"সাইন্স ফিকশন সমগ্র-১" বইয়ের পিছনের কভারের লেখা: ভিনগ্রহের পিশাচ কিশাের বন্ধুরা, শােনাে, পৃথিবী আক্রান্ত। ভিনগ্রহ থেকে আসা পিশাচ ভারেকদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছি আমরা। অস্ত্র আমাদের একটাই, নীল কিউব’। এই জিথারিয়ান টেকনােলজি ব্যবহার করে যে কোনাে প্রাণীতে রূপান্তরিত হতে পারি আমরা। ভারেকদের আক্রমণ থেকে তােমরাও নিরাপদ নও ! যে কোনাে মুহূর্তে তােমাদের মগজেও ঢুকে পড়তে পারে ওরা, দখল করে নিতে পারে দেহটা। বাঁচতে চাইলে যােগ দাও আমাদের দলে। নীল যােদ্ধা অবশেষে ভারেক ডােবার নতুন প্রবেশ পথ খুঁজে বের করল ‘নীল’ যােদ্ধারা।মানুষ হয়ে ঢােকা সম্ভব না ওখানে, তেলাপােকায় রূপান্তরিত হতে হবে। কিন্তু দশ ফুট লম্বা শতাব্দী টোটেমরা যে ওদের খাওয়ার জন্যে বসে আছে ওখানে, কে জানত! হঠাৎ করেই থেমে গেল সময়। টোটেম, ভাগাে, টুয়াটারা সবাই স্তব্ধ, অনড়। ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্নের মধ্যে রয়েছে যেন ‘নীল’-এর ছয় সদস্য নিমাে, তিয়াপা, জামবু, সিসি, জিউস ও টিটুন। বাঁচাতে পারে শুধু মহাক্ষমতাধর ইয়ন, কিন্তু বিনিময়ে যা চেয়ে বসল সে, সেটা পূরণ করাও অসম্ভব। ভারেকের থাবা ভিন্ন কোন আজব গ্রহে যদি দলছুট হয়ে একাকী নেমে পড়তে বাধ্য হও তুমি, কেমন লাগবে ? পাগল হয়ে যাবে না ? কিন্তু মাথা ঠাণ্ডা রাখল জিথারিয়ান স্পেসফাইটার কিশাের টিটুন। ডােম শিপ ধ্বংস করে দিয়েছে। ভারেকরা, ওর ভাই প্রিন্স ফুকটুনকে খুন করেছে ভিকুন থ্রী। এক অসম্ভবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াল টিটুন। পাশে এসে দাঁড়াল নিমাে, তিয়াপা, জামবু, সিসি। ও আজব মানুষপাখি জিউস। ভারেকদের ঠেকাতে না পারলে পৃথিবী টিকবে। , কিংবা টিকলেও স্বাভাবিক মানুষ থাকবে না আর কেউ !
রকিব হাসান বাংলাদেশের সবচাইতে জনপ্রিয় ‘তিন গোয়েন্দা’ সিরিজের স্রষ্টা ও কিশোর-কিশোরীদের সেরা পছন্দের লেখকদের শীর্ষ তালিকার একজন। তাঁর মাধ্যমেই বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরীরা গোয়েন্দা কাহিনি ও তিন গোয়েন্দা সিরিজের সাথে পরিচিত হতে থাকে। শুধু তাই নয়, তিনি বহু ক্লাসিক ও কিশোর রোমহর্ষক সিরিজের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক। লেখালেখির দীর্ঘ ৫০ বছরে চারটি প্রজন্ম অতিবাহিত হলেও আজও তাঁর জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বি। মূলত তিনি নিজেকে আড়ালে রাখতে পছন্দ করেন বিধায় মিডিয়ায় তাঁর উপস্থিতি নেই বললেই চলে। তবুও প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে দেশ বিদেশে তাঁর লক্ষ লক্ষ পাঠকশ্রেণি রয়েছে। যাদের ছেলে-মেয়ে-নাতি-নাতনী এবং পরবর্তী প্রজন্মের কিশোর-কিশোরীদের কাছেও রকিব হাসান অত্যন্ত জনপ্রিয় লেখক। বর্তমান প্রজন্মের পাঠক-ভক্তদের কাছেও ‘তিন গোয়েন্দা সিরিজটি’ এবং ‘কিশোর, মুসা, রবিন’ চরিত্রটি অসম্ভব জনপ্রিয়। দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ও কিশোর-কিশোরীসের সেরা পছন্দের এই গুণী লেখকের জন্ম কুমিল্লায়, ১৯৫০ সালে। মূলত এক সময়ে পাঠকের হাতে স্বল্পমূল্যে বই তুলে দিতে এবং নিত্য নতুন পাঠক সৃষ্টি করতে ‘পেপারব্যাক সংস্করণে’ প্রকাশিত স্বনামে-বেনামে তাঁর লেখা বহু বই তিন দশক ধরে বেস্টসেলার ও জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিল। আজও তাঁর প্রকাশিত বইগুলো সমান জনপ্রিয়তার শীর্ষে। সকল কিছুকে ছাপিয়ে তাঁর ‘তিন গোয়েন্দা সিরিজটি’ এবং ‘কিশোর, মুসা, রবিন’ চরিত্র কালজয়ী জনপ্রিয়তা লাভ করতে সক্ষম হয়েছে। স্বনামে-বেনামে ও ছদ্মনামে এই তিন ক্যাটাগরিতেই তাঁর জনপ্রিয়তায় কোন ছেদ পড়েনি। তিনি সকল ধরনের মিডিয়া ও প্রচার প্রচারণাকে এড়িয়ে চলতে পছন্দ করতেন বলে অত্যন্ত জনপ্রিয় এই লেখকের ফেসটি তেমন পরিচিত নয়। কিন্তু আমরা বাস্তবতায় দেখেছি যে, যখন কোন পাঠক একটু জানতে পেরেছেন যে, রকিব হাসান বইমেলায় অমুক প্রকাশনীতে আছেন, তখন একে একে নিমিষেই প্রচÐ ভীড়ের সৃষ্টি হতো। এমনকি পাঠকের ভীড়ে তাঁকে খুঁজে পাওয়া দায় হয়ে যেতো। এই গুণী লেখকের প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা বর্তমানে প্রায় পাঁচ শতাধিক। তাঁর লেখা প্রথম বই প্রকাশিত হয় ১৯৭৭ সালে, ছদ্মনামে। স্বনামে প্রথম প্রকাশিত বইটি ছিল অনুবাদগ্রন্থ, ব্রাম স্টোকারের ‘ড্রাকুলা’। এরপর অনুবাদ করেছেন জুল ভার্ন, জিম করবেট, কেনেথ অ্যান্ডারসন, মার্ক টোয়েন, রবার্ট লুই স্টিভেনসন, হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড, ফ্রেড জিপসন, রেনে জুঁইঅ, এরিক ফন দানিকেন, ফার্লে মোয়াট, জেরাল্ড ডুরেল-এর মত বিখ্যাত লেখকদের অনেক ক্লাসিক বই। অনুবাদ করেছেন মহাক্লাসিক ‘অ্যারাবিয়ান নাইটস’ ও এডগার রাইস বারোজ- এর ‘টারজান’ সিরিজ। তাঁর লেখা সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়েছে ছোটদের নিয়ে রচিত ‘তিন গোয়েন্দা’ সিরিজটি। এই সিরিজের তিনটি মূল চরিত্র ‘কিশোর-মুসা-রবিন’কে নিয়ে লিখেছেন আরও তিনটি সিরিজ ‘তিন বন্ধু’, ‘তিন কিশোর গোয়েন্দা’ ও ‘গোয়েন্দা কিশোর মুসা রবিন’। লিখেছেন ‘কিশোর গোয়েন্দা’ সিরিজ ‘খুদে গোয়েন্দা’ সিরিজ, জাফর চৌধুরী ছদ্মনামে ‘রোমহর্ষক’ সিরিজ এবং আবু সাঈদ ছদ্মনামে ‘গোয়েন্দা রাজু’ সিরিজ। এ ছাড়া কিশোরদের জন্য বেশ কিছু ভূতের বই ও সাইন্স ফিকশনও লিখেছেন তিনি। তাঁর লেখা কিশোর-কিশোরীদের দারুণভাবে আকৃষ্ট করে এবং সেরা বিনোদন যোগায়। আমরা এই গুণী ও অত্যন্ত জনপ্রিয় লেখকের সুস্থ জীবন ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। মহান আল্লাহপাক আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করুন। আমীন।