প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
TK.
150
TK. 132 (12%)
১০ মে পর্যন্ত ইসলামি বইয়ে থাকছে ৬০% পর্যন্ত ছাড়
বিকাশ পেমেন্টে ১০% ইন্সট্যান্ট ক্যাশব্যাক
"শেষেরকবিতা"বইটির প্রথমের কিছু অংশ:
অমিত-চরিত অমিত রায় ব্যারিস্টার। ইংরেজি ভঁদে রায় পদবী “রয়” ও “রে” রূপান্তর যখন ধারণ করলে তখন তার শ্রী গেল ঘুচে কিন্তু সংখ্যা হল বৃদ্ধি। এই কারণে, নামের অসামান্যতা কামনা করে অমিত এমন একটি বানান বানালে যাতে ইংরেজ বন্ধু ও বন্ধুনীদের মুখে তার উচ্চারণ পঁড়িয়ে গেল – অমিট রায়ে।
অমিতর বাপ ছিলেন দিগবিজয়ী ব্যারিস্টার। যে পরিমাণ টাকা তিনি জমিয়ে গেছেন সেটা অধস্তন তিন পুরুষকে অধঃপাতে দেবার পক্ষে যথেষ্ট। কিন্তু পৈতৃক সম্পত্তির সাংঘাতিক সংঘাতেও অমিত বিনা বিপত্তিতে এ যাত্রা টিকে গেল।
কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বি.এ.’র কোঠায় পা দেবার পূর্বেই অমিত অক্সফোর্ডে ভর্তি হয় ; সেখানে পরীক্ষা দিতে দিতে এবং না দিতে দিতে ওর সাত বছর গেল কেটে। বুদ্ধি বেশি থাকাতে পড়াশুনাে বেশি করে নি, অথচ বিদ্যেতে কমতি আছে বলে ঠাহর হয় না। ওর বাপ ওর কাছ থেকে অসাধারণ কিছু প্রত্যাশা করেন নি। তার ইচ্ছে ছিল, তার একমাত্র ছেলের মনে অক্সফোর্ডের রঙ এমন পাকা করে ধরে যাতে দেশে এসেও ধােপ সয়।
অমিতকে আমি পছন্দ করি। খাসা ছেলে। আমি নবীন লেখক, সংখ্যায় আমার পাঠক স্বল্প, যােগ্যতায় তাদের সকলের সেরা অমিত। আমার লেখার ঠাট-ঠমকটা ওর চোখে খুব লেগেছে। ওর বিশ্বাস, আমাদের দেশের সাহিত্যবাজারে যাদের নাম আছে তাদের স্টাইল নেই। জীবসৃষ্টিতে উট জন্তুটা যেমন, এই লেখকদের রচনাও তেমনি ঘাড়ে-গর্দানে সামনে-পিছনে পিঠে-পেটে বেখাপ, চালটা ঢিলে নড়বড়ে, বাংলা-সাহিত্যের মতাে ন্যাড়া ফ্যাকাশে মরুভূ তার চলন।। সমালােচকদের কাছে সময় থাকতে বলে রাখা ভালাে, মতটা আমার নয়।
অমিত বলে, ফ্যাশানটা হল মুখােশ, স্টাইলটা হল মুখশ্রী। ওর মতে যারা সাহিত্যের ওমরাওদলের, যারা নিজের মন রেখে চলে, স্টাইল তাদেরই। আর যারা আমলা-দলের, দশের মন রাখা যাদের ব্যাবসা, ফ্যাশন তাদেরই। বঙ্কিমি স্টাইল বঙ্কিমের লেখা “বিষবৃক্ষে”, বঙ্কিম তাতে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন ; বঙ্কিমি ফ্যাশান নসিরামের লেখা “মনােমােহনের মােহনবাগানে, নসিরাম তাতে বঙ্কিমকে দিয়েছে মাটি করে। বারােয়ারি তাঁবুর কানাতের নীচে ব্যাবসাদার নাচওয়ালির দর্শন মেলে, কিন্তু শুভদৃষ্টিকালে বধূর মুখ দেখবার বেলায় বেনারসি ওড়নার ঘােমটা চাই। কানাত হল ফ্যাশানের, আর বেনারসি হল স্টাইলের, বিশেষের মুখ বিশেষ রঙের ছায়ায় দেখবার জন্যে। অমিত বলে, হাটের লােকের পায়ে-চলা রাস্তার বাইরে আমাদের পা সরতে ভরসা পায় না বলেই আমাদের দেশে স্টাইলের এত অনাদর। দক্ষযজ্ঞের গল্পে এই কথাটির পৌরাণিক ব্যাখ্যা মেলে। ইন্দ্র চন্দ্র বরুণ একেবারে স্বর্গের ফ্যাশনদুরস্ত দেবতা, যাজ্ঞিকমহলে তাদের নিমন্ত্রণও জুটত। শিবের ছিল স্টাইল, এত ওরিজিন্যাল যে, মন্ত্রপড়া যজমানেরা তাকে হব্যকব্য দেওয়াটা বেদস্তুর বলে জানত। অক্সফোর্ডের বি. এ.’র মুখে এ-সব কথা শুনতে আমার ভালাে লাগে। কেননা, আমার বিশ্বাস, আমার লেখায় স্টাইল আছে – সেইজন্যেই আমার সকল বইয়েরই এক সংস্করণেই কৈবল্যপ্রাপ্তি, তারা “ন পুনরাবর্তন্তে”।
আমার শ্যালক নবকৃষ্ণ অমিতর এ-সব কথা একেবারে সইতে পারত না — বলত, “রেখে দাও তােমার অক্সফোর্ডের পাস।” সে ছিল ইংরেজি সাহিত্যে রােমহর্ষক এম. এ.; তাকে পড়তে হয়েছে বিস্তর, বুঝতে হয়েছে অল্প। সেদিন সে আমাকে বললে, “অমিত কেবলই ছােটো লেখককে বড়াে করে বড়াে লেখককে খাটো করবার জন্যেই। অবজ্ঞার ঢাক পিটোবার কাজে তার শখ, তােমাকে সে করেছে তার ঢাকের কাঠি।” দুঃখের বিষয়, এই আলােচনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন আমার স্ত্রী, স্বয়ং ওর সহােদরা। কিন্তু পরম সন্তোষের বিষয় এই যে, আমার শ্যালকের কথা তার একটুও ভালাে লাগে নি। দেখলুম, অমিতর সঙ্গেই তার রুচির মিল, অথচ পড়াশুনাে বেশি করেন নি। স্ত্রীলােকের আশ্চর্য স্বাভাবিক বুদ্ধি!
Title | শেষেরকবিতা |
Author | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর |
Publisher | দি স্কাই পাবলিশার্স |
ISBN | 9848260374 |
Edition | 1st Published, 2015 |
Number of Pages | 64 |
Country | বাংলাদেশ |
Language | বাংলা |
Have a question regarding the product? Ask Us
Please log in to write question Log in
Help: 16297 or 09609616297 24 Hours a Day, 7 Days a Week
Pay cash on delivery Pay cash at your doorstep
Service All over Bangladesh
Happy Return All over Bangladesh
demo content