ডাবল পয়েন্ট অর্ডার করলেই! প্রতি ১০০ টাকায় এখন ২০ পয়েন্ট! (১৮-২০ আগস্ট)
১ লাখ টাকার গিফট ভাউচার জেতার সুযোগ! ৫৯৯+ টাকার বই অর্ডারে 'MUJIB' প্রোমোকোড ব্যবহার করলে দৈবচয়নে ৫০ জন সর্বমোট ১ লাখ টাকার গিফট ভাউচার পাবেন। (৩১ আগস্ট, ২০২২ পর্যন্ত)
"ওভারকামিং ডিপ্রেশন" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ মঈন সাহেব (ছদ্মনাম, বয়স ৫০) পেশায় একজন আর্কিটেক্ট। তিনি স্ত্রী নাঈমা (৪৫ বছর), দুই সন্তান নিলয় (২০ বছর) এবং মালিহা (১৫ বছর) এবং শ্যালিকা মিসেস সালেহা (৪২ বছর)-সবাইকে নিয়ে ঢাকার একটি বাসায় থাকেন। বেশকিছু দিন ধরে মঈন সাহেব তার পরিবারের বাকি সদস্যদের মধ্যে কিছু পরিবর্তন লক্ষ করছেন, যে কারণে একজন সাইকিয়াট্রিস্টের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়ােজন বলে তিনি মনে করছেন। মঈন সাহেবের পরিবারের তিন জন সদস্য আমাদের শরণাপন্ন হন -মিসেস সালেহা, মালিহা এবং নিলয়। নিঃসন্তান মিসেস সালেহা দুই বছর আগে তার স্বামীকে হারিয়েছেন। তিনি একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন, কিন্তু করােনার কারণে তার শিক্ষকতার চাকরিটি চলে যায়। তিনি আগে একাই থাকতেন-এখন তার বােনের পরিবারের সঙ্গে থাকেন। নাঈমারা দুই বােন খুব অল্প বয়সেই বাবা-মাকে হারিয়েছেন। পাঁচ বছর বয়সে বাবাকে হারানাের পর, সালেহার বয়স যখন ১২, তখন তাদের মা আত্মহত্যা করেন। ছােটবেলার স্মৃতি তাকে তাড়িয়ে বেড়ালেও জীবনের সঙ্গে সমঝােতা করে নিয়েছিলেন। কিন্তু স্বামী হারানাের শােক এখনাে মেনে নিতে পারেননি। মন খারাপ-লাগা, কিছুই ভাল না-লাগা, ঘুমের সমস্যা তার বেশ আগে থেকেই ছিল-৭/৮ মাস যাবৎ প্রকট আকার ধারণ করেছে; এগুলাের সঙ্গে যােগ হয়েছে খাওয়ার অরুচি। এরইমধ্যে ৩ মাস আগে তার হাইপােথাইরয়েডিজম ধরা পড়ে। তাই মাঝে মাঝে মনে হয় মরে গেলে মন্দ হত না। জিজ্ঞেস করতে জানা গেল, তার স্বামী মারা যাওয়ার আগে অর্থাৎ পাঁচ বছর আগে তিনি একবার সাইকিয়াট্রিস্ট দেখিয়েছিলেন এবং কয়েকমাস ওষুধ সেবন করেছিলেন। তিনি তখন কোনাে কাউন্সেলিং গ্রহণ করেননি। অসুস্থর সামান্য উন্নতি হলে একপর্যায়ে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ সেবন ছেড়ে দেন। অপর দিকে মালিহা এবং নিলয় দুই ভাই-বােন হলেও তাদের ব্যক্তিত্বে বিস্তর ফারাক। নিলয় অল্পতেই রেগে যায়। ইদানীং সে বেশ খিটখিটে হয়ে গেছে। বাবা-মার সঙ্গে তার মােটেই বনিবনা হয় না। মঈন সাহেবের মূল অভিযােগ হল নিলয় অতিরিক্ত ফোন ব্যবহার করে, সারারাত জেগে থাকে আর সারাদিন শুয়েই থাকে। নিলয় সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে আসার আগেই মঈন সাহেবকে স্পষ্ট শর্ত দিয়ে এসেছে, সে কোনাে অবস্থাতেই কোনাে ওষুধ খাবে না। মালিহা অত্যন্ত শান্ত-শিষ্ট স্বভাবের এবং পড়ুয়া একটি মেয়ে। অধিকাংশ সময়ে সে পড়াশােনা নিয়েই থাকে এবং পড়াশােনা ছাড়া তার তেমন কোনাে শখ নেই বললেই চলে। তবে সবাই তাকে বলে সে খুব ভাল ছবি আঁকে। প্রায় ২-৩ মাস যাবৎ যখন পড়াশােনায় তার মনােযােগ থাকছে না, স্বভাবতই সে ব্যাপারটি নিয়ে বেশ বিচলিত বােধ করছে। গত পরীক্ষাতে সে বেশ খারাপ রেজাল্ট করেছে, যা সে আগে কখনােই করেনি। ইদানীং মালিহার মনে হচ্ছে, তাকে দিয়ে আর ভাল কিছুই সম্ভব নয়। সে নিজেই সাহায্যের আশায় মঈন সাহেবের সঙ্গে এসেছে। তার কিছু ভাল না-লাগা, অস্থিরতা-এই সমস্যাগুলাে থাকলেও সেগুলাে নিয়ে তাকে খুব একটা সতর্ক মনে হল না। মালিহার মূল চাওয়া, যাতে পড়াশােনায় তার আগের মতাে মনােযােগ আবার ফিরে আসে। আমরা মঈন সাহেবের পরিবারের আলােকেই জানার চেষ্টা করব-তাদের সমস্যাগুলােকে আমরা কিভাবে নির্ণয় করে তার সমাধান করতে পারি বা প্রয়ােজনে চিকিৎসা করতে পারি। পাশাপাশি আমাদের বইয়ে আমরা এটাও জানার চেষ্টা করব যে, সার্বিক ভাবে বিষন্নতার কারণ কী কী হতে পারে, বিষন্নতার প্রকারভেদ; কিছু উপসর্গ থেকে উত্তরণের উপায় নিয়েও আলােচনা করব। সবশেষে, আমাদের মানসিক সুস্থতা রক্ষার জন্য কিছু কৌশল শিখব, যা আমাদের নিজেদের তাে বটেই, আমাদের আশেপাশের মানুষকেও ভালাে রাখতে সাহায্য করবে।