The Origins of Political Order: From Pre-human times to the French Revolution বইতে ফ্রান্সিস ফুকুয়ামা প্রশ্ন করেছিলেন, “How to get to Denmark?” কীভাবে ডেনমার্ক যেতে হয়? তিনি ডেনমার্ক যাওয়ার ভিসা প্রসেসিংয়ের ব্যাপারে জানেন না বলে এমন প্রশ্ন করেননি; বরং তার প্রশ্ন ছিল, “কীভাবে ডেনমার্কের মতো (সুখী, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধিশালী) দেশ তৈরী করা যায়? মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বুদ্ধিবৃত্তিক পদক্ষেপটি ছিল এনলাইটেনমেন্ট যুগের সূচনা। প্রতিষ্ঠিত কোন ধারণাকে নতুন কোন ধারণা দিয়ে প্রতিস্থাপিত করতে চাইলে নতুন সে ধারণাকে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি অর্জনে অধিক কার্যকর বলে প্রমাণ করতে হয়। মানুষ জীবনে এই তিনটি জিনিস ছাড়া আর কী চায়? এসবের তালাশেই মানুষ তার ব্রেইনে সবচেয়ে বেশী বিদ্যুৎ খেলেছে। এসবের সন্ধানেই ইতিহাসজুড়ে শত শত ধারণার উত্থান-পতনের ঘটনা ঘটেছে। সেই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ পাশ্চাত্য সভ্যতা ধর্মীয় ধারণাকে অপসারণ করে তার জায়গায় এনলাইটেনমেন্ট যুগের ধারণা প্রতিষ্ঠিত করেছে। পৃথিবীতে এখন পাশ্চাত্যের একাধিপত্যের শত বছর পেরিয়ে গেছে। পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলোতে লিবারেলিজম, সেকিউলারিজম, হিউম্যানিজমের মতো ধারণার জয়জয়কার। সেসব দেশের কথা চিন্তা করলে আমাদের চোখে যে গুটিকয়েক দৃশ্য ভেসে ওঠে, তার মধ্যে অন্যতম হলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাহায্যে চোখধাঁধানো বস্তুগত উন্নয়ন ও সর্বোৎকৃষ্ট জীবনমান। পশ্চিমা বুদ্ধিজীবীদের দাবীও তাই; ‘এনলাইটেনমেন্ট ধারণা মানুষের জীবনে অভূতপূর্ব পরিবর্তন সাধন করেছে’, ‘মানুষ বর্তমান সময়ের মতো উৎকৃষ্ট জীবন ইতিহাসের কোন সময়ে উপভোগ করেনি’। কিন্তু এই চোখ-ফ্যালফ্যালানো উন্নয়নের পেছনে কি অন্য কিছু আছে? তুঙ্গ-স্পর্শী জীবনমানের দাবী কি সত্য নাকি শুধুই ছলনা? এনলাইটেনমেন্ট ধারণার অধীনে জীবনযাপন করে কতটা ভালো থাকা যায়? পশ্চিমারাই বা এখন কতটা ভালো আছে? তারা কি সুখী, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধশালী জীবনযাপন করছে নাকি লাইফ সাপোর্ট নিয়ে কোন রকম বেঁচে আছে? আর, এই শত বছরে মানব সমাজের জন্য পাশ্চাত্যের অবদান কী? ধর্মের সাথে পাশ্চাত্যমুখী এই সফরে পশ্চিমা সভ্যতাকে নতুন করে চিনুন, জানুন ও সিদ্ধান্ত নিন, ”মানবজাতির জন্য কোনটা হানিকর; ধর্ম নাকি ধর্মহীনতা?”; ঠিক করুন, আমাদের ডেনমার্ক যাওয়া উচিত নাকি অন্য কোথাও।