ভূমিকা পৃথিবীর কোনো মানুষ ডাইনোসর দেখেনি। এই আশ্চর্য প্রাগৈতিহাসিক জীবটি সম্পর্কে আমরা যা জানি সবই বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত ডানোসরের জীবাশ্মে পরিণত হওয়া হাড়গোড় থেকে। দু’শ তিরিশ মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীর বুকে ডাইনোসরের যাত্রা শুরু, আর সর্বশেষ ডাইনোসরটি পৃথিবীর বুক থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে ষাট মিলিয়ন বছর আগে!
তারপরও মানুষ এই প্রকান্ডদেহী সরীসৃপের প্রতি এমন আকর্ষণ বোধ করে কেন? সম্ভবত এরা বন্ধুসুলভ দানব বলে, মন্তব্য করেছিলেন একজন। এ যেন সিনেমায় কোনো দানবকে দেখছি- ভয়ও পাচ্ছি, আবার জানছিও ওটা কৃত্রিম খেলনা ছাড়া কিছু নয়। একই কথা প্রযোজ্য ডাইনোসরের ক্ষেত্রেও। কুড়ি মিটার খেলনা ছাড়া কিছু নয়। একই কথা প্রযোজ্য ডাইনোসরের ক্ষেত্রেও। কুড়ি মিটার লম্বা, ভয়ঙ্কর চেহারার একটা প্রাণীর কথা ভাবলেই কেমন ভয়ের কাঁপন ওঠে বুকে, তবে স্বস্তির ব্যাপার এই যে বিমালদেহী দানব কাউকে হামলা করতে আসছে না। কারণ ওরা তো বিলীন হয়ে গেলে সেই কবে! তবে কোটি কোটি বছর আগে আমেরিকা বা আফ্রিকার যে মাটিতে স্টেগোসরাস দাপিয়ে বেড়াত, সে মাটিতে আজ হয়তো আমেরিকান কোনো পার্ক বা আফ্রিকান কোনো বাড়ি দাঁড়িয়ে আছে।
ডাইনোসর নিয়ে সবচে’ বড় সমস্যা হলো তাদের ব্যাপ্তিকাল নির্নয়। মানুষ পৃথিবীতে বাস করছে প্রায় দুই মিলিয়ন বছর ধরে- এ ব্যাপারটা চিন্তা করাই কঠিন। আর ডাইনোসর পৃথিবীতে রাজত্ব করে গেছে প্রায় ১৬০ মিলিয়ন বছর- আশি গুণ বেশি সময় ধরে। ধারণা করা হয় মানুষের উৎপত্তি বানর থেকে। আর ডাইনোসরের বিবর্তন ঘটেছে বিভিন্ন গঠন বা আকার থেকে। ডাইনোসরদের একটি প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটেছে, তারপর নতুন আরেক প্রজাতির বিবর্তন ঘটতে করত না। বিজ্ঞাণীরাও জানেন না ঠিক কত প্রজাতির ডাইনোসর ছিল। তারা এখন পর্যন্ত ৩৫০টি প্রজাতি গণনা করেছেন। তবে সঠিক হিসেবটা হয়তো জানা সম্ভব হবে না কোনোদিনও। কিছু ডাইনোসরের বিলুপ্তি ঘটেছে কোনোরকম জীবাশ্ম না রেখেই। কাজেই বোঝার উপায় নেই এরা কী ধরনের ডাইনোসর ছিল।
ডাইনোসররা খুব বেশি চালাক প্রাণী ছিল না। কিন্তু তারপরও তারা টিকে ছিল- টিকে থেকেছে ভালোভাবেই- ১৬০ মিলিয়ন বছরেরও বেশি সময় ধরে। টিকে থাকার বিচারে প্রাণী হিসাবে, এখন পর্যন্ত, তারা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি সফল।
পাঠকনন্দিত অনুবাদক অনীশ দাস অপু ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর বরিশাল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা প্রয়াত লক্ষ্মী কান্ত দাস। ১৯৯৫ সালে এই কৃতি লেখক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে সম্মানসহ স্নাতকোত্তর পাস করেন। ছাত্রাবস্থায়ই তিনি দেশের জনপ্রিয় ও শীর্ষস্থানীয় সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিক পত্রিকাগুলোতে অনুবাদক হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন, এবং ফিচার, গল্প ও উপন্যাস অনুবাদ করতে থাকেন। অনীশ দাস অপু এর বইগুলো সাধারণত থ্রিলার ও হরর ধাঁচেরই হয়ে থাকে। তবে ক্লাসিক ও সায়েন্স ফিকশনেও অনুবাদেও পিছিয়ে নেই তিনি। অনীশ দাস অপু এর বই সমূহ এর মাঝে উল্লেখযোগ্য হলো থিংক অ্যান্ড গ্রো রিচ, আ স্ট্রেঞ্জার ইন দ্য মিরর (সিডনি শেলডন), দ্য স্কাই ইজ ফলিং (সিডনি শেলডন), সিলেক্টেড মিস্ট্রি স্টোরিজ (আলফ্রেড হিচকক), শ্যাডো অফ দ্য ওয়্যারউলফ (গাই এন স্মিথ), ইলেভেন মিনিটস (পাওলো কোয়েলহো), প্রেত, শাঁখিনী, কিংবদন্তীর প্রেত, আয়নাপিশাচ, পিশাচবাড়ি ইত্যাদি। এ পর্যন্ত তাঁর অনূদিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় চার শতাধিক। অনীশ দাস অপু এর বই সমগ্র বাংলাদেশের থ্রিলার ও হরর পাঠকদের কাছে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বাংলাদেশে পাশ্চাত্য ধারার হরর গল্প ও উপন্যাস লেখার ক্ষেত্রে তিনি যোগ করেছেন এক নতুন মাত্রা, পেয়েছেন তুমুল পাঠকপ্রিয়তা। নিজের মূল পেশা হিসেবে লেখালেখি বেছে নিলেও অনীশ দাস অপু যুক্ত আছেন সাংবাদিকতার সাথেও। ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার সিনিয়র সাব-এডিটর হিসেবে কাজ করেছেন এই কৃতি অনুবাদক ও লেখক।