‘চলতে চলতে’ পথে এসেছে প্রায় এক বছর আগে। বলেছিলাম অচিরেই ‘সাকুরা থেকে গুলে লালা’ প্রস্ফুটিত হবে। কিন্তু তার প্রসব বেদনা শেষই হচ্ছিল না। যাক, দেরিতে হলেও আলামত দেখে মনে হচ্ছে বইটি এবার জন্ম নিবে। অধুনালুপ্ত সাপ্তাহিক বিক্রমের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শ্রদ্ধেয় মাসুদ মজুমদারের নির্দেশে তার পত্রিকায় একদা একটা অনিয়মিত কলাম লিখতাম। আরো কিছু লেখার সাথে এই লেখাগুলোর কয়েকটা ‘চলতে চলতে’ বইয়ে প্রকাশিত হয়েছে। বাকি কিছু লেখা ছিল জাপান ও ইরান সফর সম্পর্কিত, যা বর্তমান বইয়ের পরিবেশনা। আর এ জন্যই বইয়ের নামে দু’দেশের জাতীয় ফুল যথাক্রমে ‘সাকুরা’ ও ‘গুলে লালা’ ওরফে ‘Cherry’ ও ‘Tulip’-কে আনা হয়েছে। যদিও বইয়ের কোথাও এ নাম দু’টি নির্দিষ্টভাবে ব্যবহার করা হয়নি। এদের সৌন্দর্য নিয়ে মাতামাতি সারা দুনিয়ায় মশহুর। স্থান-কাল-পাত্র বয়স ও ভ‚গোল কিছুই তা আটকে রাখতে পারেনি। আমার ইরান সফর ছিল মূলত সম্মেলন ও বেড়ানো উপলক্ষে। আর জাপানে এক বছর ছিলাম পেশাগত প্রশিক্ষণের প্রয়োজনে। বর্তমান লেখাগুলোতে সে সময়ের গল্পই আনা হয়েছে। কিছু লেখা অবশ্য দীর্ঘদিন পরে স্মৃতির জমিনে চাষাবাদ করে ফলানো ফসল। গত শতাব্দীর অন্যতম বিরল প্রতিভা, ইরানের প্রখ্যাত লেখক, শিক্ষাবিদ, সমাজতাত্তি¡ক, ইরান ও আলজেরীয় মুক্তি আন্দোলনের বিপ্লবী সংগঠক শহীদ ড. আলী শরীয়তির A Glance at Tomorrow's Historyশীর্ষক একটা চমৎকার বক্তৃতা পড়েছিলাম। প্রায় চল্লিশ বছর আগে আমি ও আমার স্কুল জীবনের বন্ধু মাহমুদ চৌধুরী মিলে তা বাংলায় অনুবাদ করি। ১৯৮৮ সালে পুস্তিকা আকারে ছাপাও হয়েছিল। অনুবাদকের নাম ছিল মাহমুদ আবদুল্লাহ। শহীদ ড. শরীয়তির মূল্যবান বক্তৃতার অনুবাদটা এ বইয়ে সংযোজিত হলো। আশা করি পাঠকদের জন্য তা আলাদা আগ্রহ তৈরি করবে। ‘বরাদ্দ’ ঘাটতিজনিত কারণে, এ বইয়ে তথ্য ও তত্ত্বগত যে কোনো ভুলভ্রান্তির জন্য মাফ চেয়ে নিচ্ছি সম্মানিত পাঠকদের দরবারে। আশা করি পাঠকরা কসুর নেবেন না।