মা, মা, মা এবং বাবা, মা, মা, মা এবং বাবা - দ্বিতীয় খণ্ড এই পৃথিবীতে যারা আমাদের সবচেয়ে আপনজন, যাদের ঋণ কোনভাবেই শোধ করা সম্ভব না তাঁরা হলেন আমাদের মা ও বাবা। সর্বাবস্থায় প্রতিটি সন্তানের উচিত তাদের সেবা করা। মা-বাবার অবাধ্যতার ফলাফল, তাদের বাধ্যগত থাকার পুরষ্কার, তাদের প্রতি আমাদের ব্যবহার কীরূপ হওয়া উচিত সে সব কিছু নিয়ে চমৎকার কিছু গল্পের সংকলন এই বইটি। সূচিপত্রঃ জীবন থেকে নেওয়া* মায়ের চিঠি- ১৭ * সালেম- ২১ * বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসুন- ৩১ * এই ঋণ শোধ হবার নয়- ৩৩ * উপহার- ৩৭ * মায়ের চোখে পৃথিবী- ৪১ * ত্যাগ ও বিনিময়- ৪৫ * তবুও সৌভাগ্যবান- ৪৯ * রেস্টুরেন্টে একদিন- ৫৫ * মায়ের মিথ্যে বলা- ৫৭ * অবহেলা- ৬১ * অনুশোচনার গল্প: হারিয়ে ফেলার পরে- ৬৩ * লোভের তাড়না- ৬৯ * অনুশোচনার গল্প: রক্তাক্ত আলেক্সেন্ড্রিয়া- ৭৫ * মাকে পাওয়ার মামলা- ৮১ * আত্মত্যাগ- ৮৫ * উপলব্ধির গল্প: আর কি পাবো তারে!- ৮৭ * কিছু স্মৃতি, কিছু শূন্যতা- ৯১ * পুরস্কার- ৯৫ * স্বঃপ্ন, দুঃস্বপ্ন- ৯৭ * আনুগত্যের গল্প: সঠিক পথের দিশা- ১০৩ * মায়ের অভিশাপ- ১০৫ * এক বৃদ্ধার ইসলামগ্রহণ- ১০৭ * শোচনীয় পরিণতি- ১০৯ * ফযল বিন ইয়াহ্ইয়া- ১১১ * ইবনু তাইমিয়া (আ.) এর চিঠি- ১১৩ * ধনী লোকের মানহানি- ১১৫ * সেতুবন্ধন- ১১৯ * অশুভ পরিণাম- ১২৩ * আনুগত্যের গল্প: মৃত্যু থেকে রক্ষা- ১২৯ * অবাধ্যতা- ১৩১ * উপলব্ধির গল্প: অবুঝ শিশুর ভাবনা- ১৩৫ * বাবা-মায়ের স্মৃতি- ১৩৭ * সিলাহ রেহমি- ১৪৩ * সহানুভূতির সত্য রূপ- ১৪৯ কুর’আন ও হাদিস থেকে নেওয়া* ইবরাহীম (আ) এর নম্রতা- ১৫৫ * জুরাইজের ঘটনা- ১৫৭ * ‘উমার (র:) এর কান্না- ১৬১ * পাথর অপসারণ- ১৬৫ * বাবা-মায়ের দু’আ- ১৬৭ * উত্তম আচরণ ও সম্মান- ১৭০ * অমুসলিম পিতা-মাতার সাথে আচরণ- ১৭১ * দীর্ঘায়ু ও সম্পদ লাভ- ১৭৩ * এক ইয়েমেনীর ঘটনা- ১৭৪
মায়ের চিঠি প্রিয় খোকা, বেশ কিছুদিন ধরে তোমার কথা খুব মনে পড়ছে। ঘুরেফিরে কেবল পুরোনো দিনের স্মৃতিগুলোই চোখের সামনে ভেসে উঠছে বার বার। তখন সময়টা ছিল বিয়ের প্রায় বছর দেড়েক পর। একজন নারী তার জীবনে সবচেয়ে প্রিয় যে সংবাদ পেতে পারে, সেই সংবাদ আমিও পেয়েছিলাম। তুমি জানো, কী ছিল সেই সংবাদ—যা আমাকে জীবনের পরম আনন্দে ভাসিয়েছিল? সেটা ছিল তোমার অস্তিত্বের সংবাদ। আমাকে বলা হয়েছিল, আমার গর্ভে তুমি এসেছ। বাবা আমার, আমি তোমাকে কোনোভাবেই সেই মুহূর্তের কথা বলে বোঝাতে পারবো না। আমার গর্ভে তোমার অস্তিত্বের সংবাদ যে আমাকে কী রকম আনন্দের প্লাবনে ভাসিয়েছে—সেটা তুমি কোনোদিনও বুঝবে না। তারপর অনেকগুলো সপ্তাহ কেটে গেল। আমার শরীরে আস্তে আস্তে পরিবর্তন আসতে লাগল। শরীরের এই পরিবর্তনের সাথে সাথে আমি ভয়ও পাচ্ছিলাম। কারণ, আমি যা-ই খেতাম তা-ই বমি হয়ে যেত। প্রচণ্ড দুর্বলতা এসে আমার শরীরে ভর করতে লাগল। তুমি বড় হওয়ার সাথে সাথে আমার শরীরও দিন দিন বড় হতে লাগল…. বাবা-মা ও সন্তানের মধ্যকার সম্পর্কটাই পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর সম্পর্ক। এই সম্পর্কের কোথাও কোনো খাদ নেই। নেই লৌকিকতা কিংবা স্বার্থপরতার ছোঁয়া। স্নেহ-মমতা, আদর-যত্ন ও নিখাদ ভালোবাসার এক অদ্ভুত মায়াবী চক্রে আবর্তিত এই সম্পর্কের প্রতিটি মুহূর্ত। আমাদের জন্ম ও বেড়ে ওঠায়, শৈশব-কৈশোরের গল্পে, আমাদের যুবক হয়ে ওঠার চিত্রপটে তারাই থাকেন মূল ভূমিকায়। যারা নিজেদের সবটুকু দিয়ে সন্তানদের মানুষ করেন, সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য উৎসর্গ করেন নিজেদের বর্তমান; অথচ এই সন্তানদের কাছেই একটা সময়ে বাবা-মা’রা হয়ে যান অতিরিক্ত বোঝা ও অযাচিত জঞ্জাল। দুনিয়ার লোভ আর রূপের মোহে পড়ে যারা ভুলে যায় বাবা-মাদের, ভুলে যায় তাদের অবদান ও ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা—কেমন হয় তাদের শেষ পরিণতি? আর যেসব সন্তান জীবনভর বাবা-মা’কে আগলে রাখেন, ভালোবাসেন; সন্তান হিসেবে তাদের হক আদায়ের প্রতি থাকেন যত্নশীল—সেসব সৌভাগ্যবান সন্তানের শুভ পরিণতির গল্পগুলোই বা কেমন? এমন আনন্দ-বেদনার গল্পের সমাহার নিয়ে রচিত ‘মা, মা, মা এবং বাবা’ সিরিজ।