এই গ্রন্থটি গ্রামের এক সাধারণ কিশোরের মুক্তিযোদ্ধা হয়ে ওঠার আত্মকাহিনী; মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ, ভারতে প্রশিক্ষণ, সম্মুখ যুদ্ধের বিবরণ এবং সহযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ এই গ্রন্থের বিষয়বস্তু। বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের স্পেশাল রানার হিসেবে তার সাথে সার্বক্ষণিক থাকায় লেখকের সুযোগ হয়েছিল এই বীরশ্রেষ্ঠর নেতৃত্বগুণ এবং যুদ্ধ কৌশল সামনা-সামনি দেখার; তার শাহাদাত বরণের সময়ও লেখক তার পাশে উপস্থিত ছিলেন। এই বিবরণ অমূল্য। কিশোর মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতার কথা অনেকেরই অজানা। এই গ্রন্থটি থেকে পাঠক তার খানিকটা আভাস পাবেন। যুদ্ধক্ষেত্রের বিবরণের দিক দিয়েও এই গ্রন্থটি গুরুত্বপূর্ণ। চাপাইনবাবগঞ্জের ভৌগলিক অবস্থানের কারণে অনেক ভারতীয় ও পাকিস্তানি সেনাকর্মকর্তা অঞ্চলটিকে মুক্তিযুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এই এলাকায় চালানো হয়েছে অসংখ্য গণহত্যা এবং সামরিক অভিযান। সেসবেরও বিস্তৃত। বিবরণ এই গ্রন্থে উঠে এসেছে। এছাড়া এখানে বিভিন্ন সামরিক পরিভাষাকে জনবোধ্য ভাষায় প্রকাশ করা হয়েছে, পাশাপাশি যুদ্ধের গতি-প্রকৃতি বুঝবার সুবিধার্থে যুদ্ধক্ষেত্রগুলোর অবস্থানও মানচিত্রসহ তুলে ধরা হয়েছে। এই গ্রন্থটি কেবল স্মৃতিনির্ভর নয়; মাঠপর্যায়ের অনুসন্ধান, তথ্য সংগ্রহ ও সাক্ষাৎকারও এই গ্রন্থটির উপকরণ হিসেবে ভূমিকা রেখেছে। মুক্তিযুদ্ধের অধিকাংশ স্মৃতিকথায় সাধারণ ছাত্র-শ্রমিক-চাষী যোদ্ধার কথা উপেক্ষিত হয়েছে। এই স্মৃতিকথা তাই অন্তত চাঁপাইনবাবগঞ্জের যুদ্ধক্ষেত্রে সে সকল খেটে খাওয়া মানুষ অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের বীরত্বগাথাকে বিস্মৃতির হাত থেকে রক্ষারও একটি প্রয়াস। এছাড়া এখানে রয়েছে গণহত্যার নৃশংসতার প্রত্যক্ষদর্শী অসংখ্য গ্রামবাসীর সাক্ষ্য। সিদ্দিক সালিকের উইটনেস টু সারেন্ডার বইয়ে বলা সেই নামহীন কিশোরের পরিচয়ও তিনি এই গ্রন্থ রচনার প্রক্রিয়ায় উদ্ঘাটন করেছেন। একজন কিশোর মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতিতে মুক্তিযুদ্ধ ও বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর গ্রন্থটি ইতিহাসবিদ থেকে শুরু করে শেকড়সন্ধানী পাঠক, সকলের কাছেই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গ্রন্থমালায় একটা গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হিসেবেই বিবেচিত হবে।
Title
একজন কিশোর মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতিতে মুক্তিযুদ্ধ ও বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর
মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম ১৫ই সেপ্টেম্বর ২০০১ সালে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহ্জাদপুর উপজেলার স্বরূপপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মোঃ নজিবর রহমান এবং মাতার নাম মোছাঃ আসমা খাতুন। তিনি পিতা-মাতার কনিষ্ঠ সন্তান। ২০১৭ সালে স্থানীয় বনগ্রাম ডাঃ রমজান আলী উচ্চ বিদ্যালয় (বিজ্ঞান বিভাগ) থেকে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি পাস করেন এবং ২০১৯ সালে শাহ্জাদপুর সরকারি কলেজ ( বিজ্ঞান বিভাগ) থেকে কৃতিত্বের সাথে এইচএসসি পাস করেন। বর্তমানে তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রসায়ন বিভাগে অধ্যায়ন করছেন। তার রচিত যৌথ কাব্য গ্রন্থ "তুমি আসবে বলে, তুমি আমার দুঃখ সুখের সারাংশ, হৃদয়ের স্পন্দন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি এইউএসবি জ্ঞানালোক আইডিয়াল স্কুলে সহকারি শিক্ষক হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি পাথফাইন্ডার ল্যাব স্কুলের প্রাক্তন সহকারি শিক্ষক, "বাংলাদেশ ক্যারিয়ার অলিম্পিয়াড" (BCO) শাহ্জাদপুর উপজেলার কার্যনির্বাহী সদস্য, "কেয়া স্টুডেন্ট'স ফোরাম বাংলাদেশ" (KSFB) সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার কার্যনির্বাহী সদস্য এবং "বাংলাদেশ ম্যানগ্রোভ সোসাইটি" (BMS) সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন।