“আমার জীবনযাত্রা ৪র্থ খণ্ড”বইয়ের প্রথম ফ্ল্যাপ এর লেখা:
( ৯৪৭-৫০ এই তিন বছরের ঘটনাক্রমকে • নিয়ে এই খণ্ড, যখন রাহুল সংকৃত্যায়নের বয়স প্রায় সাতান্ন। ইতিপূর্বে যে রাহুলকে আমরা দেখেছি জাগতিক মােহবন্ধহীন, ভবঘুরে তথা দুঃসাহসিক পর্যটক হিসেবে, এখন সেই রাহুলই ধীরে ধীরে ফিরে আসছেন বৈরাগ্য থেকে গার্হস্থে। তবু সংসারী রাহুল নন, এক সৃষ্টিশীল মনীষাসম্পন্ন রাহুলই উদ্ভাসিত এখানে। এই খণ্ডে তার সংস্কৃতি চর্চার এক আদিগন্ত ভূমি উন্মােচিত। বিভিন্ন গ্রন্থের পরিকল্পনা, ভাবনা ও রচনার ইতিবৃত্ত নিয়ে একদী পর্যটকের জীবন এখন পুরােপুরি সাহিত্যিকের জীবন হয়ে ওঠে। এই সাতান্ন বছর বয়সে তিনি এক নিরলস সাংস্কৃতিক কর্মীও। হিন্দিভাষার প্রতি তার অকৃত্রিম অনুরাগ। এখানে কেলাসিত হয়ে ওঠে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের ভেতর দিয়ে। এই পর্বেই সংঘটিত হয় কমিউনিস্ট পার্টি থেকে তার নাম খারিজ হয়ে যাওয়ার মতাে। ঐতিহাসিক ঘটনা। রাহুল তার জন্য অনুতপ্ত হন। আবার রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে সাক্ষাৎ
হওয়াতেও এই মানুষটি একইভাবে অনুতপ্ত। শান্তিনিকেতনে অবস্থানকালে সেই আবেগ তাকে উদ্বেলিত করে। যদিও দুঃখ-শােক, আবেগ-অনুতাপ কোনাে কিছুই তার মানসপটে স্থায়ী ক্ষতের সৃষ্টি করে না। কেননা তিনি সর্বদাই চলিষ্ণু। সংস্কার ও গোঁড়ামি, ধ্বংস ও সৃষ্টি, প্রেম ও বৈরিতা—এই বিপুল মহাজাগতিক । লীলা-বৈচিত্র্যের স্রোতে তিনি ভাসমান। ভেসে চলেছেন এক জীবন থেকে বহু জীবনের মহাসংগমের দিকে।
Read More