“জানা-অজানা জ্ঞানের কথা" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ বিজ্ঞান অঙ্গনে অনেক উল্লম্ফনের ঘটনা ঘটেছে গত শতকে। কি নেই বিংশ শতকের ঝুলিতে! প্লেন, সিটিস্ক্যান, রাডার, লেসার, ইনসুলিন, পেনিসিলিন, এলএসডি, ইএসপি, আর্টিফিসিয়াল হার্ট, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স এ রকম অসংখ্য অগ্রগতিতে অনন্য সাধারণ হয়ে উঠেছে এ শতকটি। চন্দ্র জয়ের ত্রিশ বছর পর আরেকটি বড় ধরনের অভিযানের প্রস্তুতি নিয়েছে মানুষ। বর্তমান শতাব্দীর প্রথম দিকে মঙ্গল গ্রহে নভােযান পাঠিয়ে সেখান থেকে মাটি, পাথর প্রভৃতির নমুনা পৃথিবীতে নিয়ে আসবে। এরপর সেগুলাে পরীক্ষা করে দেখবে যে লাল গ্রহে প্রাণ বলতে কিছু আছে কিনা বা আদৌ প্রাণের আবির্ভাব ঘটেছিল কি না। পৃথিবীতে একটা সময় ছিলাে যাকে বলা হয় ‘জুরাসিক যুগ'। সেই যুগে ডাইনােসরদের রাজত্ব ছিলাে। অতিকায় প্রাণীগুলাের দোর্দণ্ড প্রতাপে তখন অন্য প্রাণীরা মাথা তুলেই দাঁড়াতে সাহস পেত না। সেই ডাইনােসরদের যুগ কবে বাসি হয়েছে, এখন ওদের অস্তিত্ব আছে ইতিহাসের পাতায় আর যাদুঘরে। ডাইনােসরদের অনুপস্থিতিতে পৃথিবীর বৃহত্তম প্রাণিকুল নীল তিমি চর্বিবহুল দেহ আর শক্ত হাড়গােড়ের জন্য সব সময়ই মানুষের লােভের শিকার। এই তাে মাত্র উনিশ শতকে এবং বিংশ শতকের প্রথম অর্ধাংশেও বিশ্ব জুড়ে নির্বিচারে তিমি নিধনের ফলে দক্ষিণ গােলার্ধের ইউবেলিনা আস্ট্রালস প্রজাতির তিমিরা প্রায় নিশ্চিহ্ন হতে বসেছিল। গ্রীন হাউজ প্রতিক্রিয়ায় তাপ বাড়ছে পৃথিবীর। কি হতে পারে এর ফলে? মেরুদেশের বরফ গলে স্ফীত সাগরের জলরাশি গ্রাস করে নেবে বাংলাদেশ এবং আরও এলাকা? নাকি এর উল্টোটাই হবে- আরেক বরফ যুগ নেমে আসবে? নাকি পৃথিবী ফিরে যাবে সুন্দরতম আবহাওয়ার অধ্যায়ে? মহাবিশ্বের বয়স কত? মােটামুটি বয়স কত? মােটামুটি হিসাবে ধরা হয়েছে যে, মহাবিশ্বের বয়স এক হাজার কোটি থেকে ১২শ’ কোটি বছর। কিন্তু মহাবিশ্ব সৃষ্টির আগে কি ছিল- এই জটিল প্রশ্ন নিয়ে খুব কম জনই নাড়াচাড়া করেছেন। কোপারনিকাসা, নিউটন, আইনস্টাইনের মতাে বাঘা বাঘা বিজ্ঞানী বলেছেন, মহাবিশ্বের সমস্ত কিছুই জানা সম্ভব, কিন্তু উৎপত্তির আগের অবস্থাটা নয়। রহস্যপুরী এন্টার্কটিকার ভূ-সমতলের প্রায় পুরােটাই বিশাল এক বরফখণ্ডে ঢাকা, যার আয়তন প্রায় ৩ কোটি ঘন কিলােমিটার। পৃথিবীর মােট বরফের নব্বই ভাগই আছে এই উপমহাদেশে। এই বরফের গড় পুরুত্ব মােটামুটি ৬,৫০০ ফুট। মূলত বরফের কারণেই এই মহাদেশ প্রায় জনশূন্য, কেবল বরফবাসে অভ্যস্ত সামান্য কিছু স্থানীয় জনগােষ্ঠী ছাড়া। এন্টার্কটিকার সন্নিকটবর্তী সমুদ্র অবশ্য জৈব সম্পদে সমৃদ্ধ। এ কারণে বর্তমানে এন্টার্কটিকাকে ঘিরে চলছে বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীদের নানান গবেষণা আর পরীক্ষা-নিরীক্ষা। এ সকল বিস্ময়কর, আশ্চর্যজনক ও রহস্যময় ঘটনা সম্পর্কে জানার প্রয়ােজন ও আগ্রহ রয়েছে কম বয়েসী, যুবক-যুবতী ও বুড়াে সবার। যা কেবল বর্তমান নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছেও সমভাবে প্রয়ােজনীয় হিসেবে আবেদন সৃষ্টি করবে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। এ প্রত্যাশার আলােকেই গ্রন্থিত হয়েছে ‘জানা-অজানা : জ্ঞানের কথা।
আনু মাহমুদ তরুণ অর্থনীতিবিদ, প্ৰবন্ধকার, কলাম লেখক ও গ্রন্থকার হিসেবে ইতোমধ্যে বেশ পরিচিতি অর্জন করে সুধী পাঠক সমাজে একটি স্থান আয়ত্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। যদিও তিনি তার কর্মপরিসরে সরকারি কর্মকর্তা ও এ্যাডমিনেস্ট্রেটিভ সার্ভিসের সদস্য হিসেবে মোঃ মাহমুদুর রহমান নামেই সমধিক পরিচিত। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ সরকারের উপসচিব এবং জাতীয় গ্ৰন্থকেন্দ্রের পরিচালক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। আনু মাহমুদ বেশ সময় ধরে লেখা-লেখির সাথে জড়িত রয়েছেন এবং অনেক চড়াই উৎরাই করে দীর্ঘ পথ পরিক্রমার মাধ্যমে পরিস্ফুটিত হয়েছেন গ্রন্থকারের বর্তমান অবস্থানে এবং সংগ্রহের ঝুলিতে অর্জন করেছেন আর্থ-সামাজিক সমস্যা সম্পর্কিতসহ বহু বিষয় ভিত্তিক গ্রন্থের সফলতা, যা ইতোমধ্যে পাঠক সমাজে বেশ সমাদৃতও হয়েছে। তাঁর লেখালেখির শুরু হয়েছে সেই ছাত্র অবস্থা থেকে, আর তা ক্ৰমান্বয়ে শিকড় গেড়ে পত্র পল্লবে শোভিত হয়ে শাখা বিস্তার করে বর্তমানে রূপ নিয়েছে কাণ্ডে, বৃক্ষে। কিন্তু তার প্রত্যাশা রয়েছে একে ব্যাপক প্রসার ঘটিয়ে এক বিরাট বটবৃক্ষের রূপ দেয়ার। লেখালেখির জগতে যেমন জড়িযে আছেন তেমনি আর্থ-সামাজিক সংগঠনের সাথে। তাঁর স্ত্রী আনোয়ারা মাহমুদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তাদের দুই সন্তান চাঁদনি ও ইযু। তিনি বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ এবং সাবেক সংসদ সদস্য, জনাব মজিবর রহমান তালুকদারের দ্বিতীয় সন্তান।