ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সকাল-সন্ধ্যা হরতালে সারাদেশেই ককটেল ব্যবহার হয়েছিল। হরতাল বাস্তবায়নের জন্য ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের গোপন মিটিং গুলোতে আলোচনার মাধ্যমেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। জেলা পর্যায়ের অনেক নেতারাই বিতর্কের সৃষ্টি হবে দেখে এর বিরোধিতা করেছিলেন, কিন্তু বাস্তবতার কারণে সবাই মেনে নিয়েছিলেন। রাজনীতি ছিল নিষিদ্ধ। হরতাল বাস্তবায়নের জন্য রাস্তায় নামার কোন সুযোগ ছিল না। জেল জুলুম হুলিয়ার ভয় ছিল। সেই চিন্তা থেকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া। এখন আমরা ককটেল শুনলেই আতঙ্কিত হই। এগুলো মূলত পূজার উৎসবে কিংবা বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যে ফটকা ব্যবহার করা হয় তাই। এই ককটেলগুলোর ক্ষতি করার কোন সামর্থ ছিল না। তাছাড়া এগুলো কোন জনবহুল এলাকাতে ব্যবহার করা হয়নি। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হরতালের আগের রাত্রে শহরগুলোর রাস্তাতে এগুলো চার্জ করা হয়েছিল, যাতে গোলযোগের হয়, এই ভয়ে পরের দিন দোকানপাটসহ সবকিছু বন্ধ থাকে এবং ফলশ্রুতিতে শান্তি পূর্ণভাবে হরতাল করা সম্ভব হয়। আরেকটি কারণ ছিল, সেটা সামরিক জান্তাকে সহিংসতার ভয় দেখানো। সামরিক জান্তা যাতে বুঝতে পারে রাজনীতিকরা অধিকার আদায়ের জন্য সন্ত্রাসের পথ অবলম্বন করতে বাধ্য হচ্ছে। যা হতে পারে ভয়াবহ। মূলত এই মেসেজ এর জন্যই এই পটকাগুলো ব্যবহার করা হয়েছিল। মানু ভাইদের মতো জেলা পর্যায়ের ছাত্রনেতারা প্রস্তুতি মিটিংগুলোতে এর বিরোধিতা করলেও কর্মীদের দাবির মুখে মেনে নেওয়া এই কৌশলটি খুব কার্যকর হয়েছিল। এর ফলে আমরা ঘরোয়া রাজনীতি করার অধিকার আদায় করেছিলাম।