ফ্ল্যাপে লিখা কথা লাঞ্ছনাটি করা হয়েছে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথা বলার জন্য এবং শুধু এই কারণে এই লাঞ্ছনা এবং অবমাননাটি আসলে আর একজন মানুষের বিরুদ্ধে থাকে নি, এটি হয়ে গেছে আমাদের দেশের বিরুদ্ধে , এই দেশে আমরা যা কিছু শ্রদ্ধা করি, যা কিছু সম্মান করি, তার বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা বলেছেন, মৃত্যুর পর তাঁরা রাষ্ট্রীয় সম্মান চান না, মৃত্যুর আগে তাঁরা শুধু একটি জিনিস দেখে যেতে চান, সেটি হচ্ছে যুদ্ধাপরধীদের বিচার। এই দেশে আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের কিছু দিতে পারি নি। তাদের এই শেষ ইচ্ছাটা পূরণ করার জন্য আমরা কি একবার চেষ্টা করে দেখেব না? যুদ্ধাপরাধীর বিচার করার কাজটি মোটেও কঠিন নয়। শুধু নতুন প্রচন্মকে দায়িত্ব নিতে হবে. তাদের অন্তর থেকে সেটা চাইতে হবে। ভূমিকা প্রতি বছরের মতো এবারও সারা বছরের লেখালেথিগুলো সংকলিত করে, “এক টুকরো লা সবুজ কাগড়” নামে এই বই প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। বছরের শেষ যখন আমি সারা বছরের লেখাগুলো একত্র করি তখন সেগুলোর ওপর চোখ বুলানোর সময় আমার সারা বছর ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো এক ধরনের স্মৃতিচারণ হয়। বিগত বছর গুলোতে ক্রোধ এবং ক্ষোভের পরিমাণ ছিল অনেক বেশি-এই বছর সেটি খানিকটা প্রশমিত হয়েছে এবং বছরের শেষে আমি নূতন প্রজন্ম নিয়ে রীতিমত স্বপ্ন দেখেতে শুরু করেছি! আমরার ভাবতে খুব ভালো লাগছে এই দেশের তরুণদের নিয় আমরা যে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি, তরুনেরা সেই স্বপ্নটিকে সত্যি করে তুলতে। নির্বাচনে যুদ্ধাপরাধদের পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করে তাদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় তোলার দিকে আরো এক ধাপ নিয়ে এসেছে! এই দেশের তরুনদের অভিনন্দন এবং অভিনন্দন! মুহম্মদ জাফর ইকবাল ০৬.০১.২০০৯ সূচিপত্র * নূতন বছরের লেখাপড়া নিয়ে পুরনো কিছু কথা * ভাষার জন্য ভালোবাসা * কত দীর্ঘ দীর্ঘশ্বাস? * রাহেলার কথা মনে আছে? * এবারের স্বাধীনতা দিবস * কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন: আশা ও আশঙ্কা * সব জেলায় ক্যাডেট কলেজ? * মায়েদের জন্য ভালোবাসা * শিক্ষার মনোন্নয়ন :পরিপ্রেক্ষিত বাংলাদেশ * এই দেশের শিক্ষক * ঘর পোড়া গরুর চোখে প্রাথমিক শিক্ষা ও ব্যাক * এক টুকরো লাল সবুজ কাগড় এবং একজন বৃদ্ধ মানুষ * সাম্প্রতিক ভাবনা * আমি দিন বদলের স্বপ্ন দেখি * এখন তারুন্যের সময় * বিজয় দিবসটি হোক নূতন প্রজন্মের * ক্ষমতা নয়- দায়িত্ব
বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরী পাঠকদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি মূলত এ দেশের একজন বিখ্যাত লেখক, পদার্থবিদ এবং শিক্ষাবিদ। কিশোর সাহিত্য, শিশুতোষ গ্রন্থ, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, গণিত বিষয়ক বই এর জন্য খুব অল্প সময়েই জনপ্রিয়তা লাভ করেন তিনি। মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৯৫২ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। মুক্তিযোদ্ধা বাবা ফয়জুর রহমানের চাকরির সুবাদে দেশের বিভিন্ন জেলাতেই তিনি পড়াশোনা করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে পিএইচডি ডিগ্রী অজর্নের উদ্দেশ্যে স্কলারশিপ নিয়ে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে। পিএইচডি সম্পন্ন করে ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে বিখ্যাত বেল কমিউনিকেশনস রিসার্চ ল্যাবেও গবেষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৪ সালে দেশে ফিরে এসে তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে যোগ দেন। মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর বই সবসময়ই এ দেশের কিশোর-কিশোরীদের কাছে বিশেষ আবেদন নিয়ে হাজির হয়েছে। কিশোর সাহিত্য, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, বিজ্ঞান ও গণিত বিষয়ক অজস্র গ্রন্থ দিয়ে তিনি আলোকিত করে তুলেছেন এদেশের অগণিত কিশোর-কিশোরীর মনোজগত। মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর বই সমূহ, যেমন- দীপু নাম্বার টু, আমার বন্ধু রাশেদ, আমি তপু, শান্তা পরিবার, দস্যি ক’জন ইত্যাদি ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পায়। তার বেশ কিছু গল্প পরবর্তীতে নাটক ও চলচ্চিত্র হিসেবে টিভি পর্দায় স্থান করে নিয়েছে। তিনি একজন বিশিষ্ট কলামিস্টও। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডও তাঁর ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে। মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর বই সমগ্র সকল বইপড়ুয়াকেই আকৃষ্ট করে। সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি বহুবার পুরষ্কৃত হয়েছেন। বাংলা একাডেমি পুরষ্কার (২০০৪) এবং শ্রেষ্ঠ নাট্যকার হিসেবে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার (২০০৫) সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও, কাজী মাহবুবুল্লা জেবুন্নেছা পদক (২০০২), শেলটেক সাহিত্য পদক (২০০৩), ইউরো শিশুসাহিত্য পদকসহ (২০০৪) অগণিত পুরষ্কার অর্জন করেছেন গুণী এই সাহিত্যিক।