Sort

Reset Sort

Filter

Reset Filter

Shop by Categories

By Publishers

Price

Languages

Discount

Ratings

Shehzad Nayem Khan Turzo books

follower

শেহজাদ নাঈম খান তূর্য্য

মা আছেন, বাবা নেই, এমনই এক পরিবারের বড় সন্তান আমি। নাম - শেহজাদ নাঈম খান তূর্য্য। বিক্রমপুরের পোলা আশি টাকা তোলা, তবে জন্ম ঢাকার মিরপুরে। পাসপোর্টে জন্ম তারিখ দেয়া ২৪শে সেপ্টেম্বর ১৯৮৫ সাল, তবে এখানে সাল নিয়ে একটু ঝামেলা আছে। আমি ১০০% গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, আমার জন্ম ১৯৮৩ সালে। চাকরী নাকি বিয়ে, কি নিয়ে এই বয়সের ছলনা ? যদিও এই বিষয়ে আমার মা একেবারেই মুখ খুলেন না। খুব অল্প বয়সেই জীবিকার তাগিদে লেখাপড়া চলাকালীন সময়ে ২০০৪ সালে বেসরকারী একটা ব্যাংকে সহকারী অফিসার পদে হুট করেই চাকরী হয়ে যায়। ঐ ব্যাংকেই জীবনের প্রায় দশটা বছর পার করে হঠাৎ একদিন আমেরিকায় চলে যাই। শুরু হয়ে যায় পরিবার ছাড়া আমার একাকীত্তের প্রবাস জীবন। এই কষ্টের সময়টাতে সহধর্মিনীর মত পাশে থেকে লড়াই করার শক্তি দিয়ে যায় "ফেসবুক"। এরপর একদিন আমার মনেহল, আমাকে কান্না জমাতে হবে। বেঁচে থাকলে আমাকে আরও অনেক বেশী বেশী কাঁদতে হবে। আমি তাই এক ফোটা দুই ফোটা করে কান্না জমাতে শুরু করেছি। যাকেই দেখি সেই টাকার পেছনে ছোটে, আমি বোকা শুধু কান্নার পেছনে ছুটি। কারন আমি বোকা হয়েই জন্মেছি। একদিন বুড়ো হয়ে যাব, হাতে হাত ধরে থাকা সঙ্গীটাও কোনদিন একা রেখে চলে যেতে পারে। ওর জন্যে আমাকে কাঁদতে হবে। হৃদয় চিরে বোবা কান্না কাঁদতে হবে। কেঁদে কেঁদে পুরনো দিনের সেই ভালোবাসাগুলোকে মনে করতে হবে, কতই না কষ্ট করে ওর মনটা পেয়েছিলাম, সেদিনের সেই বিশ্ব জয় করা হাসি মুখের কথা মনে করে আমাকে কাঁদতে হবে। আমি না কাঁদলে ও বলবে, তুমি আজও আমাকে ভালোবাসতে পারলে না। এরপর আমি আমার বিছানায় একা হয়ে যাব। আমার বালিশের পাশের বালিশটা দেখে মনে হবে, কতোদিন হলো এই বালিশটা স্থির হয়ে আছে, কেউ বুঝি আয়রন করে রেখেছে। আমি সেই বালিশের উপর হাত রেখে কাঁদব। ঘুম থেকে চোখ খুলে রোজ দেখব, যেই বালিশে একদিন এলোমেলো চুল ছড়িয়ে থাকত, যেই বালিশে আমি ভোরের বেলা মাথা লুকাতাম, সেই বালিশ আজ কতোটা পর হয়েগেছে। মাঝরাতের হাল্কা আলোতে যেই বালিশে আমি দেখেছি, লাল রঙ্গের লিপিস্টিকের দাগ, সেই বালিশটা আজ কাফনের রং ধরে আছে। কতো কতো রাত এই বালিশ ভিজে ছিল, তোমার রাগ আর অভিমানের অশ্রুতে, আজ সেই অশ্রু আমার চোখে। আমি সেই বালিশ বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদব। যেই কান্নায় কোন শব্দ থাকবেনা, পানি থাকবেনা, থাকবে শুধু বড় বড় স্রোতের ঢেউ। একদিন বুড়ো হবো, ছ্যাঁকা দিয়ে চলে যাওয়া প্রেমিকার কথা ভেবে কাঁদব। এতোটা দিন যাকে সম্পূর্ন ভুলে ছিলাম, শেষ বয়সে আরেকবার তাকে নিয়ে কাঁদব, গলায় গলায় হাত দিয়ে ঘুরে বেড়ানো সেই বন্ধুদের কথা মনে করে কাঁদব, ফেসবুকের অজানা অপরিচিত বন্ধুগুলোর জন্য কাঁদব, ছোটবেলার সেই দিনগুলোর জন্যে কাঁদব। মুখে ভাত নিয়ে বসে থাকা, পড়া ফাকি দেয়া, স্কুল পালিয়ে সিনেমা হলে চলে যাওয়া, লুকিয়ে টাকা চুরি করা, খেলতে গিয়ে ব্যাথা পেয়ে, মায়ের পিটুনী খেয়ে যেমনটা কাঁদতাম, তখন আবার কাঁদব। সেই বুড়ো বয়সে আমার মায়ের কথা মনে করে বুক ফেটে কাঁদব। কাঁদব ছোট বয়সে ফেলে যাওয়া সেই অসহায় বাবার জন্যে। ফেসবুকে আমি গল্প লিখিনা, লিখি আমার কান্না। একদিন বুড়ো হয়ে যাব, এমনটাও হতে পারে ফেসবুকের আইডি পাসওয়ার্ড সব ভুলে যাব, তখন আমি কি নিয়ে কাঁদব ? আমি ভাবতে শুরু করলাম, যদিও আমার সব ভাবনা আজ পর্যন্ত সব সময় ভুল প্রমানিত হয়েছে। সেই কান্না জমাতে গিয়ে বোকার মত মস্ত বড় একটা ভুল করে বসেছি, যার মাশুল এখন আমাকে পদে পদে দিয়ে যেতে হচ্ছে, হয়তো সামনেও হবে। ভুল করেছি ২০১৭ সালের ( গল্প- নীলখাতা ) এবং ২০১৮ সালের ( উপন্যাস- নাম লিখেছি জলে ) বইমেলায়। মোবাইল ফোনের নোট প্যাডে টিপে টিপে এই দুই দুইটা বই বইমেলায় প্রকাশ হয়েছে। যার দরুন আমার হাতের আঙ্গুলগুলো দিনে দিনে ছোট হয়ে আসছে। পৃথিবীর ইতিহাসে লিখা হবে, এমনই একজন লেখকের অমানবিক বিরল কাহিনী। এই একটি কারনেই আমি বই লিখি। বইয়ের মলাটে কান্না বাঁধাই করি। আমার বইগুলো পড়ে আমি একা একা কাঁদব। অনেক অনেক বই লিখব, অনেক অনেক কান্নার জন্যে। আমার লিখা বইগুলোতে আমি খুঁজে পাবো আমার হারিয়ে যাওয়া দুষ্টো একটা পৃথিবী। আমার কান্নাগুলো সেদিন বলবে, " আমিও একদিন লেখক ছিলাম " ....

শেহজাদ নাঈম খান তূর্য্য এর বই সমূহ

(Showing 1 to 2 of 2 items)

Recently Viewed