আপনার অনুরোধের বইটা বিদেশী প্রকাশনী বা সাপ্লাইয়ারের নিকট থেকে সংগ্রহ করে আনতে আমাদের ৩০ থেকে ৬০ কর্মদিবস সময় লেগে যেতে পারে। আপনার পক্ষে এত সময় অপেক্ষা করা সম্ভব হলে, অর্ডার করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
Offers:
ডাবল পয়েন্ট অর্ডার করলেই! প্রতি ১০০ টাকায় এখন ২০ পয়েন্ট! (১৮-২০ আগস্ট)
১ লাখ টাকার গিফট ভাউচার জেতার সুযোগ! ৫৯৯+ টাকার বই অর্ডারে 'MUJIB' প্রোমোকোড ব্যবহার করলে দৈবচয়নে ৫০ জন সর্বমোট ১ লাখ টাকার গিফট ভাউচার পাবেন। (৩১ আগস্ট, ২০২২ পর্যন্ত)
অসম্ভব বই পড়তে ভালােবাসতেন ময়ূখ চৌধুরী। বিষয়ের বাছবিচার ছিল না। ছিলেন অসামান্য সিনেমাবােদ্ধাও। সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতাও ছিল। দিনের পর দিন চিড়িয়াখানার খাঁচার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। লক্ষ করতেন জানােয়ারদের প্রতিটি পেশির সঞ্চালন। অদ্ভুত মমতা ছিল তাঁর ওই অবলা প্রাণীগুলির প্রতি। খাঁচার ভিতর প্রাণীদের কেউ উত্ত্যক্ত করলে সঙ্গেসঙ্গে প্রতিবাদে সরব হয়ে উঠতেন, যেমন সরব হয়ে উঠতেন‘অসাধু’বাজারি প্রকাশকদের বিরুদ্ধে। মৃত্যুর মাত্র চার মাস আগে লেখা ‘কমিক্স যখন গল্প বলে’– সেখানে সেইসব প্রকাশকদের মুখােশ খুলে দিয়েছেন তিনি। হিরােইজম-এর ভক্ত ছিলেন- বিশেষ করে ঐতিহাসিক নায়কদের, চন্দ্রগুপ্ত, রুদ্রমন ও রবিনহুড-এ তারই বহিঃপ্রকাশ। বিভ্রান্ত রবিনহুড’, ‘রহস্যময় বুবিনহুড’-রবিনহুডকে নিয়ে প্রায় প্রতিটি গল্পেই ফুটে উঠেছে অ্যাংলাে স্যাক্সনদের উপর নর্মানদের অত্যাচারের ছবি, আর রবিনহুডের সদর্প প্রতিবাদ। মধ্যযুগের ইংল্যান্ডের পরিবেশ সুন্দরভাবে বিধৃত হয়েছে প্রতিটি অভিযানে। অঙ্কনশৈলী Thriller Picture Library-থেকে প্রকাশিত রবিনহুড সিরিজ থেকে অনুপ্রাণিত। অনুপ্রেরণা অবশ্য ছিলেন মহানায়ক উত্তমকুমারও।‘গুপ্তধনের সন্ধানে’ কমিক্স-এ বিমল ও কুমারের মুখে উত্তম ও সৌমিত্রর স্পষ্ট আদল।‘শিকার’ কমিক্স-এর বিমলের ক্ষেত্রেও উত্তমেরই প্রতিচ্ছবি। নিজে সুপুরুষ ছিলেন না।
নিজেকে লুকিয়ে রাখতেন অন্তরালে। কিন্তু অন্তরের কী ভীষণ জ্বালামুখী ফুটে বেরােত তাঁর লেখা ও রেখায়, তাঁর সুপুরুষ নায়কদের মধ্যে। ‘মবােগাে’ বা ‘প্রান্তরে মৃত্যুর হানা’র না-মানুষ প্রাণীদেরও কত সুন্দর, স্বাস্থ্যবান করে এঁকেছেন ময়ূখ। অ্যাডভেঞ্চারের সর্বগ্রাসী নেশা তাঁকে করেছিল নেপথ্যাচারী। কিন্তু তাঁর তুলি-কলমকে মুক্ত করেছিল বৃহৎ বিশ্বের আঙিনায়। তিনি আমাদের পথপ্রদর্শক। আফ্রিকার গহন বনে, গ্রিক পুরাণের গহীনতম কোণে, ইতিহাসের না-জানা অধ্যায়ে, এই শহরের অজানা গলিতে যে অন্ধকার শহর লুকিয়ে থাকে তার বাঁকে বাঁকে তিনি হাত ধরে পর্যটন করান আমাদের। আর আমরা অবাক বিস্ময়ে সেই অসাধারণ যাত্রার সঙ্গী হয়ে যাই। অদ্ভুত এক মুগ্ধতা আবিষ্ট করে আমাদের সত্তান্তরগত সত্তাকে। অদম্য এক নেশা ধরিয়ে দেন ময়ূখ। তাই একেবারে হাল আমলের Avataar' ছবিতে নায়কের চেহারায় খুঁজে পাই ‘আগন্তুক'-এর ভিনগ্রহী উরার মুখ যাতে স্পষ্টই Star Trek-এর লিওনার্ড নিময়ের আদল। আর কোনােদিন না দেখা, অচেনা মানুষটি তার সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে আমাদের দিকে হাত বাড়িয়ে দেন। ময়ূখ চৌধুরীর সেই ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা যখন অভিভূত, তখন দূরে রাস্তার এক কোনা দিয়ে ডান হাতে ঘড়ি পরে হাত মুঠো করে সিগারেট ধরে একা একা হেঁটে চলেন শক্তি প্রসাদ রায়চৌধুরী।