আমি যেমন আমার স্কুলজীবন পার করেছি এবং তার প্রায় সবকিছুই মনে গেঁথে আছে, সেই আমিই আবার আমার ছেলের স্কুলের জীবনটাও একদম কাছে থেকেই দেখেছি। কারণ ছেলের ক্লাস সেভেন পর্যন্ত আমি তার স্কুলে আসা-যাওয়ার সময় আমিই তার সাথে থাকতাম। প্রতিদিনই তার স্কুলের ঐদিনের ঘটনা জানার চেষ্টা করতাম। তারপর ছেলেকে আমার ঐ একই ক্লাসের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতাম। ক্লাস এইট থেকে সে গাড়িতে একাই যাওয়া-আসা করতো। আমি হয়তো তখন মাঝেমধ্যে যেতাম ছেলের সাথে। তাই ছেলের স্কুলের জীবনের অধিকাংশ ঘটনাই আমার জানা। আয়াজ রাজউক স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় খুব ভালো রেজাল্ট করলো। আয়াজের ফলাফলের দিন সকালে নাস্তার টেবিলে আমি ছেলেকে বলেছিলাম, ‘আয়াজ জানিস আব্বা, আমার না খুব কষ্ট হচ্ছে আজ। তোর স্কুলজীবন শেষ হয়ে গেল অথচ তুই আমার জিলা স্কুলে পড়তে পারলি না। আমার অনেক আফসোস থেকে গেল। আয়াজ বলল, ‘বাবা, তোমার মাথা কি ঠিক আছে? আমি পুরো বাংলাদেশের মধ্যে বেস্ট স্কুল থেকে ভালো ফলাফল করলাম আর তুমি কি না তোমার সেই বগুড়া জিলা স্কুলেই পরে আছ! এখন ২০১৮ সাল! সেদিন আমার চোখে পানি চলে এসেছিল। সত্যি আমার ছেলেটা আমার স্কুলের পরিবেশ আর শিক্ষাটা পেলো না। একদম মন থেকেই বলছি, এই আফসোস আমার সারাজীবন থেকেই যাবে। এই বই লেখা শুরু করে মাত্র ১৪ দিনেই লেখা শেষ করে ফেললাম। জানি না কেমন হলো। তবে লিখতে যে পারি কিছুটা, সেটা অন্তত নিজে বুঝতে পারলাম। বইটির সমস্ত ঘটনা সত্য এবং বাস্তবেই আমাদের জীবনের ঘটনা। এই বই পড়ে যদি কোনো পাঠক বিন্দুমাত্র উজ্জীবিত হন কিংবা আলোড়িত হন তবেই লেখক হিসেবে আমার পরিশ্রম স্বার্থক হবে।