মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি বঙ্গবীর (অব.) আতাউল গণী ওসমানী সাহেবের নামে নামকরণকৃত ‘ওসমানীনগর উপজেলা' বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের ঐতিহ্যধন্য একটি উপজেলা। সৌভাগ্যক্রমে ২০১৫ সালে আমি নবগঠিত ওসমানীনগর উপজেলার প্রথম নির্বাহী অফিসার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হই। ১৪টি ইউনিয়ন সংবলিত সাবেক বালাগঞ্জ উপজেলার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে ওসমানীনগর উপজেলা প্রতিষ্ঠিত হয় । ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে পূর্ণাঙ্গ থানা ও উপজেলা প্রতিষ্ঠালাভ করতে এ অঞ্চলের মানুষকে অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হয়েছে। বিগত ১৬.০৯.২০১৫ খ্রিষ্টীয় তারিখে নবগঠিত ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের ১ম মাসিক সভায় প্রসঙ্গটি উঠে আসে এবং সকল সম্মানিত চেয়ারম্যানবৃন্দ তাঁদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। ব্যাপক আলোচনার পর একপর্যায়ে প্রস্তাব গৃহীত হয়, লেখক-গবেষক, ৭নং দয়ামীর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই মোশাহিদ ব্যাপক অনুসন্ধান ও গবেষণা চালিয়ে ওসমানীনগর থানা ও উপজেলা প্রতিষ্ঠার বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাসসহ উপজেলা অঞ্চলের পূর্ণাঙ্গ ইতিবৃত্ত তাঁর লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরবেন । সভায় উপস্থিত আব্দুল হাই মোশাহিদ সানন্দে এ প্রস্তাবে সাড়া দেন এবং ‘ওসমানীনগরের ইতিবৃত্ত' নামে পুস্তকটি লেখার ঘোষণা দেন। তিনি তাঁর কথা রেখেছেন। এ পুস্তকে ওসমানীনগর অঞ্চলের হাজার বছরেরও বেশি অতীতকাল থেকে পর্যায়ক্রমিক ইতিহাস যেমন—ভূমিরূপ গঠন, সূচনাবসতি, বসতিবিন্যাস, ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি, সামাজিক বিবর্তন, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও কৃতি ব্যক্তিদের বিবরণ নিপুণভাবে তুলে এনেছেন তাঁর লেখায়। আমার মতে, এ ধারায় আঞ্চলিক ইতিহাসের খণ্ড-বিখণ্ড টুকরোগুলো জড়ো করে সিলেট জেলা, বিভাগ, তথা গোটা বাংলাদেশের ইতিহাস অধিকতর তথ্যসমৃদ্ধ ইতিহাস' হয়ে উঠতে পারে। ‘ওসমানীনগরের ইতিবৃত্ত’ হোক এ ধারার সূচনা ও পথপ্রদর্শক আকরগ্রন্থ। ইউএনও থাকাকালীন আমার প্রিয় ব্যক্তি ও প্রিয় ইউ.পি চেয়ারম্যান আব্দুল হাই মোশাহিদ আমাদের মাঝে বেঁচে থাকুন দীর্ঘদিন এবং তাঁর ক্ষুরধার লেখনী শেকড়ের গভীর থেকে তুলে আনুক এখানকার হারিয়ে যাওয়া মুক্তোদানাগুলো । আমি এ বইয়ের বহুল প্রচার ও বহু সংস্করণ কামনা করি।