1. সব সময় বলা হয়, সাহিত্য সমাজের দর্পণস্বরূপ। কিন্তু এর বিপরীত চিত্রটিও সমান সত্য যে, সাহিত্য সব সময় সমাজকে শুধু প্রতিনিধিত্বই করে না, সমান্তরালভাবে পাঠকদের মানসিক বিকাশে সূক্ষ্ম কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব বিস্তার করে। অর্থাৎ লেখনীর এমন শক্তি রয়েছে যে, ছাপার অক্ষরের মাধ্যমে একটি পুরো প্রজন্মের মানসিকতার আমূল পরিবর্তন সাধন করা যায়। সেই সাথে পরিচ্ছন্ন ও সত্যান্বেষী অন্তর গঠনকল্পে উজ্জীবিতও করা যায়। আমাদের 'রৌদ্রময়ীদের' লক্ষ্য অনেকটা এমনই। পরিচ্ছন্ন অশ্লীলতাবিহীন সাহিত্যচর্চার মাধ্যমে বাঙালি পাঠকদের বিনোদনপ্রদানের সাথে সাথে সুন্দর কোনো মেসেজ পৌঁছে দিতে সদাই তৎপর আমরা। আশা করি আমাদের লেখাগুলো শুধু সাময়িক সুখপাঠ্য হওয়ার ভেতরেই সীমাবদ্ধ না থেকে, পাঠকের ভাবনার জগৎকে নাড়া দিতে সক্ষম হবে। এখন অনেকের প্রশ্ন হতে পারে, এই রৌদ্রময়ী কারা? রৌদ্রময়ী হচ্ছেন সেই নারীরা, যারা তাদের লেখার মাধ্যমে ইতিবাচক মানসিকতার আলো ছড়িয়ে দেন। যেখানে থাকে না স্বাধীনতার নামে স্বেচ্ছাচারী জীবনের দিকে আহ্বান; বরং তাদের লেখায় আল্লাহ সুবহানাহু তাআলার বিধানের প্রতি সম্মান প্রদর্শনপূর্বক সামগ্রিক জীবনযাত্রা ও সামাজিক সম্পর্কগুলোর প্রতি দায়িত্বশীলতা প্রকাশ পায় ।
2. রৌদ্রময়ী একটা দেয়াল, যেখানে এসে রৌদ্রময়ীরা নিজেদের কথাগুলো খোঁদাই করে দিয়ে যায় আবেগে, আবদারে, অভিযোগে, শাসনে। মমতাময়ী মা, প্রিয়তমা স্ত্রী কিংবা আমাদের মতই এই সমাজের একজন হিসেবে তাঁরা যেন সাহিত্যের এক নকশীকাঁথা বুনেছে। দাম্পত্য খুঁটিনাটি, পরিবার, সমাজ থেকে শুরু করে আমাদের এই যান্ত্রিক আটপৌরে জীবনের নানা অসঙ্গতি, মিথ্যে মোহ আর নাটুকেপনা আবেগের উল্টো পিঠে তাঁরা আমাদের শুনিয়েছে অদ্ভুত কিছু জীবনের গল্প। অযত্নে আর অবহেলায় যে গল্পগুলো পড়েই ছিলো, সেগুলোকে তাঁরা তুলে এনেছে পরম যত্নে, মমতায়। হৃদয়ছোঁয়া সেসব জীবনের গল্প নিয়েই এই বই ‘রৌদ্রময়ী’।