ভূমিকা মহাকাশটা বড় বিচিত্র। বিস্ময়কর! চির পরিচিত তবে প্রায় পুরোটাই অজানা। প্রতিদিন দেখছি কিন্তু জানছি না কত সব অদ্ভুত ব্যাপার ঘটছে প্রতি মুহূর্তে। যতটুকু জানা যাচ্ছে তা হতবাক করে দিচ্ছে আমাদের।কৌতূহলী সৃষ্টি নিয়ে তা বিশ্লেষণে ব্রত রয়েছেন গবেষকরা।
এই তো ২০০৬ -এ এক সুপারনোভা বা দানবীয় বিস্ফোরণ ধরা পড়ল নাসার টেলিস্কোপে। খুব দূরে। সেখান থেকে আমাদের কাছে আলো আসছে সময় লাগে ২৪০ মিলিয়ন বছর। যে গ্যালাক্সিতে এ সুপারনোভার অবস্থান, বিস্ফোরণে তা পুরোটা আলোকিত হয়ে উঠেছিল। এর চেয়েও বড় সুপারনোভা বিস্ফোরণ ঘটবে নাকি আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে। ঠিক কখন তা জানা নেই কারো। তবে দিনে এর উজ্জলতা পরিষ্কারভাবে দেখা যাবে পৃথিবী থেকে আর রাতে এর আলোতে বই পড়তে পারব আমরা। জ্যোতির্বিদরা বলছেন যে , এ বিস্ফোরণ হবে মানব সভ্যতার ইতিহাসে নক্ষত্রের সবচেয়ে বড় নাটকীয় ঘটনা। আরো কত সব অদ্ভুত ঘটনা ঘটছে! মহাবিশ্বের সবকিছু একে অন্যের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। ফুলে ফেঁপে উঠছে মহাবিশ্ব। আয়তন বাড়ছে। গ্যালাক্সিগুলো একে অন্যের কাছ থেকে এত বেশি বেগে দূরে সরে যাচ্ছে যে খালি চোখে বা টেলিস্কোপের চোখ দিয়ে আজকে আমরা যেসব গ্যালাক্সি দেখতে পাচ্ছি ভবিষ্যতে একসময় এগুলো আর দেখতে পাব না। মাধ্যাকর্ষণের টানে গ্যালাক্সিরা কখনো কখনো আবার সংঘর্ষেও লিপ্ত হচ্ছে, সৃষ্টি করছে নতুন আকারের গ্যালাক্সি। আমাদের মিল্কিওয়ে এবং পাশের গ্যালাক্সি এন্ড্রোমিডার সংঘর্ষের ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন বিজ্ঞানীরা। এরা একে অন্যের দিকে এগোচ্ছে। সংঘর্ষের নিজেদের পেঁচানো আকার হারিয়ে এরা পরিণত হবে এক বিশাল উপবৃত্তাকার গ্যালাক্সিতে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বড় গ্যালাক্সি ছোট ছোট গ্যালাক্সিকে গিলে খাচ্ছে। ক্যানিবালিসম!
পরিশেষে কী হবে আমাদের এই মহাবিশ্বের। সে কি অনন্তকাল ধরেই আকারে বাড়তে থাকবে, না থেমে যাবে? না আবার পিছনের দিকে ছুটে আয়তনে কমা শুরু করবে, কমতে কমতে এক বিন্দুতে মিলিত হবে? এসব কিছুই রহস্য! মহা রহস্য! মহাকাশের এসব রহস্যের খবর জানতে কার না ভালো লাগে? এসব রহস্য নিয়েই এই বই।
সূচিপত্র * মহাবিস্ময়ের মহাকাশ * বিগব্যাং ও মহাকাশের ছুটে চলা * গ্যালাক্সি রাজ্য * নক্ষত্র জীবন-জন্ম-মৃত্যু * সুপারনোভা-মহাকাশে দানবীয় বিস্ফোরণ * সর্বগ্রাসী ব্লাক হোল * সূর্যের যত রহস্য * অশুভ বার্ত নিয়ে ধেয়ে আসা ধূমকেতু! * পৃথিবীর মতো আরো পৃথিবী! * মহাকাশে হাঙ্গামা! * মহাকাশের পরিণতি
ড. এম হাসান শহীদ কুইনমেরি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন, ইউকে-এর রােবটিক্স বিষয়ের লেকচারার।। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে রােবটের হাত নিয়ন্ত্রণের উপর গবেষণা করে তিনি শেফিল্ড ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। বরিশাল ক্যাডেট কলেজ থেকে এসএসসি এবং এইচএসসি উভয় পরীক্ষায় তিনি যশাের বাের্ডের সম্মিলিত মেধা তালিকায় ৩য় স্থান দখল করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এপ্লাইড ফিজিক্স অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ডিপার্টমেন্ট থেকে অনার্স এবং মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। উভয় ক্ষেত্রে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং ডিপার্টমেন্টের লেকচারার হিসাবে যােগ দেন। পরবর্তীতে কমনওয়েলথ স্কলারশিপ নিয়ে পিএইচডি গবেষণার জন্যে ইউকে যান। ছাত্রজীবন থেকে দেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তিনি বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখি করে আসছেন। লেখালেখির জন্য তিনি ইউএনএফপিএ থেকে দুবার, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন থেকে এবং কমিটমেন্ট (এনজিও) থেকে একবার করে পুরস্কৃত হয়েছেন।