"পার্বত্য চট্টগ্রামের ভৌতিক ও রহস্যগল্প" বইটির শেষের ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ
পার্বত্য চট্টগ্রামের পটভূমিকার এই গল্প-কাহিনীগুলােতে ঘটছে শত-শতাব্দীর রহস্য ও জীবনরসের ছায়াপাত। কাহিনীগুলাে সেখানকার জনগােষ্ঠীর জীবনের কোনাে-না-কোনাে ঘটনার স্মৃতি ও বাস্তবতার প্রতিফলন। পাহাড়ের মানুষদের ভিন্ন জীবনধারা ও জীবনচেতনা জানার চেষ্টা আমরা বিশেষ নেই নি। তাদের মনের। কন্দরের রহস্যময়তার দিকে দৃষ্টিপাত বিশেষ ঘটে নি। ওরা নদীকে বলে ভাই, আবার কেউ কেউ বলে ওরা নদীর সন্তান। কেউ ধরিত্রীকে বলে মা। ওরা ছােট ঝরনা বা ছড়ার পানি ছুয়ে বয়ে যাওয়া হাওয়ার হালকা ছায়া ও ধ্বনি শুনতে ভালােবাসে। ওরা বিশ্বাস করে পৃথিবীতে যদি কোনাে অবাধ স্বাধীন পশুপাখি থাকে তাহলে মানুষ হয়ে পড়বে নিঃসঙ্গ, কল্পনাশক্তি যাবে বন্ধ্যা হয়ে। প্রতিটি বৃক্ষের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত বৃক্ষরস ওদের স্মৃতির বাহক। এজন্য বৃক্ষের প্রাণকে নিজেদের প্রাণ মনে করে বৃক্ষ থেকে মানুষ বা মানুষ থেকে বৃক্ষ তাদের কাছে একই প্রাণপ্রবাহের সূত্রে গাঁথা।
আবার মানুষের জন্মান্তর, জন জন্মান্তরের ভালােবাসার বন্ধন, মা-মেয়ে বা পিতা-পুত্রের অচেছদ্য সম্পর্ক, তরুণ-তরুণীর ভালােবাসা, ঈর্ষা ও দ্বন্দ্ব সবই তাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ। জীবনের জয়গান এসব কাহিনী ও গল্পকে সর্বত্র করে তুলেছে মুখর। একদিকে ভয়ঙ্কর রস, অন্যদিকে বীররস, আবার কোনােটির করুণরস, কোথাও অদ্ভুতরস এসব গল্প-কাহিনীর অফুরন্ত সম্পদ।
সর্বোপরি কাহিনীগুলাের ঈঙ্গিতময়তা ও প্রতিধ্বনি পাহাড়ি জনগােষ্ঠীর মর্মে প্রবেশ করতে সাহায্য করবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্তরকে স্পর্শ করার জন্যই গল্পগুলাে পাঠ করা অপরিহার্য। ছােট ও বড়, কিশাের ও প্রাজ্ঞ সব পাঠকের জন্য এই বই।
Read More