"ধ্যান নিরন্তর" বইটির সূচিপত্র: মানুষ তার দৈনন্দিন সংকট থেকে মুক্তির জন্য নানা ধরনের ধ্যানের উদ্ভাবন করেছে। মানুষের বিভিন্ন আশা, প্রত্যাশা ও ইচ্ছা পূরণের আন্তরিক আকাঙ্ক্ষা এর ভিত্তি। সংকট উত্তরণ একটি সংগ্রাম। যা শারীরিক এবং মানসিক উভয় ক্ষেত্রেই জড়িত। এই সচেতন ও বিচক্ষণ উদ্যমটির সফলতা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তার স্বাভাবিক মানসিক সীমাবদ্ধতার কারণে ব্যাহত হয়। প্রয়ােজনীয় প্রস্তুতির অভাবে এখানে তার তেমন স্বাধীনতাও থাকে না। ধ্যানের এ ধরনের সমস্ত চেষ্টাই প্রকৃতপক্ষে ধ্যানকে অস্বীকার করা। ধ্যান সমস্ত চিন্তার সমাপ্তি। একটি অন্তহীন তন্ময়তা। সম্পূর্ণ আলাদা একটি মাত্রা। পার্থিব সময় পেরিয়ে যার অবস্থান। যেখানে নিজের সত্তাকে নিতে পারলে এর বাস্তবায়ন সম্ভব। ধ্যান হল জীবনের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চারুকলা। সম্ভবত বৃহত্তম। একজন হয়তাে এটা আরেকজনের কাছে শিখতে পারে না। এটিই ধ্যানের নান্দনিক দিক। এটা কোনাে প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত নয়, সুতরাং এর কোনাে নিয়ন্ত্রকও নেই। যদি আপনি নিজের সম্বন্ধে জানার প্রয়াস নেন, নিজেকে পর্যবেক্ষণ করেন তাহলে জীবনে চলার পথে সতর্ক থাকবেন। আপনার বাচনভঙ্গি, আপনার আলাপচারিতা, অন্যকে ঘৃণা করা বা আপনার অহমিকা সবই থাকতে হবে আপনার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। কোনােরকম পছন্দ ছাড়াই এ সমস্ত ভাবভঙ্গি যদি সবই আপনার জানা থাকে, তা হবে সার্থক ধ্যানের অঙ্গ। | সুতরাং আপনি যখন কোনাে বাসে বসে আছেন বা কোনাে বনজঙ্গলের পরিপূর্ণ আলােছায়ায় দীর্ঘক্ষণ হাঁটছেন, তখনও ধ্যান করা সম্ভব। পাখির কলতানের মধ্যে বা স্ত্রী-কন্যার মুখের দিকে তাকিয়েও আপনি ধ্যানমগ্ন হতে পারেন। মূলত ধ্যান কি, এর উদ্দেশ্য কি এবং আমাদের জীবনে এর প্রয়োজনীয়তা কি সেই সম্পর্কেই বিস্তারিত বলা হয়েছে বইটিতে। পাঠক অবশ্যই বইটি থেকে আরো ভালোভাবে এ বিষয়ে জানতে পারবেন বলে আশা রাখি।