লেখক পেশাগত জীবনে শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে দীর্ঘ এক বছর আফ্রিকার কন্গো (ডিআরসি) তে অবস্থান করেন। সেই দীর্ঘ সময়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সেখানকার সমাজ জীবনের সাধারন মানুষের সুখ দুঃখের পাশাপাশি নিজস্ব ব্যক্তিগত অনুভূতিকে চেষ্টা করেছেন একজন ভিনদেশী হিসেবে এই বইয়ের স্বল্প পরিসরের ক্যানভাসে একেকটি অধ্যায়ে ছোট ছোট কিছু ঘটনার মাধ্যমে তুলে ধরার। প্রতিটি অধ্যায়ের মূল ঘটনার সাথে সেখানকার সমাজ, সভ্যতা আর সাধারন মানুষের হাসিকান্না আর না বলা বেদনাকে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। একজন সাধারন মানুষের জীবনে ঘটে যাওয়া আনন্দ আর বেদনার ছোট ছোট ঘটনাগুলো গল্পের মত এই বইয়ের প্রতিটি অধ্যায়ে ছড়িয়ে আছে। এই বই পাঠককে নিয়ে যাবে সেই গহীন অরন্যবেষ্টিত কন্গোর বিপদসংকুল এক পরিবেশে। যেখানে একদিকে আছে অরন্যর অসাধারন সৌন্দর্যের হাতছানি অন্যদিকে ভয়›‹র গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত জনপদের হাহাকার আর বেদনার দীর্ঘশ্বাস। কন্গোর কালোমানুষগুলোকে আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় অসভ্য বর্বর কিন্ত তাদের মাঝেও আছে হৃদয়ের অনেক অব্যক্ত যন্ত্রনা, আছে অনেক না বলা কথা। কৌশলে তাদের কে শেখানো হয়েছে বর্বরতা আর হাতে তুলে দেয়া হয়েছে মদ আর অস্ত্র অথচ তাদের হৃদয়েও আছে শিশুর সারল্যতা। আফ্রিকার গহীন অরন্যে মাথা উচুঁ করে শতবছর ধরে দাড়িয়ে থাকা মুল্যবান ব্ল্যাকউডস গাছের মত সেই কালো মানুষদের হৃদয়গুলো যেন একেকটি মহামুল্যবান ব্ল্যাক উডস। সেই কালো ব্ল্যাকউডসের হৃদয়ে প্রতিনিয়ত নিঃসরিত হচ্ছে লাল শোণিত ধারা। এ যেন যুগ যুগ ধরে বয়ে বেড়ানো অব্যক্ত বঞ্চনার নিঃশব্দ এক প্রতিচ্ছবি।