পৃথিবী জুড়ে পারমাণবিকতার ভয়াবহতাকে অস্বীকার করে মানুষের মুক্তির গান গাইতে সচেষ্ট রাহী। তাঁর অসংখ্য কবিতার পরতে পরতে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীকারের দ্রোহী উচ্চারণ স্পষ্ট। তাঁর কবিতা মানেই জীবনের অপরূপ রূপালি গল্প। তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রগতিশীল রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। শত বাধার আঁধার ভেঙেও মুজিবীয় আদর্শের পুনর্জাগরণে প্রতিবাদীকণ্ঠে গেয়েছেন বিশ^মানবতা ও বাঙালির মুক্তির জয়োগান। বারবার তাঁর কণ্ঠ রোধ করার অপচেষ্টা চালিয়েছে মানবতাবিরোধী অপশক্তি। অস্বাভাবিক সামাজিক অবক্ষয় এবং দুর্বিষহ রাষ্ট্রীয় দুর্বৃত্তায়নের মাঝখানে দাঁড়িয়েও অমীমাসিংত জীবনের ছবি আঁকেন রাহী। দেশ ও স্বাধীনতা যখন বিপদাপন্ন তখন রাহীর শিল্পসত্তা প্রতিবাদে ফেটে পড়ে। এই প্রতিবাদ অশিল্পের বিরুদ্ধে শিল্পের, অস্ত্রের বিরুদ্ধে গোলাপের, অরাজকতার বিরুদ্ধে শান্তির, মিথ্যার বিরুদ্ধে সত্যের, অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে দ্রোহ ঘোষণা করেন মানবিকতার দৃঢ়প্রত্যয়ী স্বপ্নজাগানিয়া গান গেয়ে।
কবি শাফিকুর রাহী সম্পর্কে বিভিন্ন বিদগ্ধ বিজ্ঞজনের মূল্যায়ন : কেউ বলেছেন কবি হুইটম্যান কিংবা মুসা জলিলের সঙ্গে তার মিল খুঁজে পাওয়া যায়। সনামধন্য লেখক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেছেন কবি মায়াকভস্কির সঙ্গে কবি শাফিকুর রাহীর মিল পাওয়া য়ায়। কেউ আবার নজরুল ও জীবনানন্দের সঙ্গেও তার দ্রোহ এবং গ্রামীণ নৈসর্গের কাব্যভাষার সঙ্গে তুলনা করেছেন। কেউ বলেছেন তুরস্কের কবি নাজিম হিকমতের দ্রোহী কাব্যসত্তার সঙ্গেও তার মিল লক্ষ করা যায়। বিশ^মানবতার মহামুক্তির বন্দনায় তিনি নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন সারাক্ষণ সারাবেলা। সহায়সম্বলহীন উদ্বাস্তু উদাসী নগরবাউল পথ হাঁটেন পথের সন্ধানে। এভাবেই অজ্ঞাতবাসে কারণে অকারণ ক্ষয়ে যায় সোনালি যৌবন, সাধের অর্ধশত বসন্ত।
সাবেক সম্পাদকম-লীর সদস্যÑ জাতীয় কবিতা পরিষদ, জীবন সদস্যÑ বাংলা একাডেমি, সভাপতি- সোনার বাংলা শিক্ষা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, সদস্যÑ জয়বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট, সাবেক যুব ক্রীড়া ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী, জাতীয় প্রচারমাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের গ্রন্থনা, পরিকল্পনা ও পরিচালনা করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। সম্পাদকÑ সম্প্রীতি। প্রকাশিত গ্রন্থ : প্রায় ৫০।
কবিতায় অসাধারণ অবদানের জন্য ইতোমধ্যে তিনি অনেকগুলো পুরস্কার অর্জন করেছেনÑ গাঙচিল সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংসদ কর্তৃক ডা. লুৎফর রহমান স্বর্ণপদক, দীপালোক সাংস্কৃতিক সংসদ কর্তৃক গুণিজন সম্মাননা পদক, বাংলাদেশ কবিতা সংসদ’পাবনা কর্তৃক বাংলা সাহিত্য পদক ১৪১৬, ২০১০ সালে মাতৃভাষা সাহিত্য পুরস্কার, ২০১০ সালে বাংলাদেশ পোয়েটস ক্লাব সাহিত্য পুরস্কার, ২০১০ সালে ভাষাবিজ্ঞানী ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ পুরস্কার, ২০১০ সালে মাদার তেরেসা সাহিত্য পুরস্কার, কবি জীবনানন্দ সম্মাননা, দক্ষিণ এশিয়া সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদ কর্তৃক শেরে বাংলা সাহিত্য সম্মাননা’২০১৪ এবং কবি নজরুল সাহিত্য সম্মাননা পদক’২০১৫ লাভ করেন।
Read More