রহমান আরশের উপর উঠেছেন image

রহমান আরশের উপর উঠেছেন (হার্ডকভার)

by ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া

TK. 720 Total: TK. 540

(You Saved TK. 180)
  • Look inside image 1
  • Look inside image 2
  • Look inside image 3
  • Look inside image 4
  • Look inside image 5
  • Look inside image 6
  • Look inside image 7
  • Look inside image 8
  • Look inside image 9
  • Look inside image 10
  • Look inside image 11
  • Look inside image 12
রহমান আরশের উপর উঠেছেন

রহমান আরশের উপর উঠেছেন (হার্ডকভার)

কুরআন, সুন্নাহ, সালাফে সালেহীন ও ইমামগণের ভাষ্যের আলোকে আল্লাহ্‌র ‘আরশের উপর উঠা, সবকিছুর উপরে থাকা, সাথে থাকা ও নিকটে থাকার সিফাত তথা গুণ বিষয়ে বিশুদ্ধ আক্বীদাহ্

26 Ratings  |  15 Reviews
wished customer count icon

108 users want this

TK. 720 TK. 540 You Save TK. 180 (25%)

বর্তমানে প্রকাশনীতে এই বইটির মুদ্রিত কপি নেই। বইটি প্রকাশনীতে এভেইলেবল হলে এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে নোটিফিকেশন পেতে রিকুয়েস্ট ফর রিপ্রিন্ট এ ক্লিক করুন।

Book Length

book-length-icon

551 Pages

Edition

editon-icon

2nd Edition

ISBN

isbn-icon

9789843483607

book-icon

বই হাতে পেয়ে মূল্য পরিশোধের সুযোগ

mponey-icon

৭ দিনের মধ্যে পরিবর্তনের সুযোগ

Customers Also Bought

Product Specification & Summary

আল্লাহর প্রশংসা করছি, যিনি তাঁর ‘আরশকে সপ্তম আসমানের উপরে উঠিয়েছেন, তাঁর সৎ বান্দাদের অন্তরকে সেটা বিশ্বাস করার জন্য উপযোগী করে দিয়েছেন। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি ব্যতীত আর কোনো সত্য ইলাহ নেই, তিনি তাঁর ‘আরশের উপরে উঠেছেন এবং সেখানেই আছেন। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর রাসূল, ‘আরশের উপর থেকে তিনি তাঁর নবীকে ডেকে নিয়েছেন এবং তাঁর কাছে সেখান থেকে অহী প্রেরণ করেছেন।
আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে যেসব বড় বড় নি‘আমত প্রদান করেছেন তন্মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, তিনি আমাদের জন্য তাঁর দীনকে পূর্ণ করে দিয়েছেন, আকীদাহকে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, শরী‘আতকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। দীনের মধ্যে যা কিছুর প্রয়োজন আমাদের হবে, সেসবই তিনি নিজে বর্ণনা করেছেন, রাসূলের যবানীতে ব্যাখ্যা করে জানিয়েছেন।
কোনো সন্দেহ নেই যে, সবচেয়ে বড় ও মর্যাদাপূর্ণ জ্ঞান হচ্ছে আকীদাহ বিষয়ক জ্ঞান। আর আকীদাহ বিষয়ক জ্ঞান বলতে সে জ্ঞানকে বুঝায়, যা আল্লাহ তা‘আলার সাথে সম্পৃক্ত। আল্লাহ তা‘আলা সংক্রান্ত জ্ঞানই হচ্ছে তাওহীদের জ্ঞান। তাওহীদ মানেই হচ্ছে, আল্লাহর সত্তা, নাম, গুণ, কর্ম ও অধিকার সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ। তন্মধ্যে প্রথমেই আসে আল্লাহ তা‘আলার সত্তা, নাম ও গুণ সম্পর্কে জানা। ‘আল্লাহর ‘আরশের উপর উঠা’ এ আকীদাহটি এ তিনটি অংশের সাথেই ওৎপ্রোতভাবে জড়িত। আল্লাহর সত্তা, নাম ও গুণ সম্পর্কে জ্ঞান থাকলেই আকীদাহ’র বাকী বিষয়গুলো জানা সহজ হয়, নতুবা অন্ধকারে হাতড়ে বেড়ানোর মতো অবস্থা হয়। এখানে কয়েকটি নিরেট সত্য কথা আমাদের জানা থাকতে হবে:
১- সহীহ আকীদাহ’র বিষয়টি কুরআন ও সু্ন্নায় বিস্তারিত এসেছে। আকীদাহ’র কোনো বিষয়, বিশেষ করে আল্লাহ তা‘আলার সত্তা, নাম ও গুণ এমন নয় যা কুরআন ও সুন্নায় বর্ণিত হয়নি।
২- সহীহ আকীদাহ’র বিষয়গুলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন, তিনি আমাদেরকে সাধারণ ফিকহী জিনিস বিস্তারিত বলেছেন, আর আকীদাহ’র মৌলিক আল্লাহ তা‘আলার নাম ও গুণের বিষয়ে বলেননি, এমনটি হতে পারে না। বরং তিনি আকীদাহ’র বিষয়গুলো বর্ণনার জন্য জীবনের বেশিরভাগ সময় ব্যয় করেছেন। একটি উদাহরণ দিতে পারি, কীভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈমান ও তাওহীদের মাপকাঠি হিসেবে আল্লাহ তা‘আলা উপরের দিকে থাকাকে নির্ধারণ করেছেন। যেখানে দাসীর ঈমান পরীক্ষা করেছেন আসমানের উপরে ‘আরশে থাকার বিষয়টি তার কাছ থাকার মাধ্যমে। ইমাম যাহাবী বলেন, ‘দাসীকে মুক্ত করার হাদীস থেকে দু’টি জিনিস জানা যায়: এক. মুসলিমের জন্য এটা প্রশ্ন করা শরী‘আতসম্মত যে, আল্লাহ কোথায়? দুই. যাকে প্রশ্ন করা হয়েছে তার জন্য উত্তর দেয়া বৈধ যে, আসমানের উপরে।’
৩- সাহাবায়ে কেরাম রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুম আকীদাহ’র বিষয়গুলো বিস্তারিত বুঝতেন। তারা আল্লাহর নাম ও গুণকে ভালোভাবেই জানতেন। সেজন্যই আমরা দেখতে পাই যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে জানিয়েছেন, সিফাতকে ভালোবাসা আল্লাহ তা‘আলার ভালোবাসা পাওয়ার মাধ্যম ও জান্নাতে যাওয়ার কারণ; হাদীসে এসেছে, ‘আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সাহাবীকে কোনো এক অভিযানের জন্য আমীর করে পাঠালেন, তিনি সালাতে তার সাথীগণকে নিয়ে কুরআন পড়তেন। কিন্তু তিনি কিরাতের সমাপ্তি টানতেন সূরা ‘কুল হুয়াল্লাহু আহাদ’ দিয়ে। অতঃপর তারা যখন অভিযান থেকে ফিরে আসলেন তখন সাহাবীগণ সেটা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানালেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে জিজ্ঞেস করো কেন সে উক্ত কাজটি করত? তখন তারা তাকে জিজ্ঞেস করলে সে বলল, কারণ এটি রহমানের গুণ। আর আমি এটা দিয়ে সালাত পড়তে পছন্দ করি। তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তাকে জানিয়ে দাও যে, আল্লাহও তাকে ভালোবাসেন।”
অপর হাদীসে এসেছে, আনাস ইবন মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, “আনসারগণের এক লোক তাদের নিয়ে মসজিদে কুবাতে ইমামতি করতেন। তিনি যখনই কোনো সূরা দিয়ে সালাত শুরু করতেন, যা দিয়ে সালাত পড়া হয়, তখনই তিনি প্রথমেই ‘কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ সূরা দিয়ে শুরু করতেন তারপর তা শেষ করতেন, তারপর এর সাথে অন্য আরেকটি সূরা পড়তেন। আর তিনি সেটা প্রতি রাকাতেই করতেন। তার সাথীরা এ ব্যাপারে তার সাথে কথা বললে তারা বলল, তুমি এ সূরা (ইখলাস) দিয়ে শুরু কর, তারপর এটা তোমার জন্য যথেষ্ট হবে মনে কর না যতক্ষণ না তুমি তার সাথে অন্য সূরা মিলাচ্ছ, হয় তুমি এটা দিয়েই সালাত পড় নতুবা এটাকে ছেড়ে দাও এবং অন্য কোনো সূরা দিয়ে সালাত পড়। তখন সে বলল, আমি সেটা ছাড়তে পারবো না, যদি তোমরা পছন্দ করো যে, আমি এভাবে তোমাদের সালাতের ইমামতি করব, তাহলে তা করবো, নতুবা আমি তোমাদের ছেড়ে যাব। আর তারা মনে করত সে তাদের মধ্যে উৎকৃষ্ট, আর সে ব্যতীত অন্য কেউ তাদের ইমামতি করবে সেটা তারা অপছন্দ করত। অতঃপর তারা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে তাঁকে বিষয়টি সম্পর্কে সংবাদ দিলে তিনি বললেন, “হে অমুক, তোমার সাথীরা তোমাকে যা করতে বলে তা করতে তোমাকে কিসে নিষেধ করল, আর কিসে তোমাকে প্রতি রাকাতে এ সূরা পড়তে বাধ্য করলো?” সে বলল, আমি এ সূরাটিকে পছন্দ করি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “এ সূরার প্রতি ভালোবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়েছে।”
৪- সাহাবায়ে কেরাম রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুম আকীদাহ’র মিশন নিয়েই দাওয়াতে বের হয়েছিলেন, তারা নিছক ফিকহী মাসআলা নিয়ে বের হননি। তারা যদি আল্লাহ তা‘আলা সম্পর্কে না জানতেন তবে দাওয়াত কিসের দিকে দিলেন? তারা যেখানেই গিয়েছেন সেখানেই সবকিছুর আগে আকীদাহ’র দাওয়াত দিয়েছেন; কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে এ নির্দেশই দিয়েছেন। মু‘আয ইবন জাবাল রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুকে ইয়ামানে পাঠানোর সময়ে যা নির্দেশ দিয়েছিলেন তা এর ওপর প্রমাণবহ।
৫- সাহাবায়ে কেরাম রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুম দর্শনতত্ত্ব জানতেন না, কিন্তু তারা তাওহীদ জানতেন, আকীদাহ জানতেন। আল্লাহর জন্য কী সাব্যস্ত করা যাবে আর কী সাব্যস্ত করা যাবে না তা তারা ভালো করেই জানতেন, আর তারা তা বলেও গেছেন। তারা কেউই কঠিন দর্শনতত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করতেন না। তারা কুরআন ও সুন্নাহ থেকেই তাদের যাবতীয় আকীদাহ গ্রহণ করেছেন এবং সে অনুযায়ী দাওয়াত দিয়েছেন। কুরআন ও সুন্নাহ’র ভাষ্যসমূহ থেকে হিদায়াত নেয়ার ব্যাপারে তাদের মধ্যে কোনো সমস্যা হতো না, হলেও তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করতেন, তারপর তাদের মধ্যকার বিজ্ঞজন থেকে জেনে নিতেন। সে বিজ্ঞজনেরা জগতের সকল মুসলিমের মাথার উপর শিক্ষক হিসেবে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। যতক্ষণ ফিতনা প্রকাশিত না হতো ততক্ষণ সাহাবায়ে কেরাম তা নিয়ে আলোচনা করতেন না। বিস্তারিত আলোচনা না করার অর্থ, কখনো না জানা নয়। তাদের কাছে এগুলো এতই স্পষ্ট ছিল যেমন দিন স্পষ্ট থাকে রাত থেকে। কিন্তু যখনই বিভ্রান্তি দেখা গেছে তখনই তারা এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন, বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। সর্বপ্রথম আকীদাগত ফিতনা ছিল তাকদীর সম্পর্কে, সাহাবায়ে কেরাম এ বিষয়ে আলোচনা করতে সামান্যও কমতি করেননি। এখন কেই যদি বলে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকদীরের মাসআলা বলে যাননি কিংবা সাহাবায়ে কেরাম তাকদীর বুঝতেন না, তাহলে তারা অবশ্যই উম্মতের সর্বাত্তম ব্যক্তিদেরকে মূর্খ সাব্যস্ত করলেন। বস্তুত তারা আকীদাহ যথাযথভাবে বুঝেছেন, সবাই আকীদাতে একমত ছিলেন, অতঃপর যখনই আকীদায় ভিন্ন কিছু প্রকাশ পেয়েছে তখনই তারা সেটার বিরুদ্ধে নিজের সর্বশক্তি নিয়োগ করেছেন।
তেমনিভাবে তাবে‘য়ীগণের যুগ পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলার নাম ও গুণের ব্যাপারে আকীদাহ তার সঠিক পথেই চলছিল। ইতোমধ্যে জা‘দ ইবন দিরহাম ও তার ছাত্র জাহম ইবন সাফওয়ান আল্লাহ তা‘আলার নাম ও গুণের ব্যাপারে তাদের ভ্রান্ত আকীদাহ-বিশ্বাস প্রচার করতে থাকে , তখনই উম্মতের কাণ্ডারী তাবে‘য়ী ও তাবে তাবে‘য়ীগণ তাদের সর্বশক্তি দিয়ে তা প্রতিহত করতে সচেষ্ট হয়। তাদের বিরুদ্ধে উম্মতের সচেতন সবাই তখন কঠোরভাবে পর্বতসম বাধা হয়ে দাঁড়ায়; তারা যেসব ভুল আকীদাহ প্রচার-প্রসারে লিপ্ত ছিল তারা সেগুলোর রদ করতে থাকেন।
৬- বস্তুত তাবে‘য়ীগণ সাহাবীগণের পদাঙ্কে চলে দুনিয়া থেকে চলে গেছেন, আকীদাহ বিষয়ে তারা তাদের বক্তব্য বলে গেছেন। তারা বারবার জাহমী আকীদাহ ও তাদের পরবর্তী মু‘তাযিলাদের আকীদাহ’র বিরোধিতায় গ্রন্থ রচনা করেছেন, উম্মতকে সাবধান করে গেছেন। তারপরও দেখা যায় জাহমিয়্যাহ ও মু‘তাযিলাদের অনুসারীরা ভিন্ন মত ও পথে উম্মতের বিশুদ্ধ আকীদাহ-বিশ্বাসে সমস্যা তৈরি করে। তারা কুরআন ও হাদীসের জায়গায় কখনও বিবেকের যুক্তিকে আবার কখনও কখনও তথাকথিত দর্শনশাস্ত্রের নতুন মোড়কে মুসলিমদের মাঝে উপস্থাপন করে। তখন উম্মতের আলেমগণ সহীহ আকীদাহ’র ধারক-বাহকগণ গ্রন্থ রচনা করে লোকদেরকে তা থেকে সাবধান করে।
৭- এরপর আসে তাবে তাবে‘য়ীগণ, তাদের সময় বাতিলের জয়-জয়কার শুরু হয়ে যায়। তখন ছিল হিদায়াতের ইমামগণের যুগ। ফিকহের ইমাম প্রত্যেকেই তাদের ভূমিকা সেখানে রাখেন। তবে সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখেন হাদীসের ইমামগণ। তারা এ বিষয়ে এতোই সাবধান থাকেন যে, আকীদাহ-বিশ্বাসে ত্রুটি আছে এমন কারও কাছ থেকে তারা হাদীস গ্রহণ করতেন না। তারা তখন হাদীসের গ্রন্থে বা তার বাইরে, সুন্নাহ, তাওহীদ, আকীদাহ, ঈমান ইত্যাদি বিভিন্ন নামে সহীহ আকীদাহ তুলে ধরেন। এখন কেউ যদি বলে যে, সাহাবী ও তাবে‘য়ীগণ এসব আকীদাহ জানতেন না তাহলে অবশ্যই তিনি উম্মতের প্রথম সারির জ্ঞানীদের মূর্খ মনে করছেন। এর জন্য তিনি নিজেই দায়ী, সোনালী মানুষগুলোর চেষ্টা-প্রচেষ্টার মূল্যায়ণ সামান্যও কম হবে না।
৮- পরবর্তীকালের আলেম, মুহাদ্দিস, মুফাসসির সর্বদা মানুষদেরকে সহীহ আকীদাহ’র দিকে আহ্বান জানিয়েছেন। তারা সালফে সালেহীনের আকীদাহ তুলে ধরার পাশাপাশি ভ্রান্ত আকীদাহ’র উৎস সম্পর্কেও সাবধান করেছেন। কিন্তু এ সময় সবচেয়ে বড় সমস্যা হয় উম্মতের মধ্যে কালামশাস্ত্র নামে একটি বিভ্রান্ত মানহাযের ব্যাপক বিস্তৃতি। যারা জাহমিয়্যাহ, মু‘তাযিলাদের রেখে যাওয়া আকীদাহ-বিশ্বাসের নীতির ওপর তাদের প্রাসাদ নির্মাণ করে। আকীদাহ’র ক্ষেত্রে কুরআন ও সুন্নাহ’র কথা বাদ দিয়ে বিবেকের যুক্তিকে শুদ্ধাশুদ্ধ বিচারের ভার প্রদান করে, ফলে তারা আল্লাহর নাম, গুণ ও কর্মের ক্ষেত্রে যাবতীয় সমস্যা তৈরি করে রেখে যায়। তারাই পরবর্তীতে আশ‘আরী ও মাতুরিদী মতবাদের অনুসারীর নামে খ্যাত হয়।
৯- হিদায়াতের ইমামগণ সালফে সালেহীনের অনুসরণ করে এসব ভ্রান্ত আকীদাহ’র বিরুদ্ধে কুরআন, সুন্নাহ, সালাফদের ‘আসার’ নিয়ে সেটার বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। মানুষদেরকে সাবধান করে। যেমন, ইমাম দিমইয়াত্বী (মৃত্যু ৭০৫ হিজরী) বলেন, বর্তমান সময়ের অনেকেই মানকূল বা কুরআন ও সুন্নাহ’র ইলম অর্জন বাদ দিয়ে মা‘কূল বা দর্শনবিদ্যা অধ্যয়নে ব্যস্ত রয়েছে। তাই তারা ইলমুল মানতিক পড়ে চলেছে। তারা বিশ্বাস করছে, যে কেউ এ বিদ্যা রপ্ত করবে না সে কথাই বলতে জানে না। হায়, আমার বুঝে আসে না যে, তারা এটা কীভাবে বলতে পারে! ইমাম শাফে‘য়ী ও মালিক রাহিমাহুমাল্লাহ কি তা শিখেছিলেন? নাকি এটি ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ’র পথ আলোকিত করেছিল? এটা কি ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল রাহিমাহুল্লাহ শিখেছিলেন? নাকি ইমাম সাওরী রাহিমাহুল্লাহ সেটা শিক্ষা গ্রহণের জন্য ঝুঁকেছিলেন? তারা তো কেউই এ পথে চলেননি। তুমি কি মনে করছ যে, তাদের তীক্ষ্নতা ও বুদ্ধিমত্তায় সমস্যা ছিল? তারা তো সেটা অর্জন করার জন্য সময় ব্যয় করেননি। কখনও নয়, তাদের বিবেক-বুদ্ধি, তীক্ষ্ন ধীশক্তি এসবই তথাকথিত মানতিক নামক বিদ্যার জেলখানায় আটকে থাকার থেকে অনেক সম্মানিত, সেগুলো বরং আরও বেশি মর্যাদাপূর্ণ যে, সেগুলোকে তথাকথিত মানতিক বিদ্যার অপছায়ায় ফেলে রাখতে হবে।
আল্লাহর শপথ করে বলছি, এ জাতি এমন জিনিসে নিজেদের ডুবিয়ে রেখেছে যা তাদের কোনো উপকার করবে না, তারা এমন বিষয়ের প্রতি মুখাপেক্ষিতা দেখাচ্ছে যা তাদেরকে কখনো অমুখাপেক্ষী করবে না। বরং তাদেরকে বিষধর বিপদে ফেলবে ও সমস্যায় নিপতিত করবে। আর শয়তান তাদেরকে ওয়াদা করছে ও তাদেরকে দূরাশায় নিক্ষেপ করছে। এ বিদ্যার জন্য এটাই কি যথেষ্ট নয় যে, একক কোনো আলেম সেটার দিকে তাকিয়ে দেখবে, কোনো পরিশ্রম ব্যয় না করে কেবল পড়ে দেখবে, সেটার প্রতি কোনো রকম সাহায্যকারী না হয়ে; কারণ এ ইলমের যে ক্ষতি রয়েছে তার সবচেয়ে কমটিই হচ্ছে এই যে, তা মানুষকে অর্থহীন কাজে ব্যপ্ত রাখে এমন জিনিসের মুখাপেক্ষী করে দেয় যা থেকে করুণাময় রাব্বুল আলামীন তাকে অমুখাপেক্ষী করেছেন। অথচ এ লোকগুলো এ বিদ্যাকে করে নিয়েছে স্থায়ী ও প্রশ্নাতীতভাবে মানার বিষয়ের একমাত্র হাতিয়ার। তারা এর মধ্যে প্রচুর ধৌড়-ঝাপ করে, এটা অর্জনের জন্য জীবনের মূল্যবান সময়গুলো ব্যয় করে। মনে হচ্ছে যেন তারা হিদায়াতের প্রতি আহ্বানকারী (মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কথা শুনেনি, যখন কোনো একজন এ ধরনের বিদ্যার ইচ্ছা পোষণ করেছিল, যখন তিনি দেখলেন যে, ‘উমার রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুকে তাওরাতের কিছু অংশ ফলকে লিখে নিয়ে হাযির হয়েছিল, আর তিনি প্রচণ্ড ক্রোধান্বিত হয়েছিলেন এবং এর সংরক্ষণকারী ও বন্দোবস্তকারীকে বলেছিলেন, “যদি মূসা জীবিত থাকতেন তাহলে আমার অনুসরণ ছাড়া তারও গত্যন্তর ছিল না।” সুতরাং সেখানে কোনো ওযরই কাজে আসেনি, অথচ সেটা ছিল এমন কিতাব যা মূসা ‘আলাইহিস সালাম নিয়ে এসেছিলেন আলো হিসেবে। তাহলে সে গ্রন্থ (বিদ্যা) সম্পর্কে কী ধারণা করা যেতে পারে যা প্রণয়ন করেছে শির্কের অন্ধকারের বিচরণকারী হোঁছট খাওয়া ব্যক্তিবর্গ, যাতে তারা মিথ্যা ও অপবাদই শুধু আরোপ করেছে? হায়, আফসোস সেসব বিনষ্ট উদভ্রান্ত বিবেকদের জন্য, যারা দর্শনের পথভ্রষ্ট সমুদ্রে ডুবে আছে।
১০- বস্তুত হিদায়াত পেতে হলে অনুসরণ করতে হবে, কুরআন ও সুন্নাহকে। আর সেটাকে বুঝতে হবে সালফে সালেহীনের নীতির আলোকে। সাহাবায়ে কেরাম থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত যারা একই নীতিতে ছিলেন তাদের নীতির বাইরে যত প্রসিদ্ধ আর গণ্যমান্য লোকই বিচরণ করুন না কেন, সে পথ হিদায়াতের নয়, বিভ্রান্তির। তাই আমাদের কর্তব্য হচ্ছে হিদায়াতের লোকদেরকে চিনে নেয়া, তাদের কথাকে মূল্যায়ন করা।
Title রহমান আরশের উপর উঠেছেন
Author
Publisher
ISBN 9789843483607
Edition 2nd Edition, 2021
Number of Pages 551
Country বাংলাদেশ
Language বাংলা

Similar Category Best Selling Books

Related Products

Sponsored Products Related To This Item

Reviews and Ratings

4.62

26 Ratings and 15 Reviews

sort icon

Product Q/A

Have a question regarding the product? Ask Us

Show more Question(s)
prize book-reading point

Recently Sold Products

Recently Viewed
cash

Cash on delivery

Pay cash at your doorstep

service

Delivery

All over Bangladesh

return

Happy return

7 days return facility

0 Item(s)

Subtotal:

Customers Also Bought

Are you sure to remove this from book shelf?

রহমান আরশের উপর উঠেছেন