বন্ধু সহকর্মী অধ্যাপক ফখরউদ্দিন চৌধুরীর একান্ত পরামর্শ এবং দিরাই উপজেলার প্রিয় কবি সাহিত্যিক সাংবাদিক ও ছাত্র-ছাত্রীর ইচ্ছানুসারে এই সর্বপ্রথম একটি কবিতার বই প্রকাশের আশা পােষণ করেছি। অবশেষে বইপত্র। প্রকাশনের মাহবুবুর রহমান বাবু ভাইয়ের ঐকান্তিক উৎসাহে ছাপানাের উদ্যোগ নিতে হলাে। কুসুমের বাড়িতে বসন্ত এসেছে, কুসুম নামটি আমি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস পুতুল নাচের ইতিকথা থেকে এনেছি। কুসুম উক্ত উপন্যাসের নায়িকা। হাস্যোজ্জ্বল স্বাস্থ্যবতী এবং অনেকটা বসন্তের চিরকালীন সজীব রূপের যেন মনােহর চিত্রকলা। আমার কবিতাগুলােতে মূলত এমনি বসন্তকালীন রূপ উজ্জ্বল করে তুলতে প্রেম এবং নারীর আবহ নির্মাণ করতে চেয়েছি। জানি না তা সফল হয়েছে কি না। মনে পড়ে সেই অনেক দিন আগে- রবীন্দ্রনাথের মহুয়া পড়েছিলাম বসন্তের রূপের মাদকতায় যেন আমাদের মােহগ্রস্ত করে রেখেছিল। এখনাে ভাবি মহুয়া কাব্যটি বাংলার বসন্ত উৎসবের শ্রেষ্ঠ রূপবাণী হতে পারে কি না। প্রেম বিরহ বসন্ত নিয়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন অনেক। আধুনিক বাংলা কবিতায় যুগযন্ত্রণা তথা বাস্তবতা এমনি প্রখর যে, সেখানে একটি ভালােবাসার কবিতা কেমন যেন বেমানান মনে হয়। তবুও প্রেমের জয়গানে মুখর প্রায় সকল কবিই। প্রেম, বসন্ত এবং প্রকৃতি এই তিনের কাছে কবিরা ভীষণভাবে ঋণী। আর ঋণী হলে তাে কবিতাও লেখা যায় না। যার মনে বসন্ত পুলক জাগায় না, তার মধ্যে কল্পনাও প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। বিশুদ্ধ ও পরিশীলিত কবি ফুল পাখি প্রেম ও বসন্তকে যেভাবে অনুভব করেন তারই প্রতিফলন তাঁর কবিতায়। কালিদাসের কবিতার অলকাপুরীর বর্ণনায় কিংবা কাজী নজরুল ইসলামের কাব্য ও গানে, রবীন্দ্রনাথের গানে নাটকে চিত্রকলায় বসন্ত নতুন অনুভবে শিহরিত।