Sort

Reset Sort

Filter

Reset Filter

Shop by Categories

By Publishers

Price

Languages

Discount

Ratings

Troilokkonath Mukhopaddhai books

followers

ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়

Troilokkonath Mukhopadhyaya- (১৮৪৭-১৯১৯) দারিদ্র্যের সঙ্গে কঠোর সংগ্রাম করে জীবনে প্রতিষ্ঠত হয়েছিলেন। তিনি ভারত সরকারের সম্মানজনক পদে অধিষ্ঠিত হন এবং ভারতীয় মিল্পদ্রব্যের একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে স্বীকৃতি পান। সেইসূত্রে তিনি ইউরোপে যান এবং দেশে ফিরে এসে আবার যথাবিধি প্রায়শ্চিত্ত করেন। তিনি অনেকগুলি ভাষার ব্যুৎপত্তি লাভ করেন এবং জ্ঞানবিজ্ঞানের নানা শাখায় অধিকার অর্জন করেন। তিনি সাহিত্যচর্চা শুরু করেন পরিণত বয়সে, তবে তার সঙ্গে সঙ্গেই সিদ্ধিলাভ করেন বাংলা কথাসাহিত্য রঙ্গব্যঙ্গের একজন শ্রেষ্ঠ ¯্রষ্ঠারূপে। ত্রৈলোক্যনাথ যখন সাহিত্যক্ষেত্রে প্রবেশ করেন, তখন বাস্তব সমাজজীবনের চেয়ে রোমান্সের কল্পনারঙিন জগৎ বাঙালি লেখক ও পাঠককে মাতিয়ে রেখেছিল। বক্সিমকচন্দ্র-প্রদর্শিত ঐতিহাসিক রোমান্সের পথে ত্রৈলোক্যনাথ অগ্রসর হননি, তাঁর অনুসরণে সামাজিক উপন্যাস লিখতেও প্রবৃত্ত হননি। বাস্তব জীবনকে তিনি গভীরভাবে অনুধাবন করেছিলেন, সন্দেহ নেই, কিন্তু তার মধ্যে এমন অনেক কিছু প্রত্যক্ষ করেছিরেন যা মানুষ্যোচিত বলে মানতে পারেননি। ফলে একইসঙ্গে তিনি বিদ্রƒপবাণ হেনেছেন, আবার ভূতপ্রেত ও কাল্পনিক জীবজন্তুর এমন এক জগৎ নির্মাণ করেছেন যার অভিনবত্ব পাঠককে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের মাঝামাঝি জায়গায় আটকে রাখে। শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, ‘প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃত ঘটনার মেলামিশিতে তিনি যে যে-পরোয়া, অকুতোভয় মনোভাব দেখাইয়াছেন, সেইখানেই তাঁহার বিশেষত্ব নিহিত।’ বস্তুত, যদি বলা হয় যে, ত্রৈলোক্যনাথের এক পা ছিল বাস্তবে, অন্য পা কল্পলোকে, তাহলে খুব ভুল হবে না। তাঁর প্রথম রচনা কঙ্কাবতীর (১৮৯২) পরিচয় তিনি নিজেই দিয়েছেন ‘উপকথার উপন্যাস, পবে। রূপকথার জগৎ থেকে লেখক আমদানি করেন কঙ্কাবতীকে। তার ভাই একটি আম এনে ঘরে রেখে দিয়ে বলে, সেটা যেন কেউ না খায়; যে খাবে, তাকে সে বিয়ে করবে। কঙ্কাবর্তী এ-কথা জানতো না, ঘরে আম দেখে সে খেলে ফেলে। ভাই তখন তাকেই বিয়ে করবে বলে ঘোষণা করে। লজ্জিত ও নিরুপায় কঙ্কাবতী এক নৌকো নিয়ে খিড়কি পুকুরে ভাসলো। রূপকথার এই সূত্র ধরে উপন্যাসের শুরু। এই সূচনাটুকু ছাড়া এর প্রথমভাগে বর্ণিত হয়েছে বাস্তব জীবনের কথাÑসে-বাস্তব অবশ্য অমানবিকতা, ক্রূরতা ও ভ-ামির প্রাধান্য। দ্বিতীয় ভাগে লেখক আমাদের নিয়ে যান রূপকথার কল্পজগতে। তারপর আমরা যখন এ-কাহিনিকে বড়োদের রূপকথা বলে বাব্যস্ত করি, লেখক তখন আমাদের ফিরিয়ে নেন বাস্তবলোকে। আমরা জানতে পারি এতক্ষণ যাকে আমরা কল্পলোকের সামগ্রী বলে গণ্য করেছিলাম, আসলে তা জ্বরবিকারের ঘোরে দেখা একরকম স্বপ্নজগতের ইতিবৃত্ত। তবে, এটাও লক্ষ করার মতো বিষয় যে, এই অতিপ্রাকৃত জগতেরও একটা নিজস্ব রীতিনীতি আছে, যদিও তার অধিবাসীদের আচরণে অনেক সময়ে মানবসমাজভুক্ত প্রাণীদের ছায়াপাত ঘটে। এই সুযোগে বাঙালি সমাজে প্রচলিত ভ্রান্ত বিশ্বাস ও অন্ধ সংস্কারকে লেখক আঘাত হেনেছেন এবং স্বকপোলকল্পিক কথাকে যারা শাস্ত্র চলে চালায়, তাদেরকে বিদ্রƒপ করেছেন। ত্রৈলোক্যনাথের বর্ণনাভঙ্গি বৈঠকিÑযেন শ্রোতাকে সামনে বসিয়ে রেখে তিনি কথা বলছেন। এমন কথকতার ক্ষমতা ছিল তাঁর অসাধারণ। তাঁর ভাষা সহজ, সরল, অনাড়ম্বর। সাধুরীতিতে তিনি বর্ণনা করেন, কিন্তু আমকে যখন আঁব লেখেন, তখন বোঝা যা, মৌখিক শব্দ ও বাক্যরীতিকে তিনি কেমনভাবে এর সঙ্গে মিলিয়ে ফেলেন। বর্তমান মুদ্রণে বসুমতী সাহিত্য মন্দির-প্রকাশিত ত্রৈলোকনাথ-গ্রন্থাবলীর তারিখহীন সংস্করণের পাঠ অনুসৃত হয়েছে। আনিসুজ্জামান, জানুয়ারি ২০০৯

ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় এর বই সমূহ

(Showing 1 to 21 of 21 items)

Recently Viewed