মানুষ যা ভাবে, সে ঠিক তা-ই। অর্থাৎ যে কোন বিষয়কে মানুষ যেভাবে ভাবে, বিষয়টি তার কাছে সেভাবেই ধরা দেয়। ভাবনা হল মানুষের মনের দর্পন। কাজ হল মানুষের ভাবনার প্রকাশ। আর কাজের ধরণ অনুযায়ী মানুষ সুখ বা দুঃখ পেয়ে থাকে। ভাবনা যেহেতু মানুষের একান্ত বিষয়, সে ইচ্ছে অনুযায়ী ভাবনার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। তবে সকলেই একাজে পারদর্শী নয়। কারণ ভাবনার যে নিজস্ব কিছু ব্যর্থতা আছে, সেটা অনেক মানুষই জানেনা। এই ব্যর্থতা বা ত্রুটিগুলো মানুষকে ভুল পথে পরিচালিত করে আর মানুষ ভাগ্যের দোষ দেয়। পরিচ্ছন্ন চিন্তার এইসব ব্যর্থতা নিয়ে রফ দোবেল্লি রচনা করেছেন ‘দ্য আর্ট অব থিংকিং ক্লিয়ারলি।’ গবেষণামূলক, বিজ্ঞানসম্মত ও অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন এই বইয়ে পরিস্কারভাবে চিন্তা করার বিভিন্ন উপায়গুলো বিশদভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। আমাদের নিত্যজীবনে বিভিন্ন বিষয়কে কত ভুলভাবে আমরা চিন্তা করি, এই বইটি না পড়লে সেসব বুঝার কোন উপায় নেই। যেমন ধরুন, আমরা নিজেদেরকে সবসময় অতিমূল্যায়ন করি, নায়ক, নায়িকার বীরোচিত জীবন কথায় মুগ্ধ হই আর ভাবি যে আমিও বা কম কি? আমরা কিছু পেয়ে যতনা খুশি হই, তার চেয়ে বেশি মর্মাহত হই কিছু হারিয়ে গেলে। আমরা অন্যের মানসিক আবস্থার বিচার না করেই তার সাময়িক নীরবতা বা স্বত:স্ফূর্ততার অভাবকে অসদাচরণ ধরে নেই। চলার পথের এইসব ভ্রান্ত ধারণা অনেক সময় আমাদের জীবনকে যথেষ্ঠ জটিল করে তোলে। আর এর জন্য পুরোপুরি দায়ী আমাদের বিভ্রান্ত চিন্তাধারা। রফ দোবেল্লি তাঁর ‘দ্য আর্ট অব থিংকিং ক্লিয়ারলি’ বইকে ৯৯টি অধ্যায়ে বিভক্ত করেছেন। এই অধ্যায়গুলোতে আমাদের ব্যক্তিগত, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পেশাগত জীবনের বৈচিত্র্যময় ভুল চিন্তাকে যথাসম্ভব তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। এইসব ভ্রান্তি যেকে উত্তরণের সরল প্রক্রিয়াগুলো উপস্থাপন করেছেন বিভিন্ন ঘটনা, সংলাপ ও হাস্যরসের উপভোগ্য সংমিশ্রনে। যদিও অত্যন্ত বিনয়ের সাথে তিনি স্বীকার করেছেন যে এই প্রক্রিয়াগুলোই শেষ কথা নয়, প্রতিদিন আরো নতুন ভ্রান্তি ও তা সংশোধনের প্রক্রিয়া আবিস্কৃত হতে পারে। তথাপি তার তথ্যবহুল বইয়ের অবদান অনস্বীকার্য। এই বইটি আমাদেরকে চিন্তাধারার ভুলগুলো চিনতে ও তাকে অতিক্রম করতে সাহায্য করবে। নির্দ্বিধায় আমরা এগিয়ে যেতে পারব সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যতের দিকে। সূচিপত্রঃ ১. সমাধিস্থল কেন আপনার পরিদর্শন করা উচিত :টিকে থাকার প্রবণতা
২. হার্ভার্ড কি আপনাকে বেশি স্মার্ট করে তোলে? :সাঁতারুর শরীরের মায়া
৩. কেন আপনি মেঘে নানা আকৃতি দেখতে পান : দলবদ্ধতার মায়া
৪. ৫০ মিলিয়ন মানুষ যদি বোকার মত কিছু বলে, এটা বোকামিই থেকে যায় : সামাজিক প্রমাণ
৫. কেন অতীত ভুলে যাওয়া উচিত : নিমগ্নতার বিভ্রান্তি
৬. ফ্রি ড্রিংকস কখনও গ্রহণ করবেন না : পারস্পরিক সম্পর্ক
৭. ‘বিশেষ বিষয়ে সচেতন থাকুন : নিশ্চয়তার প্রবণতা (প্রথম ভাগ)
৮. প্রিয়তাকে হত্যা করুন : নিশ্চয়তার প্রবণতা (দ্বিতীয় ভাগ)
৯. কর্তৃপক্ষের কাছে নতিস্বীকার করবেন না : কর্তৃপক্ষের প্রবণতা
১০. সুপার মডেল বন্ধুকে ঘরে রেখে যান : বিপরীত প্রতিক্রিয়া
১১. কেন আমরা ভুল মানচিত্র পছন্দ করি যেটা আদৌ মানচিত্র নয় :পর্যাপ্ততার প্রবণতা
১২. কেন কষ্ট ছাড়া কেষ্ট মিলে না’ সতর্ক সংকেত বাজানাে উচিত :ভালাে হওয়ার আগে খারাপ হয়ে যাওয়ার প্রবণতা
১৩. এমনকি সত্য কাহিনীও রূপকথা হয়ে যায় : গল্পের প্রবণতা
১৪. কেন আপনার ডায়েরী রাখা উচিত : পশ্চাৎ দৃষ্টি প্রবণতা
১৫. কেন আপনি নিজের জ্ঞান ও ক্ষমতার অতি মূল্যায়ন করেন :অধিক আত্মবিশ্বাসের ফল
১৬. সংবাদ পাঠককে গুরুত্বের সাথে নেবেন না : চালকের জ্ঞান
১৭. যা ভাবেন তার চেয়ে কম নিয়ন্ত্রণ করেন : নিয়ন্ত্রনের মায়া
১৮. লয়ারকে ঘন্টা হিসেবে মূল্য দেবেন না :পুরস্কারের সর্বোচ্চ-প্রতিক্রিয়ার ঝোক
১৯. ডাক্তার, কনসালটেন্ট ও সাইকোথেরাপিষ্টদের সন্দেহজনক কার্যকারিতা: মধ্যাবস্থায় ফিরে যাওয়া
২০. ফলাফলের মাধ্যমে কোন সিদ্ধান্তকে বিচার করবেন না : ফলাফল প্রবণতা
২১. কমটাই বেশি : পছন্দের সত্যতা
২২. আপনি আমাকে পছন্দ করেন, সত্যিই পছন্দ করেন :পছন্দের প্রবণতা
২৩. কিছু নিয়ে পড়ে থাকবেন না : অধিকারের ফল
২৪. অসম্ভব ঘটনার অপরিহার্যতা : কাকতালীয় ঘটনা
২৫. স্বাভাবিকতার বিপর্যয় : দলীয় সিদ্ধান্ত
২৬. কেন আপনি মেগাট্রিলিয়ন নিয়ে শীঘ্রি খেলতে যাচ্ছেন :সম্ভাব্যতাকে প্রত্যাখ্যান
২৭. জারের শেষ কুকিটা কেন মুখে জল এনে দেয় :দুপ্রাপ্যতার ভুল ধারণা
২৮. ক্ষুরের শব্দ পেলেই জেব্রা আশা করবেন না :মূলধারাকে প্রত্যাখ্যান
২৯. বিশ্বের ভারসাম্য শক্তি কেন ধোঁকাবাজি : জুয়াড়ির বিভ্রান্তি
৩০. ভাগ্যের চাকা কেন আমাদের মাথা ঘুরায় : নোঙর
৩১. মিলিয়নের হাত থেকে লোকজনকে কিভাবে মুক্তি দেয়া যায় :আরোহ
৩২. ভালোর চেয়ে মন্দটা কেন বেশি আঁকড়ে ধরে : ক্ষতির অনীহা
৩৩. দল কেন অলস হয় : সামাজিক আলসেমি
৩৪. একটুকরো কাগজের আঘাতে কুপোকাত হওয়া : দুর্বল বৃদ্ধি
৩৫. উচ্ছ্বাসকে রুদ্ধ করা : বিজয়ীর অভিশাপ
৩৬. লেখককে কখনো প্রশ্ন করবেন না উপন্যাস আত্মজীবনীমূলক কিনা: মৌলিক আরোপনের ভুল
৩৭. কেন আপনি সারসে বিশ্বাস করবেন না : ভুল ভাবনা
৩৮. শীর্ষের সবাই সুন্দর : সাফল্যের প্রতিক্রিয়া
৩৯. অভিনন্দন : আপনি রাশিয়ান রুলেত জিতেছেন : বিকল্প উপায়সমূহ
৪০. ভুল ভবিষ্যতদ্রষ্টা : ভবিষ্যদ্বাণীর মোহ
৪১. বিশেষ ক্ষেত্রে প্রতারণা : সংযোগের বিভ্রান্তি
৪২. কি বলেছেন নয়, কিভাবে বলেছেন : নির্মাণ কৌশল
৪৩. পর্যবেক্ষণ ও প্রতীক্ষা কেন অত্যাচার : কাজের প্রবণতা
৪৪. কেন আপনি হয় সমস্যা, নয় সমাধান : বাতিল প্রবণতা
৪৫. আমাকে দায়ী করবেন না : আত্মসেবার প্রবণতা
৪৬. যা আশা করেন, তার জন্য সতর্ক থাকুন : সুখ-সম্পৃক্ত বিশ্বাসের ঘানি
৪৭. নিজের অস্তিত্বে অবাক হবেন না : আত্ম-নির্বাচন প্রবণতা কালো হাঁস
৭৬. জ্ঞান স্থানান্তরযোগ্য নয় : রাজত্ব নির্ভরতা
৭৭. সহমতের অতিকথা : মিথ্যা ঐক্যমতের প্রতিক্রিয়া
৭৮. আপনি সবসময় সঠিক ছিলেন : ইতিহাসের মিথ্যাচার
৭৯. ফুটবল টিমের সাথে কেন নিজের সম্পৃক্ততা খুঁজেন :দলীয় ও নির্দলীয় প্রবণতা
৮০. ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার তফাৎ : অনিশ্চয়তাকে অপছন্দ
৮১. কথিত মর্যাদার সাথে কেন সম্পৃক্ত থাকেন : ত্রুটির
প্রতিক্রিয়া ৮২. ‘শেষ সুযোগ’ কেন আমাদের আতংকিত করে : অনুতাপের ভয়
৮৩. চোখের দেখা কিভাবে আমাদের অন্ধ করে দেয় : মুখ্য প্রতিক্রিয়া
৮৪. অর্থ কেন নগ্ন নয় : ঘরোয়া অর্থের প্রতিক্রিয়া
৮৫. নববর্ষের প্রতিজ্ঞা কেন কাজ করে না : স্থগিতকরণ
৮৬. নিজের সাম্রাজ্য গড়ে তুলুন : হিংসা
৮৭. পরিসংখ্যানের চেয়ে উপন্যাস কেন বেশি পছন্দ করেন :প্রকাশিত ব্যক্তিরূপ
৮৮. কি খুঁজছেন আপনার কোন ধারণা নেই : মনোযোগের মায়া
৮৯. অর্থহীন কথা : কৌশলের ভুল উপস্থাপনা
৯০. কোথায় থামতে হয়? : অতিভাবনা
৯১. কেন আপনি অতিরিক্ত নেন : পরিকল্পনার ভ্রান্তি
৯২. অতি গর্জায় যারা, তারা বর্ষায়না : পেশাগত অবহেলা
৯৩. মিশন সম্পন্ন : জেইগার্নিকের প্রতিক্রিয়া
৯৪. দাঁড়ের চেয়ে নৌকার মূল্য বেশি : দক্ষতার মায়া
৯৫. তালিকা কেন আপনাকে প্রতারিত করে :ইতিবাচক ফিচারের প্রতিক্রিয়া
৯৬. তীরের চারপাশে ষাঁড়ের চোখ আঁকা : চেরি উত্তোলন
৯৭. প্রস্তর যুগে অপরাধীদের শিকার করা হত : একটি কারণের বিভ্রান্তি
৯৮. গতিনিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে নিরাপদ চালক হওয়া যায় : ইচ্ছাকৃত আচরণের ভুল
৯৯. কেন খবর পড়া আপনার উচিত নয় : খবরের মায়া পরিশিষ্ট ২৬৫
কৃতজ্ঞতা স্বীকার ২৭২