। জানিয়েছিলেন তুমি হলে তালা বিশারদ। মি. গ্রে অমিত শক্তির অধিকারী আর আমি কোন কিছু খুঁজে বের করার কাজে দক্ষ। আমরা সবাই ততটুকুই জানি যতটুকু আমাদের কেবল জানবার দরকার।'
গবলিনটা গরগরে স্বরে বললাে। “হা হা, মনে পড়েছে। এবার তাে আমাদের ওটার ভেতর ঢুকতে হবে। তাই তাে নাকি?' পিঙ্ক সরে দাঁড়াল। স্যাফ্রন রহস্যময় পাথরটার দিকে এগিয়ে গেল। দেখলাে ভালাে করে। ঢোক গিলে বিড়বিড় করে কি সব বললাে। তারপর এখানে ওখানে নিজের বিরাট কান পেতে এবং বুকেঠুকে কি সব বােঝার চেষ্টা করলাে। কালাে শার্ট এর একটা পকেট থেকে বার করলাে এক অদ্ভুতদর্শন যন্ত্র। যেটায় ডজনখানেক পেতলের গােল্লা পাকানাে। তার থেকেই একটা খুলে নিয়ে সােজা করে ঢুকিয়ে দিল পাথরের স্ল্যাবটার মধ্যে।
নিজের মনেই বলতে থাকলাে, “খুব একটা কঠিন কিছু নয়। একে বলে হােমানকুলাস লক। একে তখনই খােলা যায় যখন আগে থেকে নির্ধারণ করে রাখা কিছু বিষয় একসাথে ঘটে। যেমন ধরাে, কখনাে এরা খােলে যখন কোনাে লালচুলের মেয়ে বৃহস্পতিবার তিনটের সময় আটলান্টিকের জাতীয় সঙ্গীত গায়। অথবা ভাঙা আয়নায় পড়া সূর্যের আলাে ঠিকরে পড়ে কোন ছাগলের চোখে। কিংবা মি. গ্রে যখন কোন ভূতকে বেগুনী রঙের গােসাপে বদলে দিতে পারেন। জীবনে আমি অনেক ভালাে ভালাে হােমানকুলাস লক দেখেছি বুঝলেন কিনা।' ‘এটা কি সেরকম ভালাে কিছু?' প্রশ্ন গ্রের।
অসংখ্য সূচালাে সাদা রঙের দাঁত বের করে গবলিন হাসলাে। মি. পিঙ্ক তাে বলেই দিয়েছে আমি কি। আর আমাদের কি করতে হবে।' বলেই শার্টের অন্য একটা পকেট থেকে লাল পাউডার ভর্তি একটা শিশি বার করলাে। সাবধানে ঢাকনা খুলে পুরাে পাউডারটা পাথরের দরজার সামনে ঢেলে দিল সে। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই পাউডারটা শুরু করলাে ঘূর্ণিপাক। পরিণত হতে থাকলাে একটা অবয়বে। এক অপ্রাকৃত কিছুর অবয়ব। গ্রে অবাক হয়ে দেখল অবয়বটা একটা কংকালের হাতের মতাে হয়ে গেল, যার একটা আঙুল রহস্যময় পাথরের একটি স্থানকে নির্দিষ্ট করে দেখাচ্ছে।
এবার স্যাফ্রন একটা পেতলের যন্ত্র বের করে এনে বিড়বিড় করে বললেন, “অ্যাকিউলুমস”। সরু এক সবজেটে আলাে যন্ত্রটা থেকে বের হয়ে এলাে। গবলিনটা ধেয়ে চলা আলাের গতিপথ স্থাপন করলাে একেবারে সেই বিন্দুতে, যেখানটা দেখাচ্ছিল কংকালের আঙুল। ঢােক গিলে পিছিয়ে এলাে গ্রে। স্যাফ্রনের সযত্নে রাখা আলাের চাতুরীতে তখন খেল শুরু হয়ে গিয়েছে পাথরের দেওয়ালে। আস্তে আস্তে ফুটে উঠছে এক খােদাই করা শিল্পকর্ম। একটা হাস্যরত কংকাল যার চারপাশে কদাকার সব মূর্তি নাচছে। কংকালের ডান হাতটা বেরিয়ে এসেছে। বাইরের দিকে, ঠিক যেন একটা দরজার হাতল। বাম হাতটা নেই। পিঙ্ক শিহরনের সাথে অনুভব করল যে সামনে লাল পাওডারে সৃষ্ট হাতের অবয়বটাই সেটা।
ভালাে করে দরজার খােদাই কর্ম পর্যবেক্ষণ করল স্যান। এ হল ডান্স ম্যাকাৱে। মরণ নৃত্য। ড্রাগনের শুষ্ক রক্তচূর্ণ আর গুহার আলােয় যা দৃশ্যমান হয়। বুঝলে গ্রে এ এক দারুণ তালা।'
ওটা কি খুলেছে?' অতি আগ্রহী কণ্ঠে জানতে চাইল মি. পিঙ্ক। বন্ধ করা থাকলে তবেই না খােলার প্রশ্ন আসে, গবলিন বললাে। আমি শুধু জেনে নিতে চেয়েছিলাম কি ধরে টানতে বা ঠেলতে হবে। আর সেটা এখন তােমার সামনে, আমি চাই তুমিই শুভ কাজটা কর মি, পিঙ্ক।'
লম্বা ছাগলদাড়িওয়ালা মানুষটা এগিয়ে গেল দরজাটার দিকে। সবুজ আলােটার গতিপথ বাধা না পায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে নিজের হাতটা বাড়িয়ে দিল কংকালের বের হয়ে থাকা ডান হাতটার দিকে। একটা মােচড় দিতেই শােনা গেল “ক্লিক” শব্দ। খােদাই করা দরজাটা স্বয়ংক্রিয় ভাবে চলে গেল ভেতরের দিকে। ওদের সামনে এখন একটা ঘুটঘুটে তমিস্রাচ্ছন্ন একটা জগত। কোথায় যেন টুপ টুপ করে জল পড়ছে। এক ঝলক শীতল বাতাস বয়ে এলাে ভেতর থেকে, বয়ে গেল বারান্দা ধরে। নড়ে উঠলাে মি, স্যানের কালাে শার্ট। গ্রের কপালে জমা ঘাম জমে বরফ হয়ে গেল। বলেই মনে হল ওর। “ওই দিকটা কোথায় গেছে? ওটা নিশ্চিত আমাদের জগত নয়, মানে কি বলতে চাইছি বুঝতে পারছেন আশা করি?' 'অবশ্যই ওটা আমাদের জগতের অংশ নয়,' স্যাফ্রন শান্ত ভাবে বলার চেষ্টা করলেও গলার কাঁপুনি পুরাে ঢাকতে পারলাে না। এটাই সেই লুকায়িত গুদামঘর, যার কথা বলা হয়েছিল। ওখানেই আছে সেই সিন্দুক। জলদি! জলদি! আমাদের হাতে বেশি সময় নেই।'
পিঙ্ককে অনুসরন করে ওরা অগ্রসর হল রহস্যময় দরজার অপরদিকের উদ্দেশ্যে। স্থানটিতে ছড়িয়ে থাকা গন্ধ আর ওদের পদশব্দের প্রতিধ্বনিতে মনে হচ্ছিল ওরা যেন কোন ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ পথে হেঁটে চলেছে। পিঙ্ক নিজের জাদুদণ্ডের আলােটিকে জ্বালালেন। খুব একটা আলােকিত হল না স্থানটা। পায়ের নিচের জমিটা কেমন যেন ভিজে ভিজে। জমাট অন্ধকার যেন ছােট্ট আলােকশিখাটিকে গিলে খাওয়ার চেষ্টায় রত। গ্রে বুঝতেই পারছিল এ এমন এক জায়গা যেখানে সূর্যালােক কোনাে দিন পৌছায়নি। আদিম চটচটে একটা ঠাণ্ডা হাত যেন ওদের চামড়া ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছে। কাঁপিয়ে দিচ্ছে ওদের বারান্দায় পাওয়া উষ্ণতার তুলনায়। গ্রে পেছন ফিরে তাকালাে দরজাটাকে দেখার জন্য। রূপালি স্তম্ভের মত জ্বলজ্বল করছিল ওটা। যেন এক মরীচিকা। ‘আ...আমরা এখন ঠিক কো...কোথায়? ‘আটলান্টিকের নিচে এক হাওয়া ভর্তি সুড়ঙ্গে।' উত্তর দিলেন মি. পিঙ্ক । সমুদ্র তলে...,' ক্ষীন কণ্ঠে ঢােক গিলে বললাে গ্রে। আমার মােটেই ভালাে ঠেকছে না। খুব বাজে একটা ব্যাপার। বিশল আমি ফিরে যেতে চাই'। গবলিন যন্ত্রের মত বললাে, 'আমায় বিশল বলতে বারন করেছি না!' | গ্ৰে অতি কষ্টে জানতে চাইলাে, “ওই সিন্দুকে কী আছে বলাে তাে? নিশ্চিত দামি কিছুই হবে। তা না হলে কে আর এই অদ্ভুতুড়ে পিলে চমকানাে জায়গায় আসতে রাজি হবে?
“ওসব নিয়ে একদম ভেবাে না,' কর্কশ স্বরে বললাে স্যাফ্রন। তুমি স্বপ্নেও ভাবতে পারবে না তুমি কি পেতে চলেছাে। এরকম কাজ আমরা আর কখনাে করবােও না। আর আমাদের ছােটখাটো ছিচকেমাে করতে হবে না। একবার সিন্দুকটা পেয়ে গেলেই আমরা একবারে বদলে যাবাে।' ‘কিন্তু কি আছে ওতে, কি এমন জিনিস? 'আর একটু অপেক্ষা করাে তারপরই দেখতে পাবে।' গ্রে দাঁড়িয়ে গেল, বললাে, “আসলে তুমিও জানাে না, তাই না?' স্যাফ্রন উত্তর দিলাে, “ওটা কী সে নিয়ে আমার একটুও মাথাব্যাথা নেই, বুঝলে চাদু। কি বলা হয়েছে আমাদের? আমরা সেটাই পাবাে যা আমরা স্বপ্নেও ভাবতে পারি না। আমাদের বাক্সটা আনতে হবে, আর তার বদলে যা পাব তার ২০শতাংশ দিতে হবে ওই খােচড়টাকে। যে এই কাজের খবর এনেছিল। জাদুমন্ত্রণালয়ের ভেতরে আমাদের থােড়াই ঢুকতে দিত যদি না জিনিসটা ধামাকাদার কিছু না হত। এটা তাে বুঝতে পারছ, নাকি? যাই হােক, মি. পিঙ্ক কিন্তু জানে ওটা কি। তুমি ওকেই জিজ্ঞাসা করাে না।' ‘আমিও কিছুই জানি না, মি. পিঙ্ক শান্ত ভাবে জানাল। এরপর অনেকক্ষু কেউ কোনাে কথা বললাে না। গ্রে শুনতে পাচ্ছিল জল পড়ার একঘেয়ে শব্দটা। নিস্তব্ধতা ভাঙলাে স্যাফ্রন। আপনি সত্যিই কিছু জানেন না?” মাথা নাড়ল পিঙ্ক, যদিও আবছা আলােতে সেটা কারাের নজরে এলাে না। গবলিন ঘোঁতঘোত করে উঠে বললাে, তার মানে আমরা শুধু সেইটুকু জানি যা আমাদের কাজে লাগবে, ঠিক কিনা? ‘আমাদের এখন জানা দরকার কোথায় যেতে হবে', বললাে পিঙ্ক। একমাত্র তবেই আমরা জানতে পারবাে আমাদের পরের কাজটা কি।' “ঠিক আছে, তবে তা-ই হােক। তুমিই তাে আমাদের পথ প্রদর্শক মি. পিঙ্ক, স্যাফ্রন বললাে। ‘ইতােমধ্যেই আমরা পৌছে গেছি,' বললাে পিঙ্ক। এবার কাজ শুরু হবে মি. গ্রের। উনি ঘুরে দাঁড়িয়ে আলােকিত জাদুদণ্ডটাকে এগিয়ে ধরলেন। অন্ধকারের মাঝে রূপালি আলােয় ফুটে উঠলাে এক বীভৎস দানবীয় মুখাবয়ব। গ্রের হাঁটু দুটো মনে হয় জমে গেল।
গবলিনটা যেন সেটা বুঝেই বললাে, “ওটা একটা স্ট্যাচু হাঁদারাম। সেই ড্রাগনের মাথাটা যার কথা আমাদের বলা হয়েছিল। এবার যাও তাে গ্রে সােনা। নিজের ভাগের কাজটা করাে দেখি। ওটার মুখটা উন্মুক্ত করাে। নামটা আমার একদমই পছন্দ নয়,' এগিয়ে যেতে যেতে গজগজ করলাে শক্তিধর গ্রে। স্ট্যাচুটা ওর থেকে লম্বায় বেশ খানিকটা বড়। তৈরি হয়েছে গুহাপথের এবড়াে খেবড়াে ঝুলে থাকা চুনের দণ্ড বা স্ট্যালাকটাইট আর স্ট্যালাগমাইট দিয়ে। আমি মি. পারপল হতে চাই। ওটাই আমার পছন্দের রঙ।
হাত বাড়িয়ে একটু উঁচু হয়ে ড্রাগনের ওপরের চোয়ালের দাঁতের পরের টাকরার অংশে হাতের চাপ দিল। অসম্ভব শক্তির অধিকারী হয়েও গ্রে বুঝতে পারলাে একে ওপরে ঠেলে তােলার জন্য অতিমানবীয় শক্তির প্রয়ােজন। মুখ ও ঘাড় দিয়ে গল গল করে ঘাম ঝরে পড়লাে গ্রের। কিন্তু চোয়াল একফোটা নড়ল না। চেষ্টা করাই বৃথা এই ভেবে হাল ছাড়ার আগে শেষ বারের মত পেশী ছিড়ে ফেলা জোর লাগালাে সে। আর ঠিক তখনই কাচ ঘষটানাের মত একটা শব্দ শােনা গেল। ও বুঝতে পারলাে চোয়ালটা এখন অনেক হালকা মনে হচ্ছে। স্ট্যালাকটাইটে তৈরি চোয়ালের কাটা ভেঙে গেছে। 'তাড়াতাড়ি', দাঁতে দাঁত চেপে বললাে গ্রে। “দেখাে বাপু, ওটা আবার আমাদের ওপর ফেলে দিও না।' বলতে বলতে ওটার ভেতর ঢুকে গেল স্যাফ্রন। ওকে অনুসরণ করে পিঙ্ক। ঢােকার পথটা নিচু আর প্রায় নিখুঁত গােলাকৃতি। স্ট্যালাকটাইট আর স্ট্যালাগমাইটের স্তুপ থামের রূপ নিয়ে গম্বুজাকৃতি সিলিংটাকে ধরে রেখেছে। পাথরের মেঝে সিঁড়ির মত ধাপে ধাপে নেমে গেছে মাঝখানে। যেখানে আবছা অন্ধকারে একটা কিছু রাখা আছে। “ওটা তাে সিন্দুক নয়!', পিঙ্ক বলে উঠলাে। “নাহ,' সম্মতি জানালাে গবলিন। কিন্তু ওটাইতাে একমাত্র বস্তু যা এখানে আছে। মনে হচ্ছে দুজনে মিলে ওটাকে বয়ে নিয়ে যেতে পারবাে, কি বল?” পিঙ্ক নিচে নেমে গেল। স্যাফ্রন তার পেছন পেছন নামবে।
জিনিসটাকে বেশ কিছুক্ষণ ধরে দেখে পিঙ্ক জাদুদণ্ডটাকে দাঁতে কামড়ে ধরে নিচু হল। একপাশটা ধরল সে ওটার। স্যাফ্রনকে ইশারা করল অন্য পাশটা ধরবার জন্য। তুলতে গিয়ে বুঝল ওটা ওদের অবাক করে দেওয়ার মতই হালকা। যদিও ওটার গায়ে প্রাকৃতিক ধাতব মরচে পড়েছে যথেষ্টই। পিঙ্ক এর জাদুদণ্ডের আলাের কাঁপুনির সাথে সাথে কক্ষটির দেওয়াল জুড়ে ওদের দুজনের ছায়া নাচছে, ভেঙে ভেঙে যাচ্ছে। একসময় ওরা বেরিয়ে এলাে ড্রাগনের মুখের ভেতর দিয়ে। গ্রে ততক্ষণে ওই ভার বহন করে ঘেমে নেয়ে একাকার। ওর হাঁটু আর সঙ্গ দিতে পারছিল না ওই দুঃসহ চোয়ালের ওজন বহনের। ওরা বেরিয়ে এসেছে দেখেই ও হাত সরিয়ে দ্রুত সরে গেল মুখটার কাছ থেকে। সশব্দে ড্রাগনের মুখটা আছড়ে পড়তেই এক ধুলাের ঝড় ধেয়ে এলাে ওদের দিকে। গ্রে পিছিয়ে গিয়ে গুহার দেওয়ালে ঠেস দিয়ে বসে হাঁপাতে থাকলাে।
সেদিকে নজর না দিয়ে স্যাফ্রন বললাে, ওটা কী, সেই উত্তরটা এবার জানতে পারি কি? মনে তাে হচ্ছে না ওর ভেতর এমন কিছু আছে যা আমাদের ভাগ্য বদলে দেবে দারুণ ভাবে।'
পেছনের অন্ধকার থেকে একটা কণ্ঠস্বর ভেসে এলাে, আমি একবারও বলিনি ওটা তােমাদের ভাগ্য বদলে দেবে। কেবল মাত্র বলেছিলাম তােমাদের জীবন যেটুকু বাকি আছে তা ঠিকঠাক মতাে কাটিয়ে দিতে পারবে। একই কথার কত রকম মানে যে করে নেওয়া যায় এটা বােধ হয় তােমরা জানাে তাই না?'
স্যাফ্রন ঝট করে ঘুরলাে কে বললাে কথাগুলাে দেখার জন্য। পিঙ্ক এর আচরণে অতটা তড়িঘড়ি দেখা গেল না। মনে হল আশা করেই ছিল। এরকম একটা কিছুর। কালাে পােশাক আবৃত দেহে কদাকার মুখােশ পড়া একটা অবয়ব অন্ধকার ভেদ করে সামনে এসে দাঁড়ালাে। ওর পেছনে আরাে দুটি। একই রকম দেখতে। ‘আপনার কণ্ঠস্বরেই আপনাকে চিনতে পেরেছি, আমার আগেই বােঝা উচিত ছিল।' পিঙ্ক বললাে।
“হ্যা মি. ফ্লেচার, উচিত ছিল, কিন্তু সেটা পারােনি। তােমার লােভের কাছে তােমার এতদিনের অভিজ্ঞতা হেরে গেছে। অনেক দেরি করে ফেললে তুমি। স্যাফ্রন হাতদুটো ওপর দিকে তুলে চেঁচিয়ে বললাে, একটু শুনুন। আমাদের মধ্যে কিন্তু একটা চুক্তি হয়েছিল। সেটা ভুলে যাবেন না। সেই চুক্তি ভাঙাটা মােটেই ঠিক কাজ নয়।'
হ্যা হয়েছিল তাে বন্ধু গবলিন। অনেক অনেক ধন্যবাদ তােমার সহযােগিতার জন্য। এই নাও তার প্রাপ্য। একটা কমলা আলাের ঝলক ধেয়ে গেল এক মুখােশধারীর কাছ থেকে স্যাফ্রনকে লক্ষ্য করে। থরথর করে কাঁপতে থাকলাে গবলিনটা। চেপে ধরলাে দু হাতে গলার কাছটা। দম আটকে আসছিল ওর। তারপর ভ্রাম করে পড়ে গেল পেছন দিকে। ছটফট করতে থাকলাে গলাকাটা জন্তুর মতাে।
গ্রের অবস্থা ঝড়ের দাপটে কাঁপতে থাকা গাছের মতােই প্রায়। কোনাে মতে বললাে, “বিশলের সাথে কাজটা ঠিক করলেন না আপনারা। আপনারা যা চেয়েছিলেন ও তাে সেটাই করেছে আপনাদের জন্য।'
‘আর আমরাও তাে সেটাই করছি যা আমরা করবাে বলেছিলাম, নির্লিপ্ত স্বরের জবাব ভেসে এলাে। সাথেই আবারও একটা কমলা আলােকের ঝলকানি। শক্তিধর গ্রে-ও ধরাশায়ী হলাে এবার। তিন মুখােশধারী এবার এগিয়ে গেল পিঙ্ক এর দিকে। ঘিরে দাঁড়ালাে। অসহায়চোখে তাকালাে সে। এরপর প্রশ্ন করল, “অন্তত আমাকে বলুন। ওই জিনিসটা কী? কেনই বা ওটা আমাদের দিয়ে সংগ্রহ করালেন? কেন নিজেরা ওটা হাতানাের চেষ্টা করলেন না?
পিঙ্ক এর চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে কণ্ঠস্বর জানালাে, "মি, ফ্লেচার শেষ প্রশ্নটার উত্তর জানার অধিকার তােমার নেই। কারণ ওরা বলেছেন আমি যদি সেটা করি তাহলে তােমাকে হত্যা করতে হবে। যা আমাদের দরদামের চুক্তির মধ্যে নেই। আমরা কথা দিয়েছি আমরা তােমার জীবনের দায়িত্ব নেব, আর সেটা করতে আমরা বদ্ধ পরিকর। যদিও তােমার জীবনের খুব বেশি সময় আর অবশিষ্ট নেই। কিন্তু কি করবাে বলাে, ভিক্ষার চাল কড়া না আকাড়া হবে তাতে ভিখারীর কোন হাত থাকে না।'
একটা জাদুদণ্ড আবির্ভূত হল পিঙ্কের মুখের সামনে। কত কত বছর ধরে সে ফ্লেচার নামটা ব্যবহার করে না! ওটাকে ত্যাগ করেছিল সেই দিন, যেদিন থেকে সে অপরাধের রাস্তা ছেড়ে ভালাে সৎপথে হাঁটার চেষ্টা শুরু করেছিল। তারপর সে এই কাজটা পাবার জন্য চেষ্টা করে। জাদু মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ একটি কাজ ছিল এটি। ব্যাপারটা একটা দারুণ রকমের প্রাপ্তি, যেটা ছাড়েনি সে। অর্ডারে ওর পুরােনাে বন্ধুরা অবশ্য এটা ভালাে চোখে দেখেনি। তবে তাদের বেশিরভাগই আজ আর বেঁচে নেই। ওর আসল নামটা আর কেউ জানেই না, এটা এতদিনে একটা বিশ্বাসের মতই হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ওটা একটা ভাবনাই ছিল মাত্র। আজ এরা তার প্রমাণ। ওকে ব্যবহার করে নিল নিজেদের প্রয়ােজনে, কাজ শেষ, এবার ছুঁড়ে ফেলে দেবে আবর্জনার মত। এটাই ভবিতব্য ছিল। দীর্ঘশ্বাস ফেলল সে একটা। কণ্ঠস্বর বললাে, তােমার প্রথম প্রশ্নের উত্তরটা মনে হয় আমি দিতে পারবাে। তাছাড়া আজকের পর আর কেই বা সুযােগ পাবে তােমাকে কিছু বলার! তুমি এখানে এসেছিলে একটা ধনরত্ন ভরতি সিন্দুকের খোঁজে। কারণ তােমার ক্ষুদ্র মানসিকতা ওর থেকে বড় কিছু ভাবতেই পারেনি। আমাদের চাহিদা বিশাল, লক্ষ্য অনেক অনেক উঁচু মাত্রার। ধন্যবাদ তােমাদের। আমাদের লক্ষ্যপূরণের চাবিকাঠি এখন আমাদের হাতে এসে গেছে। সেই লক্ষ্যটা হল ক্ষমতা। আর সেই ক্ষমতার খানিক নমুনা তাে তুমি নিজের চোখেই দেখলে। কি দেখলে বলাে দেখি মি. ফ্লেচার? আমাদের হাতে শাসনের ক্ষমতা থাকার একটাই অর্থ, তােমাদের জগতের বিনাশ। চরম অসহায়তায় আচ্ছন্ন হল মানানগাস ফ্লেচার। বসে পড়ল সে হাঁটু গেড়ে। আরাে একটা কমলা আলাের বিচ্ছুরন ওকে আঘাত করলাে। শ্বাস রুদ্ধ করলাে, ঢেকে দিল ওর জগতটাকে অন্ধকারের চাদরে। সে আঁকড়ে ধরল সেই অন্ধকারকে, স্বাগত জানাল।
Title জেমস পটার অ্যান্ড দ্য হল অব এল্ডারস ক্রসিং
Author
Translator
Editor
Publisher
Edition 1st Published, 2020
Country বাংলাদেশ
Language বাংলা

Similar Category Best Selling Books

Related Products

Sponsored Products Related To This Item

Reviews and Ratings

3.58

12 Ratings and 6 Reviews

sort icon

Product Q/A

Have a question regarding the product? Ask Us

Show more Question(s)
prize book-reading point

Recently Sold Products

Recently Viewed
cash

Cash on delivery

Pay cash at your doorstep

service

Delivery

All over Bangladesh

return

Happy return

7 days return facility

0 Item(s)

Subtotal:

Customers Also Bought

Are you sure to remove this from book shelf?

জেমস পটার অ্যান্ড দ্য হল অব এল্ডারস ক্রসিং