ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা হতাশাগ্রস্থ বিজ্ঞান নামে অভিহিত অর্থনীতি ছিল একদিন সমাজবিজ্ঞানের দুয়োরানি।অথচ অর্থনীতিই আজকের সমাজবিজ্ঞানের সম্রাজ্ঞী। এর আওতা শুধু চাহিদা-জোগান বা রুটি-রোজগারেরর মতো আটপৌরে সমস্যায় সীমিত নয়। অর্থনৈতিক পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে রাষ্ট্রবিজ্ঞান, আইনশাস্ত্র, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, ইতিহাস, সংগঠন ও সিদ্ধান্ত তত্ত্বে এবং সমাজতত্ত্বের সব শাখায়। জন্ম, বিবাহ, ধর্ম, এমনকি ভাষা নিয়ে গবেষণায়ও প্রয়োগ করা হচ্ছে অর্থনীতির সূত্র।দুর্ভাগ্যবশত অর্থনীতির বিকাশমান মাত্রা ও নতুন ধারাসমূহের বৈভন এখনো বাংলা ভাষায় প্রতিফলিত হয়নি। বাংলায় অর্থনীতি এখনো মান্ধাতা আমলের পাঠ্যবিষয় ও বাম-ডানির তরজায় সীমাবদ্ধ।গতানুগতিক গণ্ডির বাইরের কিছু অর্থনৈতিক তত্ত্বের সঙ্গে বাঙালি পাঠকদের পরিচয় করিয়ে দেবে এ বই।প্রবন্ধগুলোর বিষয়বস্তু বিচিত্র ও কৌতূহলোদ্দীপক।একটি প্রবন্ধের শিরোনাম ‘ভেগোলজি ও অর্থনীতি।’ দুটি প্রবন্ধে অর্থনীতিতে অনভিপ্রেত পরিণাম ও মিত্রপক্ষের গুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে।দটি প্রবন্ধের উপজীব্য বিশ্বায়ন। সুখ ও অর্থনীতির সম্পর্ক নিয়ে পর্যালোচনা দেখা যাবে একটি নিবন্ধে।তথ্য অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে ‘সুকতলার অর্থনীতি ও জুতার রাজনীতি’তে। একটি প্রবন্ধে জন্মদিনের অর্থনীতি ও আরেকটি প্রবন্ধে সরকারের অপচয় নিয়ে বিশ্লেষণ রয়েছে। নির্ভেজার গবেষণামূলক এই বই লেখা হয়েছে সহজ ভাষায়, বৈঠকি মেজাজে।
সূচিপত্র * ‘আজব’ ও ‘জবর-আজব’ অর্থনীতি * মিত্রপক্ষের গুলি : অনভিপ্রেত পরিণামের অর্থনীতি * সুখের লাগিয়া : সুখ ও অর্থনীতি * ভেগোলজি ও অর্থনীতি : ‘না মিথ্যা না সত্য’ * সুকতলার অর্থনীতি ও জুতার রাজনীতি : অর্থনীতি ও রাজনীতিতে তথ্যের ভূমিকা * শুভ জন্মদিন : জন্মদিনের অর্থনীতি ও রাজনীতি * সরকারের অপচয় : রাজনৈতিক অর্থনীতি * বিশ্বায়ন : একটি সমীক্ষা ও কয়েকটি অমীমাংসিত প্রশ্ন * বিশ্বায়ন ও বাঙালির সত্তার অন্বেষা : একদিন বাঙালি ছিলাম রে * বাংলাদেশে সিভিল সমাজ : বাস্তবতার সন্ধানে একটি ধারণা * নির্ঘন্ট
‘৭১ পূর্ববর্তী সময়ে তিনি সর্বদাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন, ছিলেন বঙ্গবন্ধুর অসহযোগের সমর্থক। ২৫ মার্চের কালরাতের পর যখন অস্থায়ী সরকার গঠিত হয়নি, তখনই নিজ এলাকা হবিগঞ্জে পুলিশের অস্ত্র সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে যুদ্ধ করতে অনুপ্রাণিত করেন তিনি, নিজ হাতে তৈরি করেন অস্ত্র উন্মুক্তকরণের সরকারি লিখিত অনুমতি। অস্থায়ী সরকারের জন্য তহবিল গড়তে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তিন কোটি টাকা ট্রাকে করে আগরতলা পৌঁছে দেন। বাঙালির চেতনা ও অহংকারের মুক্তিযুদ্ধে অসম সাহসিকতার সাথে কর্তব্য পালন করা এই মানুষটির নাম আকবর আলি খান। আকবর আলি খানের জন্ম ১৯৪৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে। নিজ গ্রামেই স্কুলজীবন শেষ করে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে চাকরিজীবনে প্রবেশ করেন। মাঝে এক বছরের জন্য লাহোরের সিভিল সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর এস.ডি.ও হিসেবে তার কর্মস্থল হয় হবিগঞ্জে। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সহ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ সরকারী কর্মকমিশন সচিবালয়ে কাজ করেন। মাঝে কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স এবং পি.এইচ.ডি করে আসেন। আকবর আলি খান এর বই সমূহ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও ঐতিহাসিক উত্থান নিয়ে প্রামাণ্য দলিল। এছাড়াও, আকবর আলি খানের বই বাংলাদেশের সামাজিক পরিবর্তন এবং এদেশে ইসলামের বিকাশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণালব্ধ দলিল। এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে প্রকাশিত তার বই ‘হিস্ট্রি অব বাংলাদেশ’ তার সেরা রচনা। আকবর আলি খান এর বই সমগ্রতে আরো আছে ‘পরার্থপরতার অর্থনীতি’, ‘বাংলায় ইসলাম প্রচারে সাফল্য’, ‘বাংলাদেশের সত্তার অন্বেষা’, ‘ডিসকভারি অব বাংলাদেশ’ ইত্যাদি বই।